ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৬ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২

কীভাবে বেঁচে ফিরেছিলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট?

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৮:১৪, ১৪ জুলাই ২০২৫

কীভাবে বেঁচে ফিরেছিলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট?

ছবি: সংগৃহীত

ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান কিছুদিন আগের ইসরায়েলের হামলায় আহত হয়েছেন বলে ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড-ঘনিষ্ঠ রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ফার্সের বরাতে জানা গেছে। গত মাসে তেহরানের একটি গোপন ভূগর্ভস্থ নিরাপত্তা স্থাপনায় অনুষ্ঠিত জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের এক জরুরি বৈঠকে অংশ নেওয়ার সময় ওই হামলা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৬ জুন তারিখে ইসরায়েল ছয়টি বোমা নিক্ষেপ করে ওই ভূগর্ভস্থ স্থাপনার প্রবেশপথ, নির্গমণ পথ এবং ভেন্টিলেশন ব্যবস্থা লক্ষ্য করে। এতে প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ানের পায়ে আঘাত লাগে এবং তিনি ও অন্যরা একটি জরুরি শ্যাফট দিয়ে পালিয়ে যান।

প্রেসিডেন্ট আহত হলেও নিরাপদ স্থানে পৌঁছাতে সক্ষম হন। তবে এ নিয়ে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য আসেনি।

ফার্স নিউজ জানায়, হামলার সময় পুরো স্থাপনাটির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়, যাতে উদ্ধার ও পালানোর পথ আরও কঠিন হয়। ওই সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন ইরানের শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তারা।

ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের মতে, ওই হামলার লক্ষ্য ছিলেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। তবে ইরান তাকে দ্রুত একটি নিরাপদ ও বিচ্ছিন্ন স্থানে সরিয়ে নেয়, ফলে ইসরায়েল তার অবস্থান চিহ্নিত করতে ব্যর্থ হয়।

গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান প্রকাশ্যে অভিযোগ করেন, ইসরায়েল তাকে হত্যা করতে চেয়েছে। যদিও ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ এ অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং বলেন, “এই যুদ্ধে আমাদের লক্ষ্য ছিল না ইরানে ‘রেজিম চেঞ্জ’।”

১৩ জুন ইসরায়েল আচমকা হামলা চালায় ইরানের পরমাণু ও সামরিক স্থাপনাগুলোর ওপর। এই হামলার উদ্দেশ্য ছিল ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির প্রচেষ্টাকে রুখে দেওয়া, এমনটাই দাবি করে তেলআভিভ।

জবাবে, ইরানও ইসরায়েল লক্ষ্য করে আকাশপথে পাল্টা হামলা চালায়। যদিও ইরান বরাবরই দাবি করে, তারা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে না এবং ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শুধুই শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে।

ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনার মাঝে ২২ জুন যুক্তরাষ্ট্রের বিমান ও নৌবাহিনী যৌথভাবে ইরানের তিনটি পরমাণু স্থাপনায় বোমা হামলা চালায়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পরবর্তীতে বলেন, “এই হামলায় ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলো সম্পূর্ণ ধ্বংস করা হয়েছে।” যদিও যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থা এই বিষয়ে কিছুটা সংযত মতামত দিয়েছে। 

বিশ্লেষকরা প্রশ্ন তুলছেন, ইসরায়েল কীভাবে এত গোপন তথ্য পেয়েছিল? কিভাবে তারা জানল কোন গোপন বাঙ্কারে কারা উপস্থিত ছিলেন? ইরানের শীর্ষ কর্মকর্তাদের উপস্থিতি ও বাঙ্কারের অবস্থান সবকিছুই ছিল খুবই স্পর্শকাতর তথ্য। এতে ইসরায়েলে হাই-লেভেল গোয়েন্দা অনুপ্রবেশ বা সাইবার নজরদারির সম্ভাবনার কথাই উঠে আসছে।

মুমু ২

×