
ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রে এক দশক কাটিয়ে দেশে ফিরেই ভারতের কর্মসংস্কৃতিতে বড় ধরনের ‘সংস্কৃতি-ঝাঁকুনি’ (culture shock) খেয়েছেন এক প্রযুক্তিপেশাজীবী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে তিনি জানিয়েছেন, মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যেই তিনি ভারতের একটি নামকরা প্রোডাক্ট-ভিত্তিক টেক কোম্পানিতে চাকরি পেলেও, প্রথম সপ্তাহেই কাজের পরিবেশ তাকে হতবাক করেছে।
“আমি অবাক হয়ে গেছি প্রতিদিনের স্ট্যান্ডআপ মিটিংয়ে সহকর্মীদের কথা বলার ভঙ্গি ও ব্যবহারে,” লিখেছেন তিনি।
এক সহকর্মী একটি নতুন ফিচার প্রেজেন্ট করলে, সহকারী বা সিনিয়র কেউ প্রশংসা না করে সরাসরি খুঁটিনাটি সমালোচনা শুরু করেন — যেন স্কুলে দেরিতে হোমওয়ার্ক জমা দেয়ায় শিক্ষকের বকা খাচ্ছেন।
তিনি জানান, কোম্পানিতে কাজের নির্দিষ্ট সময়সূচি নেই। “আমার প্রথম দিনেই বলে দেওয়া হয়, এখানে ৯টা-৬টার নিয়ম নেই। কাজ শেষ করাটাই আসল। এরপর থেকেই দেখি, সহকর্মীরা প্রতিদিন গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করেন,” — এমন অভিজ্ঞতা জানান তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় কম সহানুভূতিশীল ও কাঠামোবদ্ধ পরিবেশ তাকে বেশ অস্থির করে তোলে। তার ভাষায়, “মনে হচ্ছে আমি আবার স্কুলে চলে এসেছি, আর ম্যানেজাররা যেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক!”
অনেকেই এই পোস্টের সঙ্গে একমত হয়েছেন। কেউ কেউ বলছেন, এই সমস্যা শুধু কর্মসংস্কৃতির নয়, বরং এটি পুরো সমাজেরই প্রতিফলন।
একজন মন্তব্য করেছেন, “আমি পাঁচ বছর পর ফিরে এসে দেখেছি, এখনো পেশাদারিত্বের ঘাটতি স্পষ্ট। ধৈর্য রাখতে হবে, আর অন্তত ৬-৮ মাস বিচার না করে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে।”
আরও এক ব্যবহারকারী জানান, “এটা কেবল কর্মসংস্কৃতি নয়, পুরো সমাজে সহানুভূতির অভাব। শ্রেণী, জাত-পাত, পদের ভিত্তিতে মানুষকে ছোট করে কথা বলাটা যেন স্বাভাবিক। আপনি যদি ফিরে এসে মানবিক-সহানুভূতিশীল মনোভাব নিয়ে থাকেন, তবে নিজেকে বদলাতে হবে, নাহলে আপনি মানিয়ে নিতে পারবেন না।”
অনেকেই জানান, তারা বিদেশে সুযোগ না পেয়ে ভারত ফিরে আসেন, কিন্তু খুব দ্রুতই কানাডা বা অন্য কোনো দেশে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
মুমু