বেশিরভাগ ছেলেমেয়েরাই স্বপ্ন দেখে পড়াশোনা শেষে সরকারি চাকরি করবে
বেশিরভাগ ছেলেমেয়েরাই স্বপ্ন দেখে পড়াশোনা শেষে সরকারি চাকরি করবে। সেই স্বপ্ন ডালপালা ছড়াতে থাকে অনার্সে পড়ার সময়। কেউ তখন থেকেই সিরিয়াস হয় প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনার পাশাপাশি চাকরির পড়াশোনায়। কেউ আবার ভেবেই পান না কিভাবে পড়লে সরকারি চাকরি পাওয়া সহজ হবে কিংবা সরকারি চাকরি পাওয়ার জন্য কিভাবে পড়বেন। এখানে তারই কিছু পরামর্শ দেয়া হলো-
সরকারি চাকরি পেতে হলে অবশ্যই আপনার শারীরিক, মানসিক এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকতে হবে। শারীরিকভাবে সুস্থ, মানসিকভাবে ভারসাম্যপূর্ণ এবং উপযুক্ত শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকলেই কেবল আপনি সরকারি চাকরির জন্য আবেদন করতে পারবেন। পরবর্তীতে লিখিত পরীক্ষা, মৌখিক পরীক্ষা এবং শারীরিক পরীক্ষার মাধ্যমে যোগ্য মনে হলেই কেবল আপনি সরকারি চাকরি পেতে পারেন। আপনি যদি চাকরি প্রত্যাশী হন তাহলে পত্রিকায় প্রকাশিত সাপ্তাহিক চাকরির খবর আপনার জন্য খুবই প্রয়োজনীয়।
শিক্ষা জীবনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রতিটি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করতে হবে। ভালো ফলাফল করতে হলে অবশ্যই মনোযোগ সহকারে পড়াশোনা করতে হবে। পড়াশোনায় মনোযোগ বাড়ানোর উপায়গুলো দেখে নিয়ে তা অনুসরণ করতে পারেন।
সরকারি চাকরি পাওয়ার জন্য কিভাবে পড়বেন: সরকারি চাকরির জন্য নিজেকে যোগ্যরূপে গড়ে তুলতে পড়াশোর কোনো বিকল্প নেই। আপনি যদি চাকরির জন্য নিজেকে যোগ্য করে গড়ে তুলতে পারেন তাহলে চাকরি আপনাকে খুঁজবে।
মূল কথা হলো সরকারি চাকরির পরীক্ষায় যে সকল বিষয়ে প্রশ্ন হয়, আপনার সেই সকল বিষয়ের উপর পরিপূর্ণ জ্ঞান থাকতে হবে। বর্তমানে সরকারি চাকরি যেন সোনার হরিণ, সহজে ধরা দিতে চায় না। সরকারি চাকরির প্রতিযোগিতা অনেক বেশি। একটিমাত্র পদের জন্য হাজার হাজার প্রার্থী প্রতিযোগিতা করে থাকে। প্রতিযোগিতায় টিকতে হলে আপনাকে অবশ্যই সর্বোচ্চ যোগ্যতার অধিকারী হতে হবে। সাধারণত প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার কোনো সিলেবাস থাকে না।
বিষয়ের প্রস্তুতি
সরকারি চাকরিতে সাধারণত বাংলা, ইংরেজি, অংক এবং সাধারণ জ্ঞান বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়ে থাকে। বাংলা বিষয় থেকে ব্যাকরণ ও সাহিত্য, ইরেজি বিষয় থেকে গ্রামার ও অন্যান্য। গণিত বিষয় থেকে বীজগণিত, পাটি গণিত ও জ্যামিতি। সাধারণ জ্ঞান বিষয় থেকে বাংলাদেশ, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলা ও ইতিহাস বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। এখানে বাংলা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হলো, যা ভালোভাবে আয়ত্ত করলেই আপনার প্রস্তুতি নেওয়া হয়ে যাবে এবং সরকারি চাকরির জন্য যে কোনো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় ভালো করতে পারবেন।
বিষয় : বাংলা
সরকারি চাকরির পরীক্ষায় ৮ম ও ৯ম শ্রেণির সিলেবাসকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়ে থাকে। তাই বাংলার ক্ষেত্রে ৮ম ও ৯ম শ্রেণির ব্যাকরণ বোর্ড বইটা ভালো করে পড়তে হবে। সমাস, সন্ধি, কারক ও বিভক্তি, এক কথায় প্রকাশ, সমার্থক শব্দ এগুলো থেকে প্রশ্ন আসবেই। বোর্ডে যে যে প্রশ্ন ব্যাকরণ থেকে এসেছে সেইগুলো পড়তে হবে পুরোপুরি। সঙ্গে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার ব্যাকরণ অংশের সমাধান দেওয়া থাকে সেগুলোও আয়ত্ত করতে হবে।
আরও ভালো প্রস্তুতির জন্য অবশ্যই ধ্বনিতত্ত্ব, শব্দ গঠন ও প্রকরণ, অনুসর্গ, উপসর্গ, বাক্য প্রকরণ ও রূপান্তর, ক্রিয়ার কাল, পদ, ধাতু, বিরাম চিহ্ন, বাচ্য ও বচন, লিঙ্গ, বাগধারা- এগুলো পড়তে হবে। এইগুলোর বাহিরে বাংলা ব্যাকরণ থেকে খুব একটা প্রশ্ন আসে না। এই অংশ ভালোভাবে পড়লে বাংলা থেকে ভালো নাম্বার পাওয়া যাবে।
বাংলা সাহিত্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো ৬ষ্ঠ থেকে একাদশ শ্রেণির বাংলা বোর্ড বইয়ের সকল কবি পরিচিতি আর গল্প-কবিতার উৎস, পটভূমি, কোন কবিতা কোন ছন্দে রচিত- এসব একদম মুখস্থ করতে হবে। তবে মূল গল্পটা ভালোভাবে মার্কিং করে পড়লে মনে রাখা সহজ হবে। কবিতার ছন্দ থেকে প্রায়ই প্রশ্ন আসে। বইয়ে অনেক কবিতা আছে আর সবগুলো কবিতার ছন্দ মনেও রাখা যায় না।
ছন্দ মনে রাখার জন্য একটা টিপস দিচ্ছি- ব্যাকরণ বইয়ের ভাব সম্প্রসারণ অংশে চলে যান। এখানে অনেকগুলো কবিতার চরণ ও ছন্দের ভাব সম্প্রসারণ পাবেন সেগুলো কোন কবিতার আর কোন কবির তা খুঁজে বের করুন। বার বার পরীক্ষায় আসা ছন্দগুলো এমনভাবে আয়ত্ত করুন যেন ভুলে না যান। বেশি বেশি কবি পরিচিতি ও লম্বা কবিতাগুলো বারবার পড়ুন যা পরীক্ষার খাতায় উত্তর করা সহজ করে দেবে।
বাংলা সাহিত্যের নামকরা কয়েকজন কবি ও সাহিত্যিক থেকে প্রশ্ন আসে। বিশেষ করে পিএসসির নির্ধারিত কবি ও সাহিত্যিকদের জীবনী, তাদের কাজ এবং অবদান এই অংশ থেকে প্রশ্ন আসবেই। তাই এইগুলো ভালো করে পড়তে হবে। নোবেল বিজয়ী সাহিত্যিকদের নাম অবশ্যই মনে রাখতে হবে।
পিএসসি নির্ধারিত কবি-সাহিত্যিকগণ হলেন- ১) বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ২) ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ৩) মাইকেল মধুসূদন দত্ত ৪) মীর মশাররফ হোসেন ৫) রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ৬) দীনবন্ধু মিত্র ৭) কাজী নজরুল ইসলাম ৮) জসীম উদ্দীন ৯) ফররুখ আহমদ ১১ ) কায়কোবাদ এবং ১১ ) বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন ১২) বুদ্ধদেব বসু ১৩) জীবনানন্দ দাস ১৪) বিষ্ণু দে ১৫) সুধেন্দ্রনাথ দত্ত ১৬) অমিয় চক্রবর্তী।
এখানে উল্লেখিত কবি ও সাহিত্যিকদের সম্পর্কে সব জেনে নিতে হবে। সরকারি চাকরির বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় বিশেষ করে বাংলা অংশে বাংলা ব্যাকরণ থেকে প্রশ্ন বেশি আসে। তাই বাংরা ব্যাকরণ এর উপর সর্বাধিক জোর দিন।
চাকরি বাজার ডেস্ক