ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৪ জুন ২০২৫, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট, প্রয়োজন নজরদারি

মোঃ সুজা উদ্দিন, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, রংপুর

প্রকাশিত: ১০:১৫, ২ জুন ২০২৫

জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট, প্রয়োজন নজরদারি

ছবি: জনকণ্ঠ

আসন্ন ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে রংপুরে কোরবানির পশুর হাটগুলো ধীরে ধীরে জমে উঠছে। জেলার আটটি উপজেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে ৯০টিরও বেশি স্থায়ী ও অস্থায়ী পশুর হাট বসানো হয়েছে। যদিও পুরোদমে বেচাকেনা শুরু হতে আরও দু-তিন দিন সময় লাগবে, তবে ইতোমধ্যে গরু-ছাগল কেনাবেচা শুরু হয়েছে।

রংপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা ২ লাখ ২৪ হাজার ৭৫২টি। এর বিপরীতে প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৩ লাখ ৬৩ হাজার ৩১২টি পশু, যা চাহিদার তুলনায় প্রায় দেড় লাখ বেশি। এতে পশুর কোনো সংকট হবে না বলে আশা করা হচ্ছে।

উল্লেখযোগ্য পশুর হাট
রংপুর নগরীর সবচেয়ে বড় পশুর হাট লালবাগ হাটে রবি ও বুধবার পশু কেনাবেচা হয়। এছাড়া, সদর উপজেলায় গঞ্জিপুর হাট, পাগলাপীর বাজার, মিলেরপাড় বাজার এবং নসরতপুর রেল স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম সংলগ্ন হাট উল্লেখযোগ্য।

গঙ্গাচড়া উপজেলায় বেতগাড়ী হাট (শনিবার ও মঙ্গলবার) এবং পানবাজার পশুর হাটের জন্য পরিচিত।

মিঠাপুকুর উপজেলায় শঠিবাড়ী হাট, বৈরাতী হাট, রানীপুকুর হাট, বালারহাট, কোমরগঞ্জ হাট, জায়গীরহাট, শুকুরেরহাট, বালুয়া হাট, ছড়ান হাট ও চৌধুরীগোপালপুর হাট কোরবানির পশু কেনাবেচার জন্য প্রস্তুত।

পীরগঞ্জ উপজেলায় বড়দরগাহ গরুর হাট, হকের হাট, টেপামধুপুর হাট ও পদাগঞ্জ হাট ক্রেতা-বিক্রেতাদের আনাগোনায় মুখরিত। এছাড়াও, কাউনিয়া, বদরগঞ্জ, তারাগঞ্জ এবং পীরগাছা উপজেলায় অসংখ্য ছোট-বড় কোরবানির পশুর হাট রয়েছে।

হাসিল নিয়ে অভিযোগ
সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হাসিল (খাজনা) অনুযায়ী, গরু ও মহিষের জন্য ৫০০ টাকা এবং ছাগল ও ভেড়ার জন্য ১৫০ টাকা শুধুমাত্র ক্রেতা পরিশোধ করবেন। তবে কিছু হাটে অতিরিক্ত হাসিল আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। অনেক ক্ষেত্রে নির্ধারিত হাসিলের চেয়ে বেশি আদায় করা হচ্ছে এবং বিক্রেতাদের কাছ থেকেও হাসিল নেওয়া হচ্ছে, যা নিয়মবহির্ভূত।

সরাসরি খামার থেকে কেনাবেচা বাড়ছে
অনেক ক্রেতা-বিক্রেতা এখন হাটে না গিয়ে সরাসরি খামার থেকে পশু কেনাবেচা করছেন। এতে দালালদের দৌরাত্ম্য কমে এবং ন্যায্যমূল্যে পশু কেনা সম্ভব হয় বলে তারা মনে করেন।

পাইকারি ক্রেতাদের আনাগোনা কম, খামারিদের উদ্বেগ
এখনও অনেক হাটে পাইকারি ক্রেতাদের আনাগোনা তুলনামূলকভাবে কম দেখা যাচ্ছে। এতে স্থানীয় খামারি ও ক্ষুদ্র বিক্রেতারা কিছুটা উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন। তাদের আশঙ্কা, পাইকারি ক্রেতাদের অনুপস্থিতি পশুর দামের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

সব মিলিয়ে, রংপুরের পশুর হাটগুলোতে বেচাকেনা পুরোদমে শুরু হলে এবং হাসিল আদায়ে স্বচ্ছতা নিশ্চিত হলে এবারের ঈদ নির্বিঘ্নে পালিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

মুমু

×