মাথা ও ঘাড়ের ক্যান্সার বলতে পাচনতন্ত্রের উপরের অংশে বিকশিত ক্যান্সারের একটি গ্রুপকে বোঝায়, যার মধ্যে মুখ, গলা এবং ভয়েস বক্স অন্তর্ভুক্ত। সিগারেট ধূমপান একটি পরিচিত ঝুঁকির কারণ হলেও, ধূমপান বা ধোঁয়াবিহীন যেকোনো আকারের তামাক ব্যবহার মাথা ও ঘাড়ের ক্যান্সারের অন্যতম প্রধান কারণ।
এইচটি লাইফস্টাইলের সাথে একটি সাক্ষাৎকারে, নয়ডার ফোর্টিস হাসপাতালের সার্জিক্যাল অনকোলজির সিনিয়র কনসালট্যান্ট - ডাঃ বিশাল বনসাল বলেন, "তামাক ব্যবহারকারীদের মধ্যে মাথা ও ঘাড়ের ক্যান্সারের ঝুঁকি অ-তামাক ব্যবহারকারীদের তুলনায় প্রায় ১০ গুণ বেশি এবং নতুন মাথা ও ঘাড়ের ক্যান্সার নির্ণয়ের প্রায় ৮০% তামাক ব্যবহারের সাথে সম্পর্কিত।"
তামাক ব্যবহারের ফলে মাথা ও ঘাড়ের ক্যান্সার কীভাবে হয়?
স্বাস্থ্যের উপর তামাক সেবনের প্রভাব ব্যাখ্যা করে ডঃ বিশাল বনসাল আরও বলেন, “তামাকজাত দ্রব্যে ৮০টিরও বেশি কার্সিনোজেন শনাক্ত করা হয়েছে। এই কার্সিনোজেনগুলিকে অন্যথায় মিউটেজেন বলা হয়। এই এজেন্টগুলি ডিএনএ অ্যাডাক্ট গঠনের মাধ্যমে ডিএনএ গঠনে ব্যাঘাত ঘটায়, যার ফলে শরীরে একাধিক মিউটেশন হয় এবং এর ফলে ক্যান্সার হয়। উচ্চ প্রাদুর্ভাব এবং পুরুষ প্রাধান্যের সাথে, মাথা এবং ঘাড়ের ক্যান্সারের আর্থ-সামাজিক প্রভাব গভীর।”
মাথা এবং ঘাড়ের ক্যান্সারের প্রাথমিক সতর্কতা লক্ষণগুলি জেনে রাখুন:
“দীর্ঘস্থায়ী তামাক ব্যবহারকারীদের মুখ এবং গলায় প্রচুর পরিবর্তন দেখা যায়। তারা প্রায়শই সময়ের সাথে সাথে বিভিন্ন লক্ষণ অনুভব করে। সামান্য রঙিন রঙ থেকে শুরু করে ব্যাপক দাগ এবং ফাইব্রোসিসের মতো সূক্ষ্ম পরিবর্তনও তামাক ব্যবহারকারীদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। গলায় ব্যথা, কণ্ঠস্বরের পরিবর্তন এবং দীর্ঘস্থায়ী কাশি সাধারণত দীর্ঘস্থায়ী ধূমপায়ীদের দ্বারা অনুভব করা হয়,” ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ উল্লেখ করেন।
এখানে প্রাথমিক সতর্কতা লক্ষণগুলি সম্পর্কে সচেতন থাকা উচিত:
- মুখের অসাধ্য আলসার
- কঠিন খাবার গিলতে অসুবিধা
- সম্প্রতি দাঁত ব্যথা এবং দাঁত আলগা হয়ে যাওয়া
- ঘাড়, চোয়াল বা মুখের ক্রমবর্ধমান বৃদ্ধি/ফোলাভাব
- মুখ খুলতে অসুবিধা (ট্রিসমাস)
- ঔষধ দ্বারা উপশম না হওয়া গলা ব্যথা
- পুনরাবৃত্ত কাশি এবং সাম্প্রতিক কণ্ঠস্বরের পরিবর্তন
- গলার পিছনে ব্যথা যা কানে ছড়িয়ে পড়ে
“আপনি যদি তামাক ব্যবহারকারী হন এবং কোনও নতুন লক্ষণ অনুভব করেন, তাহলে তাৎক্ষণিক চিকিৎসা সহায়তা নেওয়া উচিত। মুখের গহ্বরের সহজ ক্লিনিকাল পরীক্ষা এবং ওপিডি ভিত্তিতে টেলিস্কোপ (হপকিন্স) দিয়ে গলা পরীক্ষা করলে বেশিরভাগ মাথা এবং ঘাড়ের ক্যান্সার সনাক্ত করা যেতে পারে। মাথা এবং ঘাড়ের ক্যান্সার, যদি প্রাথমিকভাবে সনাক্ত করা হয়, তবে এর নিরাময়ের হার খুব বেশি,” ব্যাখ্যা করেছেন ডাঃ বিশাল বনশল।
সজিব
