
যুক্তরাষ্ট্রে সীমান্ত নিরাপত্তাকর্মীরা এখন ভ্রমণকারীদের ডিভাইস, বিশেষ করে ফোন, আগের চেয়ে বেশি ও গভীরভাবে তল্লাশি করছেন—এমনকি নিজ দেশে ফেরা মার্কিন নাগরিকদের ফোনও বাদ যাচ্ছে না। এসব তল্লাশি অবৈধ না হলেও তা ব্যক্তিগত গোপনীয়তায় গুরুতর হস্তক্ষেপ বলে বিবেচিত হচ্ছে। এই ঝুঁকি মোকাবিলায় এখন কিছু প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মীদের পরামর্শ দিচ্ছে—ভ্রমণের সময় যেন তারা একটি সাধারণ ‘বার্নার ফোন’ ব্যবহার করেন, যাতে সংবেদনশীল তথ্য সুরক্ষিত থাকে।
তবে ‘বার্নার ফোন’ শুধু সীমান্ত পার হওয়ার জন্য নয়। আপনি যদি দৈনন্দিন জীবনে নিজের গোপনীয়তা বজায় রাখতে চান বা শুধু বারবার নোটিফিকেশনের বিরক্তি থেকে কিছুটা রেহাই চান, সেক্ষেত্রেও এটি কাজে আসতে পারে। যারা স্ক্রিন টাইম কমাতে চান, ব্যক্তিগত তথ্য গোপন রাখতে চান, বা শুধু ফোনের আসক্তি থেকে একটু বিরতি চান—তাদের জন্যও এটা কার্যকর একটি পছন্দ।
আপনি যদি কখনও মনে করে থাকেন যে আপনার স্মার্টফোন যেন সব কিছু ‘জেনে’ ফেলেছে, তাহলে সম্ভবত এটিকে ছুটিতে পাঠানোর সময় এসেছে!
প্রিপেইড ফোন ১৯৯০-এর দশক থেকেই চালু থাকলেও “বার্নার ফোন” শব্দটি জনপ্রিয় হয় ২০০০ সালের দিকে, বিশেষ করে এইচবিও-র সিরিজ The Wire-এর মাধ্যমে, যেখানে চরিত্ররা পুলিশের নজর এড়াতে এ ধরনের ফোন ব্যবহার করত। যদিও ‘অপরাধমূলক কাজে ব্যবহৃত’ বলেই বার্নার ফোন পরিচিতি পেয়েছে, বর্তমানে এটি গোপনীয়তা রক্ষার জন্য সাধারণ মানুষের মধ্যেও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
বার্নার ফোন আসলে কী?
সোজা ভাষায়, বার্নার ফোন হলো সস্তা, প্রিপেইড ফোন—কোনো ধরনের চুক্তি ছাড়া। এতে নির্দিষ্ট পরিমাণ কল মিনিট, মেসেজ বা ডেটা থাকে এবং সাধারণত ব্যবহার শেষে ফেলে দেওয়ার উদ্দেশ্যে কেনা হয়।
এগুলোতে কোনো ব্যক্তিগত তথ্য জমা রাখতে হয় না এবং কেনার সময়ও তেমন কিছু দিতে হয় না। আপনি দোকানে গিয়ে কিনে নিয়ে আসতেই পারেন। ‘বার্নার’ শব্দটি এসেছে এই ভাবনা থেকে যে, ব্যবহার শেষে আপনি ফোনটি "পুড়িয়ে ফেলতে" পারেন—অর্থাৎ ফেলে দিতে পারেন—এবং সেটি আপনার পরিচয়ের সঙ্গে আর যুক্ত থাকবে না। এটি দ্রুত, স্বল্প সময়ের জন্য ফোন দরকার এমন পরিস্থিতিতে বেশ কাজে আসে।
এটি সাধারণ মোবাইল ফোন চুক্তি থেকে আলাদা, যেখানে আপনাকে অনেক ব্যক্তিগত তথ্য দিতে হয়।
আপনি কেন বার্নার ফোন ব্যবহার করবেন?
বার্নার ফোন ব্যবহারের অন্যতম সুবিধা হলো—বিরক্তিকর চুক্তি বা স্প্যাম এড়ানো। যেহেতু ফোনটি আপনার পরিচয়ের সঙ্গে যুক্ত থাকে না, কেউ সহজে আপনাকে ট্র্যাক করতে পারবে না বা বিরক্ত করতে পারবে না।
তবে ব্যবহার শেষে ফোনটি ফেলে দিতে হবে এমন নয়—আপনি চাইলে তাতে নতুন মিনিট রিচার্জ করে চালিয়ে যেতে পারেন। মূলত এটি চুক্তিবদ্ধ ফোনের ঝামেলা ছাড়াই একটি সাধারণ ফোন হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
আপনি চাইলে নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে এটি একটি দ্বিতীয় ফোন হিসেবেও ব্যবহার করতে পারেন—যেমন টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন (২এফএ) এর জন্য আলাদা নম্বর রাখা, ব্যবসায়িক প্রয়োজনে আলাদা যোগাযোগ রাখা, বা ভ্রমণের সময় রোমিং চার্জ এড়ানো। যেকোনো গোপনীয়তা রক্ষার প্রয়োজনেই বার্নার ফোন হতে পারে ভালো সমাধান।
সানজানা