ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৪ মে ২০২৫, ২১ বৈশাখ ১৪৩২

দ্রুত ওজন কমাতে দিনের শুরুতেই যা করবেন

প্রকাশিত: ০৮:১২, ২৬ এপ্রিল ২০২৫

দ্রুত ওজন কমাতে দিনের শুরুতেই যা করবেন

ওজন কমাতে হাজার রকম চেষ্টার পরও অনেক সময় কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া যায় না। কিন্তু আপনি জানেন কি, প্রতিদিন সকালে কয়েকটি সাধারণ অভ্যাস গড়ে তুললে ওজন কমার গতি বেড়ে যেতে পারে অনেকটাই? এক্ষেত্রে শুধু ডায়েট বা ব্যায়ামই নয়, বরং সঠিক জীবনযাপন পদ্ধতি গড়ে তোলা অনেক বেশি কার্যকর। চলুন জেনে নেই এমন ৮টি সকালের অভ্যাস, যা ওজন কমানোর পাশাপাশি শরীরকেও রাখবে সুস্থ ও চনমনে।

১.সকালের পানি পানের অভ্যাস
সকালে নাস্তা খাওয়ার আগে আধা লিটার পানি খেয়ে নিতে পারেন।এই অভ্যাসে পেট কিছুটা ভরা লাগে, ফলে কম নাস্তা খেলেও মনে হয় পেট ভরে গেছে। পানিতে কোনো ক্যালোরি না থাকায় তা ওজন বাড়ায় না। 
শুধু নাস্তার আগে নয়, দিনের অন্যান্য বেলাতেও এই অভ্যাস কার্যকর। খাওয়ার আগে আধা লিটার পানি খেলে স্বাভাবিকের চেয়ে কম খেলেও পেট ভরে যাবে এবং ওজন কমাতে তা সহায়ক হবে। অনেকের ভুল ধারণা রয়েছে,খাওয়ার আগে পানি খেলে হজমে সমস্যা হয়, তবে তার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।

২,অস্বাস্থ্যকর খাবারের প্রলোভন ঠেকাতে পরিকল্পনা
সকালে আপনার দিনের নাস্তাগুলোর কথা আগে থেকে চিন্তা করে রাখুন।অনেক সময় ক্ষুধা লাগলে আমরা সহজেই সিঙ্গারা, পুরি কিংবা কোকের দিকে ঝুঁকি। তবে সকালেই পরিকল্পনা করে রাখলে এই অস্বাস্থ্যকর খাবারের প্রতি আকর্ষণ কিছুটা কমে। ফল, বাদাম বা ঘরে তৈরি স্বাস্থ্যকর খাবার সঙ্গে রাখলে চটজলদি ভুল খাওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।

৩.সকালের ব্যস্ততায় হাঁটা যোগ করুন
বাচ্চাকে স্কুলে দিয়ে আসা, অফিসে যাওয়া এই সব সময়েই কিছুটা হাঁটার সুযোগ বের করুন। রিকশা বা বাস থেকে একটু আগে নেমে হাঁটা শুরু করুন। এমন অভ্যাস ব্যায়াম হিসেবে কাজ করে। ওজন কমানোর পাশাপাশি শরীর সুস্থ রাখতেও নিয়মিত হাঁটা প্রয়োজন।

৪.চা-কফিতে চিনি বাদ দিন
সকালে চা বা কফিতে চিনি না খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।চিনির মাধ্যমে সহজেই বাড়তি ক্যালোরি শরীরে ঢুকে পড়ে। চা-কফিতে চিনি বাদ দিলে তা ওজন কমাতে সহায়ক হয়। প্রথমদিকে খারাপ লাগলেও ধীরে ধীরে অভ্যস্ত হয়ে যাবেন। চায়ের সঙ্গে বিস্কিটেও অনেক চিনি ও ক্যালোরি থাকে, সুতরাং তা এড়িয়ে চলাই ভালো।

৫.প্রতিদিন সকালে ওজন মাপুন
ওজন কমাতে চাইলে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ওজন মাপার অভ্যাস গড়ে তুলুন।ওজন মাপলে ওজন কমে না ঠিকই, তবে এটি আপনার মধ্যে সচেতনতা তৈরি করে। এতে করে আপনি সারা দিন কী খাবেন, কতটা হাঁটবেন সে বিষয়ে আগেই ভাবতে পারবেন। ফোনে ওজন রেকর্ড রাখার অ্যাপও ব্যবহার করতে পারেন।

৬.সকালে ব্যায়ামের অভ্যাস

সারাদিনের ব্যস্ততার মধ্যে অনেক সময় ব্যায়াম করার সুযোগ মেলে না। তাই সকালেই হালকা ব্যায়াম, দড়িলাফ, হাঁটা বা দৌড় যেটা সুবিধা হয়, সেটাই করে ফেলুন। এতে আপনার সারাদিনই ভালো যাবে এবং ওজন কমানোর পথও প্রশস্ত হবে।

৭.পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন
ভালো ঘুম না হলে ওজন কমানো কঠিন হয়ে পড়ে।কম ঘুম ক্ষুধা বাড়ায়, বেশি খাওয়ার প্রবণতা তৈরি করে এবং ক্লান্তির জন্য ব্যায়ামও বাদ পড়ে যায়। ঘুম কম হলে মানসিক চাপ বেড়ে গিয়ে তা ওজন বৃদ্ধির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করাই উত্তম।

৮.একটি অ্যাকশন পয়েন্ট ঠিক করুন প্রতিদিন সকালে
ওজন মাপার পর প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট কাজ ঠিক করে ফেলুন।অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা প্রতিদিন সকালে ওজন মাপে এবং সেই অনুযায়ী একটি ‘অ্যাকশন পয়েন্ট’ ঠিক করে, তাদের ওজন গড়পরতা হিসাবেই ৩ কেজি বেশি কমে। যেমন আজ ১০ হাজার কদম হাঁটবেন, রাত ৮টার পর খাবেন না—এমন একটি কাজ প্রতিদিন ঠিক করুন এবং তা পালন করুন।


ওজন কমানোর জন্য শুধু ডায়েট নয়, বরং সঠিক সময়ের অভ্যাস ও মনোযোগ অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই সকালের ছোট ছোট অভ্যাসগুলো আপনাকে স্বাস্থ্যকর জীবনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। মনে রাখবেন, অভ্যাসই বদলায় জীবন। সুস্থ থাকুন, সচেতন থাকুন শীঘ্রই আবার দেখা হবে।

 

 

সূত্র:https://tinyurl.com/46kn4vrc

আফরোজা

×