
ছবি: সংগৃহীত
শরীরের মেটাবলিজম বা বিপাকক্রিয়া স্বাভাবিকভাবে বাড়ানোর কিছু সহজ ও আনন্দদায়ক উপায় রয়েছে। প্রোটিন সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ, উচ্চ-তীব্রতা ব্যায়াম, ওজন তোলা, সঠিক পানীয় পান, সময় মতো ঘুমানো, ঝাল খাবার খাওয়া এবং অনাহারে না থাকা-এই সব অভ্যাস আপনার দেহের ক্যালোরি পোড়ানোর হার উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়ে দিতে পারে।
মেটাবলিজম হচ্ছে এমন একটি প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে দেহ খাবারকে শক্তিতে পরিণত করে। এই প্রক্রিয়া ঠিকমতো কাজ না করলে অবসাদ, ওজন বৃদ্ধি, হতাশা, এমনকি ডায়াবেটিসের মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
নিচে মেটাবলিজম বাড়ানোর ১১টি কার্যকর পদ্ধতি তুলে ধরা হলো:
প্রোটিনযুক্ত খাবার বেশি খান: ডিম, মাংস, মাছ, বাদাম-এসব প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার মেটাবলিজম বাড়ায়। প্রোটিন হজম করতে দেহ বেশি শক্তি ব্যবহার করে, যা প্রতিদিন গড়ে অতিরিক্ত ৩০০ ক্যালোরি পোড়াতে সহায়তা করে।
বেশি পানি পান করুন: শরীরের কোষে হাইড্রেশন বাড়লে মেটাবলিজমও বেড়ে যায়। দিনে নিয়মিত পানি খাওয়া ক্যালোরি বার্নে সহায়তা করে।
উচ্চ-তীব্রতা ব্যায়াম: অল্প সময়ের জন্য তীব্র ব্যায়াম এবং তারপরে হালকা ব্যায়ামের সমন্বয়ে করা HIIT শরীরে দীর্ঘ সময় মেটাবলিজম বাড়িয়ে রাখে।
ওজন তোলার অভ্যাস গড়ে তুলুন: স্ট্রেংথ ট্রেনিং বা ওজন তোলার মাধ্যমে বিশ্রামের সময়ও অতিরিক্ত ক্যালোরি বার্ন হয়। নিয়মিত এই ব্যায়াম করলে দিনে গড়ে ২৬৫ ক্যালোরি বেশি পোড়ে।
ওলং বা সবুজ চা পান করুন: এই চায়ের ক্যাফেইন ও ক্যাটেচিন নামক যৌগ মেটাবলিজম বাড়াতে সাহায্য করে বলে কিছু গবেষণায় দেখা গেছে।
ঝাল খাবার খান: মরিচের মধ্যে থাকা ক্যাপসাইসিন মেটাবলিজম বাড়াতে সহায়তা করে। যদিও গবেষণা চলমান, তবে ঝাল খাবার খাওয়া মেটাবলিক ডিজঅর্ডার প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে।
ঘুমের অভ্যাস ঠিক করুন: প্রতিদিন অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানো, একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়া, বিছানায় ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার না করা এবং ঘরকে অন্ধকার ও নিরিবিলি রাখা-সবকিছুই ভালো ঘুম নিশ্চিত করে। ভালো ঘুম মেটাবলিজম ভালো রাখতে সাহায্য করে।
ক্যাফেইন গ্রহণ করুন: গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন চার কাপ কফি পান করলে শরীরের চর্বি প্রায় ৪% হ্রাস পায়।
বেশি দাঁড়িয়ে থাকুন: দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা শরীরের বিপাকক্রিয়া কমিয়ে দেয়। প্রতি ৩০ মিনিট পরপর দাঁড়ানো বা হাঁটাহাঁটি করলে মেটাবলিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
ক্র্যাশ ডায়েট এড়িয়ে চলুন: খুব কম ক্যালোরি গ্রহণ করা শরীরকে দুর্বল করে তোলে এবং মেটাবলিজম ধীর করে দেয়। স্বাস্থ্যকর ও পরিমিত খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা জরুরি।
মানসিক চাপ কমান: চাপে শরীরে কর্টিসল হরমোন বাড়ে, যা মেটাবলিজম ধীর করে। দীর্ঘমেয়াদী চাপ ওজন বাড়ানোর অন্যতম কারণ হতে পারে।
মেটাবলিজম ধীরগতির লক্ষণ: হঠাৎ ওজন বৃদ্ধি বা ওজন কমাতে সমস্যা, অবসাদ, শরীর ঠান্ডা থাকা, মিষ্টি বা কার্বোহাইড্রেট, চুল পড়া, নখ ভেঙে যাওয়া, বদহজম, কোষ্ঠকাঠিন্য।
মেটাবলিজমে প্রভাব ফেলে এমন কারণ: দুই ধরনের কারণ মেটাবলিজমে প্রভাব ফেলে: পরিবর্তনযোগ্য: খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম, ঘুম, ধূমপান, অ্যালকোহল গ্রহণ।
শরীরের মেটাবলিজম বাড়াতে প্রাকৃতিক উপায়গুলো কাজে লাগানো যেতে পারে। তবে, যদি শরীরের কোনো চিকিৎসাজনিত সমস্যা থেকে থাকে, তবে ওষুধের সাহায্য প্রয়োজন হতে পারে।
সূত্র: https://shorturl.at/kH2mt
মিরাজ খান