
ছবিঃ সংগৃহীত
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মানসুর বলেছেন, দেশের ছয়টি আর্থিকভাবে দুর্বল ব্যাংক একীভূত করার প্রক্রিয়ার আগে সরকার সেগুলো অধিগ্রহণ করবে। এতে সাধারণ আমানতকারীদের আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই, কারণ তারা একটি শক্তিশালী ব্যাংকের অংশ হবেন।
এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “অর্থ নিরাপদ থাকবে, তাই আমানতকারীদের টাকা তোলার প্রয়োজন নেই।” তিনি জানান, ব্যাংক একীভূতের আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংক একটি ব্যাংক রেজল্যুশন ফান্ড গঠনের জন্য তহবিল সংগ্রহ করবে।
ব্যবসায়ীদের জন্য কোনও প্রতিবন্ধকতা নয়
গভর্নর আরও বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাংক কোনো ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করছে না। এখন পর্যন্ত কেবল ব্যক্তিগত কিছু অ্যাকাউন্টই জব্দ করা হয়েছে। ব্যবসায়িক লেনদেনে কোনও বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে না।”
কোন ব্যাংকগুলো একীভূত হবে?
গভর্নরের ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী জুলাইয়ের মধ্যে ছয়টি ব্যাংক একীভূত করা হবে। এই ব্যাংকগুলো হচ্ছে:
- ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক
- সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক
- ইউনিয়ন ব্যাংক
- গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক
- এক্সিম ব্যাংক
- ন্যাশনাল ব্যাংক
উল্লেখ্য, এই ব্যাংকগুলোর মধ্যে চারটি এস’আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে ছিল, এক্সিম ব্যাংক পরিচালনা করতেন ব্যবসায়ী নাজরুল ইসলাম মজুমদার এবং ন্যাশনাল ব্যাংক ছিল সিকদার গ্রুপের অধীনে।
মানি লন্ডারিং ও ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ
গভর্নর বলেন, “গত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ১৮ থেকে ২০ বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার হয়েছে। এই টাকা ফেরত আনতে তিন থেকে পাঁচ বছর সময় লাগবে।” তিনি জানান, এ কাজে সরকারের একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় টাস্কফোর্স গঠন করা হচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় আইন সংশোধন করে টাস্কফোর্সকে আরও ক্ষমতাশালী করা হবে।
সংকট থেকে স্থিতিশীলতার পথে
বাংলাদেশ ব্যাংক এই উদ্যোগের মাধ্যমে আর্থিক খাতকে স্থিতিশীল করতে চায় এবং জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে চায়। গভর্নর বলেন, “আমরা সংকটকে একটি সুযোগ হিসেবে দেখছি – যেন দীর্ঘমেয়াদে ব্যাংকিং খাত আরও স্বচ্ছ, শক্তিশালী ও টেকসই হয়।”
মারিয়া