বিয়ে করলে বেড়ে যায় ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হবার ঝুঁকি!

একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় চমকপ্রদ তথ্য উঠে এসেছে—বিবাহিত ব্যক্তিদের ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অবিবাহিত বা তালাকপ্রাপ্তদের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি।

Alzheimer’s & Dementia নামক আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটি এবং ইউনিভার্সিটি অব মন্টপেলিয়ের-এর একদল গবেষক। তারা দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে ২৪ হাজারেরও বেশি অংশগ্রহণকারীর উপর গবেষণা চালান, যারা শুরুতে ডিমেনশিয়ামুক্ত ছিলেন। এই সময়ের মধ্যে তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের তথ্য নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হয়।

গবেষণায় দেখা যায়, বিবাহিত ব্যক্তিদের মধ্যে প্রায় ২২ শতাংশ ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হন। বিপরীতে, যারা কখনো বিয়ে করেননি বা জীবনের শেষ পর্যায়ে তালাকপ্রাপ্ত ছিলেন, তাদের মধ্যে এ হার ছিল মাত্র ১৩ শতাংশ। এমনকি বয়স, শারীরিক অসুস্থতা, জীবনযাপনের ধরন ও জেনেটিক ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়েও এই পার্থক্য অটুট ছিল।

গবেষকরা জানান, অবিবাহিতদের মধ্যে আলঝেইমারস ও লিউই বডি ডিমেনশিয়ার ঝুঁকিও তুলনামূলকভাবে কম। তবে বিয়ে ও ভাসকুলার ডিমেনশিয়ার মধ্যে কোনও উল্লেখযোগ্য সম্পর্ক পাওয়া যায়নি। আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ হলো—যাদের মৃদু স্মৃতিভ্রংশ ছিল, তাদের মধ্যে অবিবাহিতদের পূর্ণাঙ্গ ডিমেনশিয়ায় রূপান্তরিত হওয়ার আশঙ্কাও কম দেখা গেছে।

এই গবেষণা দীর্ঘদিনের প্রচলিত একটি ধারণাকে চ্যালেঞ্জ জানায়—যে বিয়ে মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য এবং মানসিক সুস্থতা রক্ষা করে। গবেষকদের মতে, একমাত্র বিয়ে নয়, বরং কারো সামাজিক সংযোগ ও সম্পর্কের গুণগত মানই মস্তিষ্কের সুস্থতায় বেশি ভূমিকা রাখে।

এই প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য একটি গবেষণা প্রকাশিত হয়েছিল ২০২২ সালে Frontiers in Aging Neuroscience জার্নালে। সেখানে দেখা গেছে, যাদের শক্তিশালী সামাজিক নেটওয়ার্ক রয়েছে— বিবাহিত হোন বা না হোন— তাদের স্মৃতিশক্তি বেশি কার্যকর থাকে এবং ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে।

সুতরাং, গবেষকরা মনে করেন, বিবাহিতদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা হলো—সামাজিকভাবে সক্রিয় থাকা, আবেগগতভাবে সংযুক্ত থাকা এবং সম্পর্কের গুণমান বজায় রাখা মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিয়ের চেয়ে অনেক বেশি কার্যকর হতে পারে।

সূত্র: https://alz-journals.onlinelibrary.wiley.com/.../alz.70072