ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৫ জুন ২০২৫, ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

সব মহাসাগরের চেয়েও ৩ গুণ বিশাল মহাসাগরের সন্ধান!

প্রকাশিত: ০১:৪৩, ৪ জুন ২০২৫

সব মহাসাগরের চেয়েও ৩ গুণ বিশাল মহাসাগরের সন্ধান!

ছ‌বি: সংগৃহীত

বিশ্বজুড়ে পানির সংকট দিন দিন তীব্র হয়ে উঠছে। এমন সময় বিজ্ঞানীরা এমন এক চমকপ্রদ তথ্য প্রকাশ করেছেন, যা পৃথিবীর ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবনার দিগন্ত খুলে দিচ্ছে। তাঁদের দাবি, পৃথিবীর পায়ের তলার প্রায় ৭০০ কিলোমিটার গভীরে রয়েছে এক বিশাল জলরাশি— যার আয়তন পৃথিবীর সব সাগর-মহাসাগর মিলে যা হয়, তার চেয়েও তিন গুণ বড়!

এই বিশাল পানির ভাণ্ডার কোনো খোলা সাগর নয়। এটি লুকিয়ে আছে একটি বিশেষ ধরনের খনিজের মধ্যে। খনিজটির নাম ‘রিংউডাইট’। রিংউডাইট একটি স্পঞ্জের মতো পাথর, যার ভেতরে পানি আটকে থাকে। এর পারমাণবিক গঠন এমন যে এটি হাইড্রোজেন আকর্ষণ করতে পারে এবং প্রচুর পানি ধরে রাখতে সক্ষম।

নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক জানিয়েছেন, তারা যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন জায়গায় বসানো প্রায় ২০০০টি ভূকম্প মাপার যন্ত্র (সিসমোগ্রাফ) ব্যবহার করে ৫০০টিরও বেশি ভূমিকম্পের কম্পন বিশ্লেষণ করেছেন। তারা দেখেছেন, ভূমিকম্পের কম্পন যখন পৃথিবীর গভীরে পৌঁছায়, তখন কিছু জায়গায় তার গতি হঠাৎ কমে যায়। এই 'স্লথ' বা ধীরগতির কারণ অনুসন্ধান করতেই আবিষ্কৃত হয় এই রহস্যময় পানির অস্তিত্ব।

প্রশ্ন উঠেছে— এই পানি কি কোনো দিন পৃথিবীর পৃষ্ঠে উঠে আসতে পারে? বিজ্ঞানীরা বলছেন, যদি এমনটা ঘটে, তাহলে তা ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনবে। কারণ, এই পরিমাণ পানি যদি একসঙ্গে ভূপৃষ্ঠে চলে আসে, তাহলে পৃথিবীর অধিকাংশ অঞ্চল পানির নিচে তলিয়ে যাবে। শুধু হিমালয়ের মতো কিছু উচ্চ পার্বত্য এলাকা টিকে থাকতে পারে।

তবে এই পানির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো— এটি পৃথিবীর অভ্যন্তরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে। আগ্নেয়গিরির তীব্র তাপ থেকে ভূপৃষ্ঠকে সুরক্ষা দিতে এই পানি পর্দার মতো কাজ করে। অনেকেই বিশ্বাস করেন, এই বিশাল জলের ভাণ্ডার যেন সৃষ্টিকর্তারই এক রহস্যময় সুরক্ষা ব্যবস্থা।

এই আবিষ্কার ভবিষ্যতে পানির সংকট মোকাবিলায় কোনো আশার আলো নিয়ে আসতে পারে কি না, তা নিয়ে এখন বিজ্ঞানীদের মধ্যে চলছে জোরালো গবেষণা ও আলোচনা।


ভিডিও দেখুন: https://www.youtube.com/watch?v=g9PlUx-RHf8

এম.কে.

×