ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৭ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ধ্বংসের পথে ৫০০ বছরের প্রাচীন গুরিন্দা মসজিদ

মো. সাফায়েত রহমান আবির, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, পটুয়াখালী

প্রকাশিত: ১৩:০৯, ৬ জুন ২০২৫

ধ্বংসের পথে ৫০০ বছরের প্রাচীন গুরিন্দা মসজিদ

ছবি: জনকণ্ঠ

পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলার ৫০০ বছরের পুরোনো মোগল আমলের অন্যতম নিদর্শন এক গম্বুজবিশিষ্ট গুরিন্দা জামে মসজিদ। এখনো ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক হিসেবে কালের সাক্ষী হয়ে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছে। তবে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে শত শত বছরের পুরোনো স্মৃতিবাহী এ মসজিদটির হারিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। বৃষ্টি হলে ছাদ থেকে পানি পড়ে।

স্থাপত্যশিল্পের অপরূপ এ নিদর্শন গলাচিপা উপজেলার গুরিন্দা বাজারের পাশে খালের পাড়ে অবস্থিত। স্থানীয়দের তথ্য অনুযায়ী, বহু শতাব্দী আগে এক প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের আগে গুরিন্দা জামে মসজিদ নির্মাণ করা হয়। আবার কেউ কেউ জানান, এ অঞ্চলে মুসলমানদের আগমন আনুমানিক ১৪৬৫ খ্রিস্টাব্দে সুলতান মোবারক শাহের চন্দ্রদ্বীপ বিজয়ের আগে, তখন হয়তো এটি নির্মিত হয়। মসজিদটির মূল ভবনের আয়তন প্রায় ৩৬০ বর্গফুট। এর উচ্চতা প্রায় ১৬ ফুট। এটি একতলা মসজিদ। একটি মাত্র গম্বুজ থাকায় এটিকে এক গম্বুজ মসজিদও বলা হয়ে থাকে।

মসজিদটি সমতল থেকে প্রায় চার ফুট উঁচুতে নির্মিত। এতে মাত্র ১৮ থেকে ২০ জন মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ পড়তে পারেন। মসজিদটির ভেতর ও বাইরের দেয়ালের পলেস্তরা উঠে ইট বেরিয়ে গেছে। মসজিদটির পাশে রয়েছে ছোট একটি পাকা ভবনের বৈঠকখানা। এটি মসজিদটির চেয়ে আকারে ছোট। সেখানে ১০ থেকে ১২ জন লোক বসতে পারেন। মসজিদটির মতো এ বৈঠকখানাটিরও একই দুরবস্থা। সংশ্লিষ্ট বিভাগ উদ্যোগ নিলে এটিও হতে পারে একটি দর্শনীয় স্থান।

স্থানীয় বাবুল খান বলেন, “কে বা কারা নির্মাণ করেছে আমরা জানি না। ছোটবেলা থেকে এটা দেখে আসছি। দূর-দূরান্ত থেকে অনেক লোক আসে এখানে নামাজ পড়ে। এখানে অনেকে মানতও করে। এখানে মানত করলে তাদের নাকি মনের আশা পূরণ হয়। তবে কখনো কেউ এটা সংস্কার করেনি। দিন দিন এটি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এলাকাবাসীর সবার চাওয়া, এটি যেন ঠিক করে দেওয়া হয়।”

এ বিষয়ে রতনদী তালতলী ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মস্তফা খান বলেন, “মসজিদটি অনেক পুরোনো এবং ব্রিটিশ পিরিয়ডের করা মসজিদ। এখনই সংস্কার করা না হলে মসজিদটি একদিন বিলীন হয়ে যাবে।”

মুমু

×