
ছবিঃ সংগৃহীত
আপনি কি চান সময় নষ্ট না করে কাজের কাজটি করে ফেলতে? তাহলে এই বইগুলো হতে পারে আপনার সেরা সহচর।
প্রতিটি মানুষের কাছেই দিনে সময় থাকে ২৪ ঘণ্টা। কেউ সেই সময় ঘুমিয়ে কাটান, কেউ আনন্দে ব্যস্ত থাকেন, আর কেউ সময়কে ভাগ করে নেন কাজ ও বিশ্রামের মধ্যে। যদি আপনি তৃতীয় শ্রেণির মানুষ হতে চান—যারা সময়কে সঠিকভাবে কাজে লাগান—তাহলে নিচের বইগুলো আপনার জন্য অপরিহার্য।
১. ‘অ্যাটোমিক হ্যাবিটস’ – জেমস ক্লিয়ার
এই বইটি বিশ্বব্যাপী লক্ষ লক্ষ মানুষকে সহায়তা করেছে সময় নষ্ট না করে কার্যকরভাবে কাজ করতে। লেখক জেমস ক্লিয়ার বলেন, সঠিক অভ্যাস গড়তে আপনার পরিবেশ ও মানসিকতা বদলানো জরুরি। ছোট ছোট পরিবর্তনই এনে দিতে পারে বড় সাফল্য।
২. ‘ডিপ ওয়ার্ক’ – ক্যাল নিউপোর্ট
এই বইয়ের মূল কথা হলো গভীর মনোযোগসহকারে কাজ করা। নিউপোর্ট বলেন, ‘ডিপ ওয়ার্ক’ এক ধরনের মানসিক অবস্থা, যেখানে প্রবেশ করে আমরা সবচেয়ে ভালো ফলাফল দিতে পারি। সময়সূচির একটি নির্দিষ্ট অংশ একান্ত মনোযোগের জন্য বরাদ্দ রাখা উচিত।
৩. ‘দ্য পাওয়ার অফ হ্যাবিট’ – চার্লস ডুহিগ
প্রোডাক্টিভ হওয়ার আরেকটি কৌশল হলো খারাপ অভ্যাস ত্যাগ করে ভালো অভ্যাস গড়া। এই বইয়ে লেখক ‘হ্যাবিট লুপ’-এর ধারণা দেন—যা হলো সংকেত, অভ্যাস এবং পুরস্কার। এটি ব্যবহার করে আপনি খারাপ অভ্যাস ভেঙে ফেলতে এবং নতুন অভ্যাস তৈরি করতে পারেন।
৪. ‘দ্য ৭ হ্যাবিটস অফ হাইলি ইফেকটিভ পিপল’ – স্টিফেন আর. কোভি
কোভি তার বইয়ে বলেন, সফল মানুষরা কিছু নির্দিষ্ট অভ্যাস গড়ে তোলেন। যেমন: সক্রিয় থাকা, পরিকল্পনার মাধ্যমে সময় পরিচালনা করা, টিমে কাজ করা ইত্যাদি। এই অভ্যাসগুলো অর্জন করলে আপনি সময়ের অপচয় না করে ফলপ্রসূ কাজ করতে পারবেন।
৫. ‘দ্য পাওয়ার অফ নাও’ – একহার্ট টোলে
আধুনিক জীবনে আমাদের সবচেয়ে বড় শত্রু হলো সময়ক্ষেপণ বা প্রোক্রাস্টিনেশন। টোলে বলেন, আমাদের অতীত বা ভবিষ্যৎ নয়, বর্তমানেই বাঁচতে হবে। এই বই মানুষকে শেখায় কীভাবে বর্তমান মুহূর্তকে কাজে লাগিয়ে লক্ষ্য অর্জন করা যায়।
৬. ‘ইকিগাই’ – হেক্টর গার্সিয়া ও ফ্রান্সেস মিরায়েস
জাপানি জীবনদর্শনের উপর লেখা এই বইটি বলে, আপনি কী ভালোবাসেন, কোন কাজে আপনি দক্ষ, কী কাজ সমাজের দরকার এবং কোন কাজ আপনাকে আয় দিতে পারে—এই চারটির সমন্বয়েই আপনার ইকিগাই। এই ইকিগাই খুঁজে নিলে কাজ কখনোই বিরক্তিকর মনে হবে না।
৭. ‘দ্য মাউন্টেন ইজ ইউ’ – ব্রিয়ানা উইস্ট
অনেক সময় অতীতের আঘাত বা ব্যর্থতার ভয়ে আমরা নিজেকেই আটকে রাখি। ব্রিয়ানা উইস্ট বলেন, সাফল্যের পথে সবচেয়ে বড় বাধা আমরা নিজেরাই। এই বইটি শেখায় কীভাবে আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে এনে নিজেকে মুক্ত করে সফলতার পথে এগিয়ে যাওয়া যায়।
৮. ‘ড্রাইভ’ – ড্যানিয়েল পিংক
এই বইটি বলে যে, মানুষকে কাজ করতে উৎসাহিত করে মূলত তিনটি বিষয়—স্বাধীনতা, দক্ষতা অর্জনের সুযোগ এবং উদ্দেশ্যের বোধ। এসব উপাদান কাজের প্রতি ভালোবাসা তৈরি করে এবং একজন কর্মীকে আরও কার্যকর করে তোলে।
শেষ কথা
এই আটটি বই শুধু পড়ার জন্য নয়, জীবনে প্রয়োগ করার জন্য। প্রতিটি বই একেকটি গাইডলাইন—যা আপনাকে সময়ের সদ্ব্যবহার শিখিয়ে কাজে সাফল্য এনে দিতে পারে। এখনই সময় আপনার অভ্যাসগুলো নতুন করে সাজানোর!
ইমরান