ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৯ মে ২০২৫, ১৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

সম্পত্তি বেদখল হলে বা দখল করার চেষ্টা করলে জরুরি ভিত্তিতে যে আইনি পদক্ষেপ নেবেন

প্রকাশিত: ০১:৩৬, ২৮ মে ২০২৫; আপডেট: ০১:৩৭, ২৮ মে ২০২৫

সম্পত্তি বেদখল হলে বা দখল করার চেষ্টা করলে জরুরি ভিত্তিতে যে আইনি পদক্ষেপ নেবেন

ছবি: সংগৃহীত

কেউ যদি ব্যক্তির নিজ মালিকানাধীন জমি বেআইনিভাবে কিংবা জোরপূর্বক দখল করে নেয় বা বেদখলের চেষ্টা করে, তাহলে দ্রুত প্রতিকারের পথ কী?

আগে এ ধরনের ঘটনার প্রতিকার মূলত দেওয়ানী আদালতের মাধ্যমে নিতে হতো, যা ছিল দীর্ঘসূত্রতাপূর্ণ। কিন্তু বর্তমানে ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২৩ কার্যকর হওয়ায় পরিস্থিতি বদলে গেছে। 

এই আইনের ৭ নম্বর ধারা অনুযায়ী, কেউ যদি আপনার বৈধ মালিকানাধীন সম্পত্তি থেকে জোরপূর্বক উচ্ছেদের চেষ্টা করে বা বেদখল করে, তাহলে আপনি সরাসরি সংশ্লিষ্ট নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে লিখিত আবেদন করতে পারবেন।

আবেদনের পদ্ধতি:

* নির্ধারিত ফরমে (ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার বিধিমালা ২০২৪ অনুযায়ী) আবেদন করতে হবে।

* আবেদনপত্রে জমির মালিকানা সম্পর্কিত দলিল, খতিয়ান, নামজারি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযুক্ত করতে হবে।

* আবেদন নিজে অথবা আইনজীবীর মাধ্যমে দাখিল করা যাবে।

প্রক্রিয়ার পরবর্তী ধাপ:

* এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট অপর পক্ষকে কারণ দর্শানোর জন্য নোটিশ প্রদান করবেন।

* প্রয়োজনে ম্যাজিস্ট্রেট সংশ্লিষ্ট সার্ভেয়ার দিয়ে তদন্ত করাতে পারবেন।

* সন্তুষ্ট না হলে তিনি নিজেও সরেজমিন তদন্ত করতে পারেন।

* সব তথ্য যাচাই-বাছাই শেষে আদেশ প্রদান করবেন।

ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা:

* প্রয়োজন মনে করলে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে দখলদারদের উচ্ছেদ করে প্রকৃত মালিককে জমির দখল ফিরিয়ে দিতে পারেন।

* আদেশ অমান্য হলে ওয়ারেন্ট ইস্যু করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।

* প্রয়োজনে বন্ড নেওয়া হতে পারে যাতে ভবিষ্যতে এমন কাজ না ঘটে।

সময়সীমা:

আইনে বলা হয়েছে, এই ধরনের অভিযোগ নিষ্পত্তির সময়সীমা ৪৫ দিনের মধ্যে। যদি সম্পত্তি উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত হয় এবং এখনও বণ্টন না হয়, সেক্ষেত্রে দেওয়ানী আদালতে মামলা চলমান থাকলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ব্যবস্থা নিতে পারবেন না। তবে আপনি দেওয়ানী আদালতেও আবেদন করে বিচারকের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেন, যাতে তিনি মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে প্রতিকার দেন।

এই আইন বাস্তবায়নের ফলে সাধারণ মানুষ এখন দ্রুত আইনি সহায়তা নিতে পারছেন এবং দখলবাজদের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ সম্ভব হচ্ছে। এটি নিঃসন্দেহে ভূমি সুরক্ষার ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ।

জরুরি পরামর্শ:

আপনার জমি সংক্রান্ত দলিলাদি প্রস্তুত রাখুন এবং কোনো সমস্যা দেখা দিলে সংশ্লিষ্ট নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অথবা আইনজীবীর সঙ্গে তাৎক্ষণিক যোগাযোগ করুন।

আসিফ

×