ছবি: সংগৃহীত
আজকাল অনেক বাবা-মা অভিযোগ করেন, “আমার বাচ্চা একদমই স্থির হয়ে বসতে পারে না, একটু পরপর দৌড়াদৌড়ি করে, মানুষের বাসায় গিয়ে লজ্জায় ফেলে।” তবে চিকিৎসক ও শিশু মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, এই আচরণ শিশুর বিকাশের স্বাভাবিক একটি অংশ—এবং এই আচরণকে "খারাপ ব্যবহার" ভাবার আগে দরকার বোঝাপড়া ও বাস্তবসম্মত প্রত্যাশা।
📌 শিশুর মনোযোগ কতক্ষণ স্থির থাকে?
প্রতিটি বয়সে শিশুর মনোযোগের স্থায়িত্ব আলাদা। দুই বছরের শিশুর মনোযোগ ধরে রাখার ক্ষমতা হতে পারে মাত্র ৫-৬ মিনিট, আর চার-পাঁচ বছরের শিশুর ক্ষেত্রেও তা হয়তো ১০-১৫ মিনিট। এই সময়সীমা নির্ভর করে শিশুর মানসিক বিকাশ, আগ্রহ, ক্ষুধা, ক্লান্তি বা অন্য কোনও অসুবিধার ওপর।
🧠 কেন শিশুরা স্থির হয়ে বসে থাকতে পারে না?
-
শিশুরা চঞ্চল হয় কারণ তাদের ব্রেন ও শরীর এখনো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি।
-
তারা চারপাশের জগৎকে বুঝতে চায়, এক্সপ্লোর করতে চায়, তাই হাঁটা, দৌড়ানো বা বিভিন্ন জিনিস ছুঁয়ে দেখা তাদের শেখার পদ্ধতি।
-
তারা ইমোশন প্রকাশ বা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না বলে শারীরিকভাবে নিজেদের ব্যস্ত রাখে।
🚫 ভুল ধারণা: এটি খারাপ আচরণ নয়
অনেকে শিশুর এই স্বাভাবিক আচরণকে “মিসবিহেভ” মনে করেন। কিন্তু বাস্তবে এটি শিশুদের ডেভেলপমেন্টাল জার্নিরই একটি অংশ। পিতামাতাদের উচিত বাস্তবসম্মত প্রত্যাশা রাখা, শিশুকে রাগ বা বিরক্তি না দেখিয়ে পরিস্থিতি অনুযায়ী গাইড করা।
✅ কী করবেন?
-
আগেই প্রস্তুত করুন: আত্মীয় বাড়ি বা বাইরে কোথাও যাওয়ার আগে শিশুকে বলুন কোথায় যাচ্ছেন, কী হবে।
-
অ্যাক্টিভিটি দিন: শিশুর জন্য পছন্দের বই, খেলনা বা রঙতুলি নিয়ে যান যাতে সে নিজেকে ব্যস্ত রাখতে পারে।
-
সমঝোতা করুন: আপনি কিছু সময়ের জন্য গল্প করবেন আর সে তার মতো সময় কাটাবে—এটাই সবচেয়ে ভালো সমাধান।
শিশুর স্থির হয়ে না বসা মানেই সমস্যা নয়। বরং আপনার ধৈর্য ও সচেতনতা আপনার শিশুকে আরও ভালোভাবে গাইড করতে সাহায্য করবে।
আঁখি
