ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৫ মে ২০২৫, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বেদখল জমি উদ্ধার: মাত্র ৩টি পদক্ষেপেই মিলবে সমাধান!

প্রকাশিত: ০৯:০৪, ২৫ মে ২০২৫

বেদখল জমি উদ্ধার: মাত্র ৩টি পদক্ষেপেই মিলবে সমাধান!

ছবি: প্রতীকী

দেশে জমি বেদখলের ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। বিশেষ করে প্রবাসী ও ব্যস্ত নাগরিকদের মধ্যে যারা নিয়মিত নিজেদের সম্পত্তির তদারকি করতে পারেন না, তারা প্রায়শই আত্মীয়স্বজন বা কেয়ারটেকারের বিশ্বাসে জমি হারাচ্ছেন। এদের কেউ কেউ কৌশলে ভুয়া দলিল তৈরি করে জমি দখলে নিচ্ছে, আবার কেউ কেউ পেশিশক্তি ব্যবহার করে দিনের পর দিন জমি দখল করে রাখছে।

তবে আশার কথা হলো, সরকার ভূমি খাতে যুগান্তকারী আইনি সংস্কার এনেছে। ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন ২০২৩’ বাস্তবায়নের ফলে বেদখল জমি উদ্ধার এখন আগের তুলনায় অনেক সহজ হয়েছে। আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. বেলায়েত হোসেন এক ভিডিও বার্তায় জানান, মাত্র তিনটি আইনি পদক্ষেপেই যে কেউ নিজের দখলহীন জমি ফিরে পেতে পারেনতাও অনেক ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিকভাবে।

প্রথম পদক্ষেপ: নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদন

যদি কেউ অবৈধভাবে জমি দখল করে নেয়, তবে জমির প্রকৃত মালিক ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন ২০২৩-এর আওতায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতে পারবেন। ম্যাজিস্ট্রেট প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই ও সরেজমিন তদন্ত শেষে উচ্ছেদের আদেশ দিতে পারেন। আইন অনুযায়ী, এই আবেদন তিন মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে। আদেশ অমান্য করলে দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে দু’বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।

দ্বিতীয় পদক্ষেপ: ১৪৫ ধারায় মোকদ্দমা

যদি জমির ধারে কাছেও যাওয়া সম্ভব না হয়, তবে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৪৫ ধারায় মোকদ্দমা করতে পারেন। এই ধারায় দলিল নয়, গুরুত্বপূর্ণ হলো কার দখলে জমি রয়েছে এবং কে জোর করে উচ্ছেদ হয়েছে তা নির্ধারণ করা। থানার রিপোর্ট ও স্থানীয় তদন্তের ভিত্তিতে আদালত প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন।

তৃতীয় পদক্ষেপ: সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনে মামলা

উপরোক্ত দুটি পদক্ষেপ ব্যর্থ হলে, জমির প্রকৃত মালিক সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইন, ১৮৭৭-এর ৪২ ধারায় ঘোষণা চেয়ে মোকদ্দমা করতে পারেন। এতে আদালত মালিকানার ঘোষণা দিয়ে জমি উদ্ধারের পথ তৈরি করে দেন।

এছাড়া, নতুন আইনে ‘ভূমি সালিশ বোর্ড’ গঠনের প্রস্তাব রয়েছে। এই বোর্ড সীমানা নির্ধারণ, ভোগদখল ও পারিবারিক সম্পত্তি ভাগ-বাটোয়ারার বিরোধ নিষ্পত্তিতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। বোর্ডের আদেশ চূড়ান্ত ধরা হলেও আদালতের আশ্রয় নেওয়ার অধিকার থাকবে পক্ষসমূহের।

অ্যাডভোকেট বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘আইনের সংস্কারকে কেন্দ্র করে যারা অপপ্রচার চালাচ্ছে, তারা মূলত জমি দখলকারী কিংবা তাদের পৃষ্ঠপোষক। তারা সমাজে অরাজকতা সৃষ্টির অপচেষ্টায় লিপ্ত। জমির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এখনই সচেতন হতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভয় না পেয়ে শান্তভাবে সঠিক আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। জমির দখল হারালে সময় মতো ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন।’

 

সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=M-SbEkNafHU

রাকিব

×