ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৪ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ফলের রস আপনার ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়াতে পারে; জেনে নিন কারণ

প্রকাশিত: ১০:৪১, ২ জুন ২০২৫

ফলের রস আপনার ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়াতে পারে; জেনে নিন কারণ

সকালের নাস্তায় ফলের রস একটি জনপ্রিয় পছন্দ, যা প্রায়শই দিনের শুরুতে সতেজ এবং পুষ্টিকর বলে বিবেচিত হয়। ফলের রস প্রয়োজনীয় পুষ্টিতে ভরপুর এবং দ্রুত শক্তি বৃদ্ধি করতে পারে। তবে, এগুলি আপনার ভাবনার মতোই স্বাস্থ্যকর হতে পারে। জনপ্রিয় বিশ্বাসের বিপরীতে, ফলের রস পান করা কিছু স্বাস্থ্য ঝুঁকির সাথে জড়িত।

সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে এই 'স্বাস্থ্যকর পানীয়' টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। নিঃসন্দেহে রস পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ, তবে এতে ফাইবারের অভাব রয়েছে। উপরন্তু, এতে প্রাকৃতিক শর্করার পরিমাণ বেশি।

ব্রিগহাম ইয়ং ইউনিভার্সিটি (BYU) এবং জার্মান প্রতিষ্ঠানের গবেষকরা বিভিন্ন দেশের ৫,০০,০০০ এরও বেশি ব্যক্তির তথ্য পরীক্ষা করেছেন।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে প্রতিদিন অতিরিক্ত ২৩০ মিলি ফলের রস খাওয়ার ফলে টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি ৫% বৃদ্ধি পায়। এতে আরও বলা হয়েছে যে সোডার মতো চিনি-মিষ্টিযুক্ত পানীয় প্রতি ৩৫০ মিলি পরিবেশনে ২৫% ঝুঁকি বাড়ায়।

অন্যদিকে, আস্ত ফল এবং দুগ্ধজাত পণ্যের মাধ্যমে খাওয়া প্রাকৃতিক শর্করা ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমানোর সাথে সম্পর্কিত ছিল। ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ানোর জন্য তরল চিনিই প্রধান কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।

ফলের রসে চিনির পরিমাণ বেশি থাকে। এমনকি ১০০% ফলের রসেও প্রাকৃতিক চিনি থাকে, যা রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। অতিরিক্ত চিনি খাওয়া কেবল ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায় না বরং ওজন বৃদ্ধিতেও অবদান রাখে যা বিভিন্ন দীর্ঘস্থায়ী রোগের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। উপরন্তু, প্যাকেটজাত ফলের রসে অতিরিক্ত চিনি এবং প্রিজারভেটিভ থাকে, যা তাদের স্বাস্থ্যগত উপকারিতা আরও হ্রাস করে।

এগুলিতে ফাইবারের অভাব রয়েছে
ফাইবার ফল এবং শাকসবজির একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এটি হজমে সাহায্য করে, আপনাকে দীর্ঘক্ষণ পেট ভরে রাখে এবং সুস্থ অন্ত্রকে উৎসাহিত করে। জুস করার সময়, বেশিরভাগ ফাইবার নষ্ট হয়ে যায়, যার অর্থ ফলের তৃপ্তিদায়ক প্রভাব হ্রাস পায়। এর ফলে দিনের শেষের দিকে অতিরিক্ত খাবার খেতে হতে পারে।

রক্তে শর্করার দ্রুত বৃদ্ধি
তরল চিনি দ্রুত রক্তপ্রবাহে প্রবেশ করে, রক্তে শর্করার স্পাইক বৃদ্ধি করে। এটি ইনসুলিন সংবেদনশীলতা ব্যাহত করে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। অন্যদিকে, আস্ত ফলের মধ্যে ফাইবার, ভিটামিন, খনিজ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান থাকে যা রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখে এবং হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়া রোধ করে।

ফলের রস সুস্বাদু এবং সুবিধাজনক হতে পারে, যা কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা প্রদান করে। তবে, পরিমিত পরিমাণে এগুলি খাওয়া এবং এতে চিনির পরিমাণ এবং আঁশের অভাব সম্পর্কে সচেতন থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সর্বাধিক সুবিধার জন্য আস্ত খাবার বেছে নিন এবং এগুলিকে আপনার সুষম খাদ্যতালিকার অংশ করুন।

সজিব

×