
ছবি: সংগৃহীত।
প্রচণ্ড গরমে জীবন যেন ওষ্ঠাগত। বিদ্যুতের লোডশেডিং, বাড়তে থাকা বিদ্যুৎ বিল এবং অনেকেরই এসি কেনার সামর্থ্য না থাকায় প্রশ্ন জাগে—এসি ছাড়া এই গরমে ঘর ঠাণ্ডা রাখা কি সম্ভব? উত্তর হলো—হ্যাঁ, কিছু সহজ কৌশল জানলে গরমের তাপ উপেক্ষা করে ঘরকে অনেকটাই আরামদায়ক রাখা সম্ভব।
১. পর্দা ও জানালার ব্যবহার:
দুপুরবেলা যখন সূর্যের তাপ সবচেয়ে বেশি, তখন জানালা বন্ধ করে ভারী ও হালকা রঙের পর্দা ব্যবহার করুন। সূর্যালোক সরাসরি ঘরে প্রবেশ করতে না দিলে ঘরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ৫-৭ ডিগ্রি কম থাকে।
২. ঘরের আলো নিয়ন্ত্রণ করুন:
বেশি উষ্ণতা ছড়ায় এমন আলো (যেমন ইনসেনডেসেন্ট বা হ্যালোজেন বাল্ব) ব্যবহার না করে এলইডি বা সিএফএল বাল্ব ব্যবহার করুন। এগুলো তাপ কম ছড়ায় এবং বিদ্যুৎও কম খরচ হয়।
৩. বালিশ-কাপড়ের পরিবর্তন আনুন:
গ্রীষ্মে তুলতুলে এবং হালকা কাপড়ের ব্যবহার যেমন সুতির চাদর বা পর্দা, ঘরের ভেতরে একটা শীতল আবহ তৈরি করে। ভারী কাপড় গরম ধরে রাখে, তাই সেগুলি এড়িয়ে চলাই ভালো।
৪. ঘর শীতল রাখে এমন গাছ লাগান:
ঘরের আশপাশে তুলসী, মানি প্লান্ট, অ্যালোভেরা কিংবা সরাসরি সূর্যরশ্মি আটকে রাখতে পারে এমন বড় পাতা-ওয়ালা গাছ লাগাতে পারেন। এগুলো পরিবেশ ঠাণ্ডা রাখে এবং ঘরের বাতাস বিশুদ্ধ করে।
৫. ছাদে রং বদল ও পানি ছিটানো:
যদি সম্ভব হয়, ছাদে সাদা বা প্রতিফলক রঙের প্রলেপ দিন। এতে সূর্যের তাপ ছাদ শোষণ করে না। সন্ধ্যায় ছাদে পানি ছিটালে তা বাষ্পীভূত হয়ে ঘরের তাপমাত্রা কমিয়ে দেয়।
৬. ঘরোয়া ‘কুলার’ কৌশল:
একটি বড় পাত্রে বরফ রেখে তার সামনে ফ্যান চালিয়ে দিন। ফ্যানের বাতাস বরফের ওপর দিয়ে গিয়ে ঘরে ঠাণ্ডা বাতাস ছড়িয়ে দেয়। সহজ এবং কার্যকর এই পদ্ধতিটি অনেকেই ‘ঘরোয়া এসি’ বলে থাকেন।
৭. দরজা-জানালার সময়মতো খোলা-বন্ধ:
ভোর কিংবা রাতের দিকে যখন বাইরের বাতাস ঠাণ্ডা থাকে, তখন জানালা খুলে দিন। কিন্তু সকাল ৯টার পর থেকে বিকেল পর্যন্ত জানালা বন্ধ রাখুন। এতে বাইরের গরম বাতাস ঘরে ঢুকতে পারবে না।
গ্রীষ্মে আরাম পেতে এসিই একমাত্র ভরসা নয়। বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে কিছু ঘরোয়া কৌশল প্রয়োগ করলেই গরমের হাত থেকে কিছুটা মুক্তি পাওয়া সম্ভব। পরিবেশবান্ধব এসব উপায় শুধু আরামই দেয় না, বিদ্যুৎ সাশ্রয়েও বড় ভূমিকা রাখে।
নুসরাত