
ছবি: সংগৃহীত
ঢেঁড়সের পানি নিয়ে এখন অনেকের আগ্রহ দেখা যাচ্ছে, আর এর সঙ্গে যদি মধু যোগ করা হয়, তাহলে এটি আরও উপকারী হয়ে ওঠে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। অনেকে দিন শুরু করেন এই পানীয় দিয়ে, যা শরীরের সামগ্রিক সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
পুষ্টিবিদ ও স্বাস্থ্য পরামর্শক ঈশা লাল জানিয়েছেন, ঢেঁড়স ভেজানো পানি ও মধু হলো একটি প্রাচীন ঘরোয়া উপায়, যা আয়ুর্বেদ ও আধুনিক বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে উপকারী বলে প্রমাণিত। নিচে প্রতিদিন সকালে এটি খাওয়ার ছয়টি উপকারিতার কথা তুলে ধরা হলো:
১. হজমশক্তি ও অন্ত্রের স্বাস্থ্য উন্নত করে
ঢেঁড়সে আছে জলীয় আঁশ (Soluble Fibre) ও একটি প্রাকৃতিক পিচ্ছিল উপাদান (Mucilage), যা পানিতে ভিজে জেলির মতো হয়। এটি অন্ত্রের প্রাচীরকে সতেজ রাখে, মলত্যাগ সহজ করে এবং অ্যাসিডিটি ও কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ বিশেষ সাহায্য করে।
২. রক্তে চিনির (গ্লুকোজ) মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে
ঢেঁড়সের আঁশ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়তে দেয় না। এতে থাকা মাইরিসেটিন ও ফ্ল্যাভোনয়েডস ইনসুলিনের কাজের দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করে।
৩. ত্বক ভালো রাখে ও বয়সের ছাপ কমায়
ঢেঁড়সে ভিটামিন ‘সি’, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও পলিফেনল থাকে, যা ত্বকের অকাল বার্ধক্য রোধে কাজ করে। এটি ভেতর থেকে ত্বককে হাইড্রেট (আর্দ্রতা বাড়ায়) করে, আর মধু ত্বকে আর্দ্রতা ধরে রাখে ও উজ্জ্বলতা বাড়ায়।
৪. ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে
সকালে খালি পেটে ঢেঁড়স ভেজানো পানি খেলে অনেকক্ষণ পেট ভরা থাকে, ফলে অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা কমে। সকালে মধু খাওয়া মেটাবলিজম বাড়াতেও সাহায্য করে।
৫. হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় ও কোলেস্টেরল হ্রাস করে
ঢেঁড়সের প্রাকৃতিক উপাদান মিউসিলেজ শরীর থেকে খারাপ কোলেস্টেরল (LDL) বের করে দেয়, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
৬. প্রদাহ কমায় ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
ঢেঁড়সে থাকা কোয়ারসেটিন ও মধুর প্রাকৃতিক অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান শরীরের ভেতরের প্রদাহ কমায় এবং সাধারণ সংক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে।
কিছু সাবধানতা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
বিশেষজ্ঞ ঈশা লালের মতে, এই পানীয় নিয়মিত খাওয়ার আগে কিছু বিষয় মাথায় রাখা দরকার:
- অতিরিক্ত মিউসিলেজ হজমে সমস্যা তৈরি করতে পারে, বিশেষ করে ফোলাভাব হতে পারে
- কেউ কেউ ঢেঁড়স বা মধুর প্রতি সংবেদনশীল হতে পারেন
- ডায়াবেটিসের ওষুধের সঙ্গে খেলে রক্তে চিনির মাত্রা খুব বেশি কমে যেতে পারে
- যাদের কফ বেশি হয়, তাদের জন্য এটি সমস্যা তৈরি করতে পারে
তিনি বলেন, ঢেঁড়স ঠান্ডা প্রকৃতির, তাই যাদের হজম দুর্বল বা কফ জাতীয় সমস্যা বেশি, তাদের জন্য দীর্ঘদিন খাওয়া উপযুক্ত নয়। ২-৩ সপ্তাহ খেয়ে কিছুদিন বিরতি নিলে শরীরের প্রতিক্রিয়া বুঝে নেওয়া সহজ হয়।
নোট: এই প্রতিবেদনটি বিশেষজ্ঞ মতামতের উপর ভিত্তি করে তৈরি। নতুন কোনো স্বাস্থ্য অভ্যাস শুরু করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
রাকিব