প্রশ্ন : নিম্ন মধ্যবিত্ত গোঁড়া হিন্দু পরিবারের মেয়ে আমি। বান্ধবীর বিয়ের রাতে আমাদের পাড়ারই এক ছেলের সঙ্গে ক্লাস নাইনে পড়ার সময় আমার পরিচয় ঘটে। তারপর আমরা কিভাবে যেন দুজন দুজনকে ভালবেসে ফেলি। দশম শ্রেণীর শেষের দিকে আমরা আমাদের পরিবারকে না জানিয়ে মন্দিরে গিয়ে বিয়ে করি। এতে আমার বাবা, মা অনেক কষ্ট পায় এবং উভয় পরিবারের মধ্যে অশান্তির সৃষ্টি হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে উভয় পরিবারের অভিভাবক এবং এবং এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে সালিশ হয়, সেখানে সিদ্ধান্ত হয় যে, যেহেতু আমার বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হয়নি এবং আমি এসএসসি পরীক্ষার্থী। তাই আমার পরীক্ষা শেষ এবং বয়স ১৮ পূর্ণ হলেই আমাদের ঘটা করে বিয়ে দিবে এবং আমাকে আমার শ্বশুরবাড়ি নিয়ে যাবে। আমার পরিবার আমার এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষা শেষে বিষয়টি মনে করিয়ে দিয়ে তারা বলে তাদের ছেলের মাস্টার্স পরীক্ষা শেষ হোক তারপর দেখা যাবে, এখন বলছে একটা চাকরি পাক তখন দেখা যাবে। আমার পরিবার থেকে তাদের পরিবার প্রভাবশলী হওয়ার কারণে আমাকে ও আমার পরিবারকে মূল্যায়নই করছে না, মোট কথা তারা বিষয়টিকে আমলেই নিচ্ছে না, এড়িয়ে যেতে চাচ্ছে। আমার স্বামীর সঙ্গে আমার যোগাযোগ রয়েছে এবং বৈবাহিক সম্পর্কও বজায় রয়েছে। এমতাবস্থায় আমার মা, বাবা আমাকে নিয়ে খুবই চিন্তিত। আমি এখন কি করতে পারি?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, পাবনা, ভেড়ামারা
উত্তর : তুমি না বুঝে জীবনের সব থেকে বড় সিদ্ধান্তটা নিয়ে নিয়েছ।
যাই হোক তোমার বক্তব্য অনুযায়ী তোমাদের বিয়ের বিষয়টা সবার গোচরে আসার পর সেদিনের সালিশে যে সমাধানটা এসেছিল তার একটা লিখিত কপি করা, এবং উভয় পরিবারের অভিভাবকের সম্মতিসহ স্বাক্ষর করিয়ে নেয়ার প্রয়োজন ছিল। পুরোহিতের মন্ত্র উচ্চারণের মধ্য দিয়ে সাক্ষীর উপস্থিতিতে যেহেতু তোমরা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছ এবং তোমার স্বামীর সঙ্গে তোমার বৈবাহিক সম্পর্ক রয়েছে এবং বিষয়টি সবই জানে তাই তোমার স্বামীর দায়িত্ব তার অভিভাবককে বুঝিয়ে তোমাকে তোমার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া।
তাছাড়া তোমরা বিয়েটা আইনগতভাবে সুরক্ষার জন্য হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন আইন- ২০১২ এর ধারা ৩ অনুসারে হিন্দু বিবাহের দালিলিক প্রমাণ সুরক্ষার উদ্দেশে তোমার এলাকার হিন্দু বিবাহ রেজিস্টারকে দিয়ে তোমাদের বিবাহের নিবন্ধন করিয়ে নিতে পারো। তাছাড়া পরিস্থিতি বুঝে একজন এ্যাডভোকেটের সাতে আলাপ করে পারিবারিক আদালতে মামলা করা যেতে পারে। তবে তোমাদের ক্ষেত্রে উভয় পক্ষের অভিভাবক এবং সেদিনের সালিশের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে মধ্যস্থতার মাধ্যমে একটা সমাধানে আসা সবথেকে উত্তম।
প্রশ্ন : আমার নাম আব্দুল হাকিম। আমার অল্প কিছু সম্পত্তি রয়েছে। তার ওপরই আমার পরিবারের ভরণপোষণ সবকিছু নির্ভর করে। কিন্তু আমার প্রতিবেশী আহসানউল্লাহ আমার চাচাত ভাইয়ের কাছ থেকে দুই বিঘা জমি কেনে এবং রেকর্ড করার সময় আমার জমির দাগ নং থেকে ১০ কাঠা জমি রেকর্ড করে নেয়। আমি যখন জানতে পারি, জিজ্ঞাসা করলে বলত যে, ভুলে রেকর্ড করা হয়ে গেছে। এতদিন চুপচাপ ছিল। আমিও তেমন কিছু বলিনি। এখন ওই রেকর্ডের ওপর ভিত্তি করে আমার জমি দখলে যাওয়ার জন্য আমাকে নানাভাবে চাপ দিচ্ছে। আমার প্রতিবেশী আমাদের থেকে অনেক ক্ষমতাবান। আমি খুব চিন্তায় আছি। আমি এখন কি করব?
উত্তর : আপনার প্রশ্নের বক্তব্য থেকে মনে হচ্ছে আপনি এখনও পর্যন্ত জমিতে দখলে আছেন। কিন্তু উদ্দেশ্যমূলকভাবে আপনার জমি আপনার প্রতিবেশী রেকর্ড করে নেয় এবং এখন দখলে যেতে চাচ্ছে। এক সময় ছিল রেকর্ড সংশোধনের মামলা করলেই আপনি প্রতিকার পেতে পারতেন। এখন রেডর্ক সংশোধনের মামলা করে কোন প্রতিকার পাওয়া যায় না। কারণ বর্তমানে রেকর্ড সংশোধনের জন্য দেওয়ানী আদালতে মামলা করার কোন বিধান নেই।
যেহেতু আপনার প্রতিবেশী আপনার জমি আপনার অজ্ঞাতসারে উদ্দেশ্যমূলকভাবে রেকর্ড করে নিয়েছে, এবং দখলে যেতে চাচ্ছে এক্ষেত্রে একজন দক্ষ আইনজীবীর মাধ্যমে আপনাকে সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৪২ ধারায় ভুল রেকর্ডটি তার ওপর বাধ্যকর নয় মর্মে ঘোষণাসহ স্বত্ব ঘোষণার ডিক্রি দাবি কারে দেওয়ানী আদালতে মামলা দায়ের করতে হবে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: