
শীতের বিদায়ে বসন্তের আগমনে বাড়ে রোদের তীব্রতা
শীতের বিদায়ে বসন্তের আগমনে বাড়ে রোদের তীব্রতা। মাঝে মধ্যে অনুভূত হয় ভ্যাপসা গরম। ত্বক ঘামানো শুরু করে। তাই এ সময়ে শরীরের বিভিন্ন অংশের প্রয়োজন বাড়তি যতেœর। বিশেষ করে ঘাম দিয়ে ভেজা চুল ছড়াতে পারে দুর্গন্ধ। এ জন্য চুল ভালো রাখতে যেসব বিষয়ে খেয়াল রাখা দরকার তা নিয়েই আজকের লেখা।
মানব সৌন্দর্যের অন্যতম অনুষঙ্গ চুল। যা সুন্দর রাখতে যুগে যুগে মানুষ প্রয়োগ করছে নানা রকম ফর্মুলা। চুল ছোট বা লম্বা যেমনই হোক যতœ পেলে হবে স্বাস্থ্যজ্জ্বল।
দৈনন্দিন কাজের জন্য শরীরের যেমন পুষ্টি প্রয়োজন তেমনি চুলেরও প্রয়োজন খাদ্য। আর এ খাবার না পেলে চুল হয়ে যায় নিষ্প্রাণ। চুলের খাবার হিসেবে অন্যতম ভূমিকা পালন করে তেল। নারী ও পুরুষ সবারই সপ্তাহে কমপক্ষে দুই দিন হালকা গরম অয়েল ম্যাসেজ করতে হবে। রাতে মাথায় তেল ম্যাসাজ করে, সকালে শ্যাম্পু করলে চুল হবে ঝরঝরে। তবে তেল দেওয়া অবস্থায় বাহিরে না যাওয়াই ভালো। কারণ সহজেই মাথার তালুতে ধুলাবালু জমতে পারে। কর্মজীবী নারী ও পুরুষ সপ্তাহে ছুটির একটি দিনের মধ্যে আধা ঘণ্টা চুলের যতেœ সময় দিন। এতে চুল আপনার আত্মবিশ্বাষ ও সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেবে বহুগুণ।
চুল ধোয়ার পর যত দ্রুত সম্ভব শুকাতে হবে। বেশিক্ষণ ভেজা থাকলে গোড়া নরম হয়ে যায় এবং চুল ওঠার প্রবণতা বাড়ে। ভেজা চুল কখনোই চিরুনি দিয়ে আচড়াবেন না, গোড়া নরম থাকায় সহজেই চুল পড়ে। খুব বেশি প্রয়োজন না হলে চুল হেয়ার ড্রাই মেশিন দিয়ে না শুকানো ভালো। এর মাধ্যমে চুলের আগা ফাটা ও রুক্ষতা দেখা দিতে পারে।
টিনএজ থেকে বৃদ্ধ সবারই চুলে খুশকি হওয়া একটি কমন সমস্যা। এতে মাথা চুলকানোসহ দেখা দেয় নানা জটিলতা। আর খুশকি দূর করতে প্রয়োজন বাড়তি যতেœর। এক্ষেত্রে হালকা গরম করা অয়েলের সঙ্গে লেবুর রস মিলিয়ে মাথার তালুতে ম্যাসাজ করে আধা ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করতে হবে। এছাড়াও লেবুর রস, টক দই, মেহেদির গুঁড়া অথবা কাঁচা মেহেদি এবং মেথির গুঁড়া এসব উপকরণ একসঙ্গে মিলিয়ে চুলে ভালো করে দিয়ে আধা ঘণ্টা রাখতে হবে। এরপর শ্যাম্পু করুন।
এভাবে সপ্তাহে ন্যূনতম একদিন করতে পারলে চুলকে খুশকিমুক্ত রাখা যাবে এবং গোড়াও হবে শক্ত। টকদই চুলকে ময়েশ্চারাইজ করে। মেথি গুঁড়া চুলকে করে খুশকি মুক্ত। লেবুর রস বাড়ায় চুলের উজ্জ্বলতা।
ব্যস্ততার জন্য অনেক গৃহিণীরা চুল আচড়ানোরও সময় পান না। গৃহ কাজে তারা এতোটাই ব্যস্ত থাকে চুল আঁচড়ানোর ফুসরত কোথায়? জানা প্রয়োজন আমাদের মস্তিষ্ক সচল রাখতে চুল অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। চুল আঁচড়ানোর মাধ্যমে মাথার তালুতে যে ম্যাসাজ হয় তা সচল রাখে মস্তিষ্ক। এজন্য সকালে এবং রাতে ঘুমানোর আগে চুল আঁচড়াবেন দেখবেন আপনার অনেক প্রশান্তি লাগছে।
গৃহিণীরা হয়তো ভাবেন চুল আঁচড়িয়ে আর কি হবে কেউ তো আর দেখছে না, মাথার ওপরে থাকে ওড়না অথবা শাড়ির আঁচল। তবে নিজেকে গুছিয়ে রাখতে হয় নিজের জন্যই। প্রবাদে আছে ‘যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে’। সকল কাজের মাঝেও নিজেকে গুছিয়ে রাখার মধ্যে আছে অন্যরকম ব্যক্তিত্ব। চুলকে বেশি আটসাট করে বাঁধা যাবে না। পাঞ্চ ক্লিপ দিয়ে হালকা করে আটকে রাখুন। হাল ফ্যাশনে টিনএজদের ধারণা প্রতিদিন শ্যাম্পু করলে চুল ভালো থাকবে। এটা একদম ভুল।
অতিরিক্ত শ্যাম্পু করায় চুল নিষ্প্রাণ ও ভঙ্গুর হতে পারে। তাই চুল ভালো রাখতে সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন শ্যাম্পু করুণ। যারা নিয়মিত চুল খোলা রেখে বাইরে যান, তারা একদিন পরপর শ্যাম্পু করতে পারেন। অযতেœ অকালে চুল না হারিয়ে সময় থাকতে চুলের যত্ন নিন।
মডেল: তাসনিয়া
ছবি : এ কে রাসেল