
ছবি: সংগৃহীত
১৮৪২ সালে রানী অ্যাডিলেইডের জন্য প্রথম রাজকীয় রেলকার তৈরি হয়েছিল ব্রিটেনের ওলভারটনে। এরপর রানী ভিক্টোরিয়ার আমলে রাজপরিবারের সফরে এই রেলযাত্রা হয়ে ওঠে এক ঐতিহাসিক ঐতিহ্য। কিন্তু আজ, ১৮০ বছরের এই রাজকীয় ট্রেন সেবার সমাপ্তি ঘটাতে চলেছেন রাজা তৃতীয় চার্লস।
রাজপরিবারের সর্বশেষ অর্থনৈতিক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ২০২৭ সালের মার্চের মধ্যে "পাবলিক মানি’র সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত" করতে ট্রেনটি বন্ধ করে দেওয়া হবে। এর পরিবর্তে রাজপরিবারের সদস্যরা হেলিকপ্টার, চার্টার ফ্লাইট ও সাধারণ ট্রেনে ভ্রমণ করবেন।
প্রাইভি পার্সের প্রধান জেমস চালমার্স বলেন, “আমরা অতীতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, তবে ভবিষ্যতের দিকে এগোতে হলে পুরোনোকে আঁকড়ে থাকা যাবে না।” তিনি এটিকে "ভালোবাসায় ভরা বিদায়" বলেও অভিহিত করেন।
বিশেষ করে বাফকিংহামশায়ারের ঐতিহাসিক রেলশহর ওলভারটনের জন্য এই ঘোষণাটি খুবই বেদনাদায়ক। এখানে ট্রেনগুলো বহু যুগ ধরে সংরক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়ে আসছে।
ডিবি কার্গো ইউকে-এর সিইও আন্দ্রেয়া রোসি বলেন, “ট্রেন চালানোর দায়িত্ব আমাদের চালকদের জন্য গর্বের ব্যাপার ছিল। এটি কেবল একটি ট্রেন নয়, জাতীয় ঐতিহ্যের অংশ।”
বর্তমান ট্রেনটি নির্মিত হয়েছিল ১৯৭০-এর দশকে, যার অভ্যন্তর অনেকটা পুরনো ব্যবসায়ী হোটেলের মতো, রাজকীয় প্রাসাদের মতো নয়। এর ফিটিংস অনেকটাই পুরাতন হয়ে পড়েছে এবং ব্যবহারের হারও কমে এসেছে।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে এই ট্রেন মাত্র ২টি সফরে ব্যবহৃত হয়েছে, যার ব্যয় হয়েছে প্রায় ১ লাখ ৫ হাজার ডলার। এর বিপরীতে হেলিকপ্টারে ১৪১টি ভ্রমণ হয়েছে, যার গড় খরচ ৪,৬০০ ডলার, এবং চার্টার ফ্লাইটে ব্যয় ৮ লাখ ১৯ হাজার ডলার।
সমালোচকরা বলছেন, পরিবেশবান্ধব রাজা চার্লস হেলিকপ্টারের মতো কম টেকসই পন্থা বেছে নিয়ে নিজের ভাবমূর্তির সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি করেছেন।
২০০২ ও ২০১২ সালে রানী এলিজাবেথের জুবিলি উপলক্ষে ট্রেন ব্যবহার হয়েছিল। এমনকি কোভিড-১৯ মহামারির সময় উইলিয়াম এবং কেট ১,২৫০ মাইল দীর্ঘ সফরে ট্রেনে চড়েছিলেন।
বলা হচ্ছে, ২০২৭ সালে ট্রেনটি একটি "বিদায়ী সফর" করবে, যা সাধারণ মানুষ ও ট্রেনপ্রেমীদের জন্য শেষবারের মতো এই ঐতিহ্যবাহী যন্ত্রটি দেখার সুযোগ হবে। এরপর এর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত তবে অনেকেই আশা করছেন, এটি যাদুঘরে স্থান পাবে।
মুমু ২