
ছবি: সংগৃহীত।
ছোটবেলায় নিশ্চয়ই আপনি টুকি বা লুকোচুরি খেলেছেন? কাউকে হারিয়ে খুঁজে পাওয়ার আনন্দটা ঠিক কেমন ছিল মনে আছে? এমন খেলার মধ্য দিয়েই শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশ শুরু হয়—হয়তো তখন আপনি জানতেন না, কিন্তু চিকিৎসকরা বলছেন, এই সাধারণ খেলার মাঝেই লুকিয়ে আছে মানসিক সুস্থতার চাবিকাঠি।
আজকাল শিশুদের নিয়ে কাজ করা অনেক মনোরোগ চিকিৎসক ‘পিকাবু’ (টুকি) খেলার পরামর্শ দেন। এই খেলার রয়েছে নানা উপকারিতা। যেমন—
১. সামাজিক দক্ষতা বাড়ায়
অনেক শিশু দেখা যায়, মানুষের সঙ্গে ঠিকভাবে মিশতে পারে না—না কথা বলে, না হাসে। এমন ক্ষেত্রে টুকি খেলাটা সাহায্য করে। এই খেলায় শিশুকে শিখতে হয় অন্যের সঙ্গে বোঝাপড়া করতে, তাল মিলিয়ে চলতে। ফলে সামাজিক যোগাযোগের দক্ষতা বাড়ে।
২. কৌতূহল ও অনুধাবনের ক্ষমতা বাড়ায়
টুকি খেলতে খেলতে শিশুর মনে তৈরি হয় এক ধরনের কৌতূহল—"এরপর কী হবে?" সামনে থাকা মানুষটি কী করবেন, সেটা বুঝতে শেখে তারা। ধীরে ধীরে শিশুর মধ্যে গড়ে ওঠে অন্যের ভাবনা অনুধাবনের ক্ষমতা। এমনকি, তারা অন্যের অবস্থানে নিজেকে বসিয়ে ভাবতেও শেখে—এটি শিশুর মানসিক বিকাশে খুবই জরুরি।
৩. আলাদা হওয়ার ভয় কমায়
শিশুরা যেন বোঝে, কেউ চোখের সামনে না থাকলেও সে আবার ফিরে আসবে—এই বিশ্বাস তৈরি করা জরুরি। মা-বাবা কাজে গেলেও ফিরে আসবেন, এই আস্থাটুকু শিশুর মনে গেঁথে দিতে পারে এই খেলা। এমনকি বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের মতো কঠিন বাস্তবতা মানিয়ে নিতে এই ধরনের খেলাধুলা বেশ কার্যকর হতে পারে।
চিকিৎসক আলতাফ হোসেন বলেন, “অনেক সময় আমরা শিশুদের ‘পিকাবু’ বা লুকোচুরি খেলার পরামর্শ দিই, বিশেষ করে যাদের কথা বলায় সমস্যা রয়েছে বা যারা অটিজম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডারে ভুগছে। এই খেলাগুলো শিশুদের মধ্যে সহানুভূতি, সম্পর্ক গড়া, এবং অপরকে কষ্ট না দিয়ে যোগাযোগের দক্ষতা তৈরি করতে সাহায্য করে।”
তাই শিশুর মানসিক বিকাশে সময় করে হলেও প্রতিদিন খানিকটা টুকি খেলুন। এই ছোট খেলার মধ্যেই লুকিয়ে আছে বড় উপকার।
সায়মা ইসলাম