
ছবিঃ সংগৃহীত
যুক্তরাজ্যে দ্বিতীয় রাষ্ট্রীয় সফরের জন্য রাজা চার্লস তৃতীয়ের আমন্ত্রণ আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রহণ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বাকিংহাম প্যালেস এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সেপ্টেম্বরের ১৭ থেকে ১৯ তারিখ পর্যন্ত তিনদিনব্যাপী এই সফরে ট্রাম্পের সঙ্গে থাকবেন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প। সফরের প্রধান ভেন্যু হবে ঐতিহাসিক উইন্ডসর ক্যাসেল, যেহেতু বাকিংহাম প্যালেস বর্তমানে সংস্কারের মধ্যে রয়েছে।
এর আগে ২০১৯ সালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম দফায় যুক্তরাজ্যে রাষ্ট্রীয় সফরে এসেছিলেন ট্রাম্প, তখন তাঁকে স্বাগত জানিয়েছিলেন প্রয়াত রানি এলিজাবেথ দ্বিতীয়।
রীতি অনুযায়ী, দ্বিতীয় দফায় নির্বাচিত প্রেসিডেন্টদের সাধারণত চা কিংবা মধ্যাহ্নভোজের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। কিন্তু ট্রাম্পের ক্ষেত্রে হচ্ছে ব্যতিক্রম—রাষ্ট্রীয় সফরের মাধ্যমে তাঁকে স্বাগত জানানো হবে আবারও।
পুরো আনুষ্ঠানিক কর্মসূচি এখনো প্রকাশ করা হয়নি, তবে সব রাষ্ট্রীয় সফরের মতোই থাকছে সামরিক গার্ড অব অনার এবং উইন্ডসর ক্যাসেলের সেন্ট জর্জস হলে রাজকীয় ভোজ।
সফরে রাজপরিবারের সব জ্যেষ্ঠ সদস্য অংশ নেবেন, এর মধ্যে রয়েছেন প্রিন্স এবং প্রিন্সেস অব ওয়েলস, যাঁরা ক্যাসেল প্রাঙ্গনেই বসবাস করেন।
সম্প্রতি ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁকেও উইন্ডসর ক্যাসেলে স্বাগত জানিয়েছিলেন রাজা চার্লস। এক দশকের বেশি সময় পর সেখানে কোনো রাষ্ট্রীয় সফর অনুষ্ঠিত হয়।
তবে ট্রাম্পের সফরে জনসম্মুখে কোনও আয়োজন কম থাকার সম্ভাবনা রয়েছে নিরাপত্তাজনিত কারণে। ২০১৯ সালের সফরেও তাঁর জন্য দ্য মলের রাজকীয় মিছিল বাতিল করা হয়েছিল এবং বিমানেই অধিকাংশ যাতায়াত করেছিলেন।
সেপ্টেম্বর সফরের সময় হাউস অব কমন্স বন্ধ থাকবে দলীয় সম্মেলন উপলক্ষে, যদিও হাউস অব লর্ডস খোলা থাকবে। ফলে পার্লামেন্ট সদস্যদের সামনে ট্রাম্পের বক্তৃতা দেওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার হোয়াইট হাউজে ট্রাম্পকে রাজা চার্লসের আমন্ত্রণপত্র হস্তান্তর করেন। ট্রাম্প তখন বলেছিলেন, "এটা একটা দারুণ সম্মান। উইন্ডসরে আমন্ত্রণ – এটা সত্যিই অসাধারণ।"
এই সফরটি এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে যখন রাজা চার্লস ক্যানাডা সফর করে দেশটির পার্লামেন্টের অধিবেশন উদ্বোধন করেন এবং প্রধানমন্ত্রী মার্ক কারনির শাসনের সূচনা চিহ্নিত করেন।
ব্রিটিশ সরকার ট্রাম্পের সঙ্গে এই রাষ্ট্রীয় সফরের মধ্য দিয়ে সফট ডিপ্লোমেসি রূপে সম্পর্ক মজবুত করতে চায়। কারণ ট্রাম্প নিজেই রাজপরিবারের প্রতি একাধিকবার শ্রদ্ধা প্রকাশ করেছেন।
এপ্রিল মাসে ট্রাম্প বলেছিলেন: "আমি চার্লসের বন্ধু, রাজা চার্লস এবং তাঁর পরিবারের প্রতি আমার গভীর শ্রদ্ধা আছে। উইলিয়ামকেও শ্রদ্ধা করি।"
এই সফরের মাধ্যমে ব্রিটিশ সরকার ইউক্রেন যুদ্ধ এবং যুক্তরাজ্যের রপ্তানি পণ্যের ওপর ট্রাম্প প্রশাসনের আরোপিত শুল্ক নিয়ে আলোচনার সুযোগও খুঁজছে।
আগামী সপ্তাহে ট্রাম্প স্কটল্যান্ড সফরে তাঁর নতুন গলফ কোর্স উদ্বোধনে অংশ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। শুরুতে ধারণা করা হয়েছিল রাজা চার্লসের সঙ্গে একটি ব্যক্তিগত সাক্ষাৎ হতে পারে। কিন্তু সময়সূচির জটিলতার কারণে সেটি বাতিল করা হয়েছে। সেপ্টেম্বরেই তাঁদের আনুষ্ঠানিক সাক্ষাৎ হবে।
সূত্রঃ বিবিসি
নোভা