
ছবি: সংগৃহীত
জমির মালিকানা পাওয়ার পর অনেকেই নামজারির জন্য আবেদন করেন, কিন্তু প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের অভাবে তাঁদের আবেদন ‘স্থগিত’ বা ‘নামঞ্জুর’ হয়ে যায়। এতে হয়রানি ও দীর্ঘসূত্রতার মুখে পড়তে হয় আবেদনকারীদের। অথচ শুরুতেই যদি সঠিকভাবে সব ডকুমেন্টস প্রস্তুত রাখা হয়, তাহলে নামজারি প্রক্রিয়া হতে পারে সহজ, নির্ভুল এবং স্বল্প সময়ে সম্পন্ন।
নামজারি মানে হলো—পূর্ববর্তী মালিক থেকে বর্তমান মালিকের নামে জমির খতিয়ান হালনাগাদ করা। এটি সরকারের কাছ থেকে জমির মালিকানা স্বীকৃতি পাওয়ার একমাত্র বৈধ উপায়। আপনি জমি যেভাবেই পেয়ে থাকুন—ক্রয়, দান, হেবা, উত্তরাধিকার বা আদালতের রায়ের মাধ্যমে—নামজারি ছাড়া মালিকানা প্রমাণ করা দুরূহ।
নামজারির জন্য যে ৭টি ডকুমেন্ট আবশ্যক:
১. মূল দলিল:
জমি যে উপায়ে আপনার কাছে এসেছে—বিক্রয়, দান, হেবা, বা উত্তরাধিকারের মাধ্যমে—সেই রেজিস্ট্রিকৃত দলিলটি আবেদনের সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে।
২. বায়া দলিল বা পূর্ববর্তী মালিকের দলিল:
আপনি যার কাছ থেকে জমি পেয়েছেন, তিনি কীভাবে মালিক হয়েছেন, তার প্রমাণ হিসেবে তাঁর দলিলের ফটোকপি বা সার্টিফায়েড কপি জমা দিতে হবে।
৩. সর্বশেষ রেকর্ড খতিয়ান:
জমির সর্বশেষ রেকর্ড (যেমন: এসএ, আরএস বা বিআরএস খতিয়ান) নামজারির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এতে জমির প্রকৃত মালিকানা ও অবস্থান নিশ্চিত হয়।
৪. ভূমি উন্নয়ন করের দাখিলা (ডিসিআর):
জমির হালখাজনার রসিদ জমা দিতে হবে। আপনি খাজনা না দিলেও, পূর্ববর্তী মালিকের সর্বশেষ দাখিলা দিলেও চলবে।
৫. পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি:
আবেদনকারীর একটি ল্যাব প্রিন্ট পাসপোর্ট সাইজের ছবি আবশ্যক। এটি সরকারি কাজের জন্য গ্রহণযোগ্য হতে হবে।
৬. ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর:
একটি সচল ও রেজিস্টারকৃত মোবাইল নম্বর দিতে হবে, যাতে এসিল্যান্ড অফিস থেকে এসএমএস দিয়ে যোগাযোগ করা যায়।
৭. আপোষ বন্টননামা (যদি উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত হয়):
জমি যদি উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত হয়, তবে সব ওয়ারিশদের লিখিত ও রেজিস্ট্রিকৃত বণ্টননামা প্রয়োজন। কেউ আপত্তি জানালে আদালতের রায় জমা দিতে হবে।
এসব কাগজপত্র পূর্ণ থাকলে নামজারি আবেদন সাধারণত কোনো আপত্তি ছাড়াই গ্রহণযোগ্য হয়। তবে যেকোনো একটি ডকুমেন্টস না থাকলে আবেদনটি স্থগিত হয়ে যেতে পারে এবং এসিল্যান্ড অফিস থেকে কারণ দর্শানো হতে পারে। তখন নতুন করে আবেদন করতে হয়, যা সময়সাপেক্ষ ও কষ্টসাধ্য।
নামজারি হলো জমির মালিকানা প্রমাণের সরকারি স্বীকৃতি। এটি ছাড়া আপনি জমির প্রকৃত মালিক হিসেবে ভবিষ্যতে দাবি করতে সমস্যায় পড়তে পারেন। তাই সময়মতো প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস সংগ্রহ করে নির্ভুলভাবে আবেদন করাই সর্বোত্তম সিদ্ধান্ত।
সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=x9M0kJJF3vs
রাকিব