ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ৩১ মে ২০২৫, ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

৩টি কারণে বাচ্চাকে কাঁদতে দেওয়া উচিত, জানলে বদলে যাবে আপনার ধারণা!

প্রকাশিত: ০১:২২, ৩০ মে ২০২৫

৩টি কারণে বাচ্চাকে কাঁদতে দেওয়া উচিত, জানলে বদলে যাবে আপনার ধারণা!

ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি একটি স্বাস্থ্যসচেতনতামূলক ভিডিওতে ডা. আনিকা ফেরদৌস বাচ্চাদের আবেগ নিয়ন্ত্রণ ও সঠিক মানসিক বিকাশ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, বাচ্চারা যখন খারাপ লাগে বা রেগে যায় তখন বাবা-মায়েরা তাদের কান্নাকে অবজ্ঞা করে বা দ্রুত থামানোর চেষ্টা করেন। এতে শিশুর মধ্যে এমন একটা ধারণা গড়ে উঠে যে ‘পৃথিবীটা সবসময় আমার ইচ্ছামতো চলবে’। ডা. আনিকার ভাষ্যে, এ ধরনের মনোভাব বাচ্চার ভবিষ্যতের মানসিক ও সামাজিক জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

প্রথমত, বাচ্চাকে কান্নাকাটি করতে না দিয়ে ডমিনেন্ট অভিভাবকরা যখন তাদের বকাঝকা করেন, তখন শিশুর মনে ভয় তৈরি হয় যা তার আত্মবিশ্বাস এবং সামাজিক দক্ষতাকে ধ্বংস করতে পারে। ফলে বড় হয়ে সে নিজেকে মানুষের জন্য বোঝা মনে করতে পারে এবং নিজের দাবি-দাওয়া জানাতে ভয় পায়।

দ্বিতীয়ত, যখন বাচ্চা রেগে বা কষ্ট পেয়ে কান্না করে আর বাবা-মা সাথে সাথে সবকিছু দিয়ে তাকে শান্ত করার চেষ্টা করেন, তখন শিশুর মনে হয় পৃথিবীতে সবকিছু চাইলেই পাওয়া যায়। বড় হয়ে যখন বাস্তবতা ভিন্ন হয়, তখন সে মানসিক চাপের মুখে পড়ে এবং কখনো কখনো অতিরিক্ত আবেগের কারণে মারাত্মক সমস্যা যেমন আত্মহত্যার পথেও যেতে পারে।

তৃতীয়ত, বাচ্চারা তাদের আবেগ নিজেই নিয়ন্ত্রণ করতে শিখতে পারে না, যার ফলে তারা রাগ, দুঃখ বা উদ্বেগ মোকাবেলা করতে পারে না এবং সহজে মানসিক অস্থিরতায় ভুগতে থাকে। অনেকে কমফর্ট ফুড বা অনাকাঙ্ক্ষিত উপায়ে এই চাপ কমানোর চেষ্টা করে, যা তাদের জীবনের গুণগতমানকে প্রভাবিত করে।

ডা. আনিকা জানান, বাচ্চাকে কাঁদতে দিতে মানে তাদের আবেগকে স্বীকার করা। বাচ্চাদের কান্না থামিয়ে দেওয়ার বদলে তাদের অনুভূতিকে বোঝা দরকার। ‘আমি বুঝতে পারছি তুমি দুঃখে আছো, রাগ পাচ্ছো,’ এ ধরনের কথাই বাচ্চাকে মানসিকভাবে সুস্থ করে তোলে। এর মাধ্যমে বাচ্চারা ভবিষ্যতে জীবনের ছোট-বড় হতাশাগুলো সহজে মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়।

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা শিশুকে ছোটবেলা থেকেই শেখাতে পারি যে সবসময় সবকিছু আমাদের ইচ্ছা মতো হয় না, কিন্তু এটাই বাস্তব। এতে তারা জীবনের বাস্তবতা মেনে নিয়ে মানসিকভাবেই সুসংগঠিত হয়।’

বাংলাদেশের পিতামাতাদের প্রতি ডা. আনিকার অনুরোধ, বাচ্চাদের আবেগকে দমন না করে বুঝে নিতে হবে এবং তাদের মানসিক বিকাশের জন্য যথাযথ মনোযোগ দিতে হবে।

 

সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=kVTqiDONa_Y

রাকিব

×