
ছবি : সংগৃহীত
ফসফরাস, পটাশিয়াম, ভিটামিন এ ও ডি, বিভিন্ন বি ভিটামিন এবং আরও অনেক পুষ্টিকর উপাদানের একটি ভালো উৎস ডিম। ডিমের কুসুমে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা মস্তিষ্কের বিকাশ ও স্নায়ুতন্ত্রের জন্য প্রয়োজন। তবে প্রতিদিন ডিম খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী হতে পারে, তবে এটি ব্যক্তির বয়স, শারীরিক অবস্থা, ও খাদ্যাভ্যাসের ওপর নির্ভর করে।
৩৫ বছর বয়স পর্যন্ত একজন সুস্থ মানুষ প্রতিদিন একটা ডিম খেতে পারবেন। এ ছাড়াও ২-৩ টি ডিমের সাদা অংশ খেতে পারবেন প্রতিদিন। ৪০ বয়সের বেশি যারা তারা সতর্কতার জন্য চাইলে সপ্তাহে ৪ দিন ডিমের কুসুমসহ এবং বাকি ৩ দিন ডিমের কুসুম ছাড়া সাদা অংশ খেতে পারবেন।
নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরা হলো:
ডিম খাওয়ার উপকারিতা:
উচ্চ মানের প্রোটিন: ডিমে সব ধরনের প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে।
ভিটামিন ও খনিজ: ডিমে ভিটামিন B12, ভিটামিন D, আয়রন, সেলেনিয়াম ইত্যাদি থাকে।
চোখের জন্য উপকারী: লুটিন ও জিয়্যাক্সানথিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা চোখের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
স্মৃতিশক্তি বাড়ায়:ডিমের কুসুমে থাকা কোলিন মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক: ডিম খেলে পেট ভরা থাকে অনেকক্ষণ, ফলে অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমে।
মস্তিষ্কের বিকাশ: গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী নারীদের জন্য ডিমের কোলিন শিশুর মস্তিষ্ক গঠনে সহায়ক।
পেশি গঠনে সাহায্য করে: যারা শরীরচর্চা করেন বা বাচ্চা ও কিশোর বয়সে আছে, তাদের জন্য ডিম আদর্শ প্রোটিন উৎস।
হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষা: ভিটামিন D ও ক্যালসিয়াম হাড়ের গঠনে সহায়তা করে।
ডিমের পুষ্টিগুণ (১টি বড় সেদ্ধ ডিমে):
ক্যালরি: প্রায় ৭০
প্রোটিন: ৬ গ্রাম
ফ্যাট: ৫ গ্রাম (এর মধ্যে স্যাচুরেটেড ফ্যাট প্রায় ১.৫ গ্রাম)
কোলেস্টেরল: ~১৮৬ মি.গ্রা.
ভিটামিন A, B2 (রিবোফ্লাভিন), B12, D, E
মিনারেল: আয়রন, ফসফরাস, সেলেনিয়াম
কোলিন: ~১৪৭ মি.গ্রা. (মস্তিষ্কের জন্য গুরুত্বপূর্ণ)
ডিম খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্কতা:
ডিম কাঁচা খাওয়া এড়িয়ে চলুন: এতে স্যালমোনেলা ব্যাকটেরিয়া থাকার ঝুঁকি থাকে।
অতিরিক্ত কুসুম খাওয়া: কুসুমে কোলেস্টেরল ও ফ্যাট বেশি থাকে, তাই পরিমাণ বুঝে খেতে হবে।
অ্যালার্জি: কিছু শিশু বা ব্যক্তি ডিমে অ্যালার্জিক হতে পারেন, তাদের ক্ষেত্রে এড়িয়ে চলা জরুরি।
কোলেস্টেরল: একটি ডিমে প্রায় ২০০ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল থাকে। তবে সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, খাবার থেকে আসা কোলেস্টেরল সরাসরি রক্তের খারাপ কোলেস্টেরল বাড়ায় না, বিশেষ করে স্বাস্থ্যবানদের ক্ষেত্রে।
হার্ট রোগের ঝুঁকি: যাদের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ বা হৃদরোগ আছে, তাদের ক্ষেত্রে প্রতিদিন ডিম খাওয়ার বিষয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া ভালো।
তাহলে ডিম কতটুকু খাওয়া নিরাপদ?
সাধারণ সুস্থ ব্যক্তি: দিনে ১টি ডিম খাওয়া নিরাপদ ও উপকারী।
শরীরচর্চাকারী বা শিশু-কিশোর: ১–২টি ডিম খেতে পারেন।
হৃদরোগ বা কোলেস্টেরলের রোগী: মাঝে মাঝে কুসুম বাদ দিয়ে শুধু সাদা অংশ খাওয়া যেতে পারে।
প্রতিদিন একটি ডিম খাওয়া অধিকাংশ মানুষের জন্য নিরাপদ এবং উপকারী। তবে যাদের বিশেষ স্বাস্থ্য সমস্যা আছে, তাদের ক্ষেত্রে পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ জরুরি।
তবে সাধারণ ফিটনেস বা হালকা ব্যায়ামকারীদের জন্য দিনে ১–২টি ডিম যথেষ্ট। কিন্তু একজন ওজন তোলা বা মাংসপেশি বাড়ানোর জন্য ব্যায়ামকারী ব্যক্তি দিনে ৩–৬টি ডিম খেতে পারেন (ব্যক্তির ওজন ও ডায়েট অনুযায়ী) ।
সা/ই