
.
কিনে দে রেশমি চুড়ি, নইলে যাব বাপের বাড়ি, দিবি বলে কাল কাটালি, জানি তোর জারিজুড়ি... আশা ভোষলের গাওয়া জনপ্রিয় এই গানে স্রোতারা আজও বিমুগ্ধ। চুড়ি বা বালা যে নামেই ডাকা হোক না কেন, বাঙালী নারীদের কাছে এর জনপ্রিয়তা যুগ থেকে যুগান্তর অবধি থাকবে। দু হাতে একজোড়া চুড়ি পরা যেন ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। প্রাচীন সভ্যতায় একটি বাক্য খুব প্রচলিত ছিল, বিবাহিত নারীরা চুড়ি না পরলে স্বামীর অমঙ্গল হয়। এসব কুসংস্কার হলেও বাঙালী নারীরা নিজেদের ভাল লাগাকে প্রাধান্য দিতেই বাক্যটি সত্য হিসেবেই মেনে নিয়েছে। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে এমন নারী খুঁজে পাওয়া ভার যার হাতে একজোড়া চুরি নেই। টিনএজ থেকে বৃদ্ধা সবার হাতেই চুড়ি গহনাটি। এটি নারীর সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেয় বহুগুণ। আর এর রয়েছে নানা রঙ-ঢঙ। কাপড়ের চুড়ি, কাঁচের চুড়ি, রুপার চুড়ি, স্বর্ণের চুড়ি আর কত নাম রয়েছে এই গহনার। আজকাল টিনএজদের এক হাতে ঘরি ও অন্য হাতে চুড়ি পরতে দেখা যায়। নানান রকম কারুকার্যম-িত সেই চুড়ি যেন হাতের শোভা। কাঁচ, কাঠ, স্টোন, মাটি ও সুতা বিভিন্ন ধরনের জিনিস দিয়ে তৈরি হয় এই চুড়ি। এই গহনাটির জনপ্রিয়তা বরাবরই একইরকম তবে কাঁচের তৈরি চুড়ির জনপ্রিয়তা সবসময় বেশি থাকে। শাড়ি কিংবা সালোয়ার-কামিজ যেকোন পোশাকেই বঙ্গ ললনারা হাত ভর্তি করে কাঁচের চুড়ি পরতে পছন্দ করে। বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, পাকিস্তান ও দক্ষিণ এশিয়ার নারীদের ঐতিহ্যগত অলঙ্কার এই চুড়ি। বাংলাদেশের যেকোন মেলায় এক্সেসরিজ স্টলগুলো নারীদের পদচারণায় মুখরিত থাকে। পাওয়া যায় চুড়ির টুংটাং আওয়াজ। চুড়ির প্রতি নারীর দুর্বলতা অতিতে যেমন ছিল আজও তেমনি আছে। বিয়ের অনুষ্ঠানে নারীরা সাধারণত বেনারসি বা কাতান শাড়ি পরতে পছন্দ করেন। আর এসব শাড়ি গায়ে জড়ালে অবশ্যই সোনার বালা বা মেটালের গোল্ডেন স্টোন বসানো ভারি চুড়ি পরতে পারেন।
যা আপনার সাজকে পরিপূর্ণ করবে। আবার এক হাতে অক্সিডাইজের চুড়ি পরতে পারেন সিল্কের শাড়ির সঙ্গে। অন্য হাতে ঘড়ি পরলে আপনার সৌন্দর্য বেড়ে যাবে বহুগুণ।
উৎসব-পার্বণে যারা সালোয়ার-কামিজ পরতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। তারা ওড়না ও সালোয়ারের সঙ্গে অথবা কামিজের রঙের সঙ্গে মিলিয়েও চুড়ি পরতে পারেন। বর্তমানে টিনএজরা পাশ্চত্য পোশাকেই আরাম বোধ করেন। আর এসব পোশাকেও চুড়ি খুবই মানাসই হয় যদি সঠিকভাবে বেছে নেওয়া যায়। এক্ষেত্রে বেছে নিতে পারেন স্টাইলিশ সিলভার কালারের চুড়ি। আবার চুড়ির মতোই দেখতে একটু চওড়া হয় যাকে আমরা ব্রেসলেট বলি। যা তরুণদের কাছে খুবই জনপ্রিয়। তরুণ থেকে যুবক অধিকাংশের হাতের কব্জিতেই দেখা যায় এই ব্রেসলেট। এর মাধ্যমে তাদের আরও সুন্দর ও ফ্যাশনাবল লাগে। আর তাদের প্রয়োজনীয়তার কথা ভেবেই এই ব্রেসলেটে আনা হয়েছে নানা ডিজাইন ও প্যাটার্ন। তাই একই রকম ব্রেসলেট পরে একঘেয়েমি না হয়ে মাঝে মধ্যে পরিবর্তন করে পরতে পারেন। এতে নতুন করে ভাললাগা বাড়বে। স্বর্ণ, রুপা ও তামা দিয়ে তৈরিসহ বিভিন্ন রকমের ব্রেসলেট বেছে নিতে পারেন। শপিংমলসহ রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করতে দেখা যায় ছেলেদের এই গহনা।