
ছবি: সংগৃহীত
কেনিয়ার বাসিন্দা ৭২ বছর বয়সী রিউবেন ওয়াইথাকা ছয় দিনের সফরে এসেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে, বড় নাতি বাইরন বারুয়ার হাইস্কুল গ্র্যাজুয়েশন দেখতে। নিজের ছেলে ও নাতির জন্য এনেছিলেন মিলে যাওয়া আফ্রিকান প্রিন্টের শার্ট ও কিছু পুরোনো ছবি। কিন্তু একদিন পরেই তিনি নিখোঁজ হয়ে যান।
১৫ মে সকাল ১১টা ৮ মিনিটে আলাবামার ক্যালেরা শহরের ছেলের বাড়ি থেকে বের হয়ে যান রিউবেন। একটি গ্যাস স্টেশনের ক্যামেরা তাকে শেষবারের মতো ধরে রাখে। সেখানে তিনি বাথরুমে যান, কিন্তু পেছনের দরজা দিয়ে বের হয়ে আর ফিরে আসেননি।
সফরের দ্বিতীয় দিন থেকেই রিউবেনের আচরণ ছিল অস্বাভাবিক। বিমানে উত্তেজিত হয়ে পড়েন, তাকে ধরে রাখতে একজন বিমানকর্মীকেও সাহায্য করতে হয়। যুক্তরাষ্ট্রে নামার পর এক এসকেলেটর থেকে পড়ে গিয়ে হাঁটুতে আঘাত পান। হাসপাতাল থেকে রক্ত ও সিটি স্ক্যান পরীক্ষার পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
পরদিন সকালে চা ও ডিম খেয়ে বাইরে বের হন। এরপর থেকেই তিনি নিখোঁজ।
সিসিটিভি ফুটেজ অনুযায়ী, রিউবেন স্থানীয় একজন প্রতিবেশীর গাড়িতে করে আটটি বাড়ি দূরে নামেন, ভুল করে সেটিকে ছেলের বাড়ি ভেবেছিলেন। এরপর এক ডোরড্যাশ চালকের গাড়িতে চড়ে একটি গ্যাস স্টেশনে নামেন। সেখান থেকেই তিনি পেছনের দরজা দিয়ে বেরিয়ে যান।
এক প্রত্যক্ষদর্শীর দাবি, তাকে একটি হান্টিং ক্লাবের গেটের নিচ দিয়ে ঢুকতে দেখা গেছে, যা একটি ঘন জঙ্গলের মধ্যে। পুলিশ হেলিকপ্টার, ড্রোন, ট্র্যাকিং কুকুর, থার্মাল ক্যামেরা ব্যবহার করেও কোনো খোঁজ পায়নি।
নাতি বাইরন বলেন, “আমি চেয়েছিলাম গ্র্যাজুয়েশনে তিনি থাকুন। কিন্তু তিনি নিখোঁজ হয়ে গেলেন। এখন শুধু প্রার্থনা করি তিনি নিরাপদে থাকুন।”
ছেলে উইলিংটন বারুয়া বলেন, “আমি এখন ভাবি, যদি বাবা-মাকে না ডাকতাম তাহলে হয়তো বাবা আজও বেঁচে থাকতেন।” তিনি মনে করেন, বাবা হয়তো অ্যালঝেইমার বা অন্য কোনো মানসিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন, যা এই অচেনা পরিবেশে তীব্র হয়ে উঠেছিল।
রিউবেনের কেনিয়ান ফোনটি শেষবার ফ্রাঙ্কফুর্টে সক্রিয় ছিল, সম্ভবত এটি বিমান মোডে ছিল। তার কাছে কোনো আমেরিকান ডলার ছিল না, পাসপোর্টও রেখে গিয়েছিলেন বাড়িতে।
একইসাথে পুলিশ অভিবাসন বিভাগ, হাসপাতাল ও হোমলেস শেল্টারে তার খোঁজ চালিয়ে যাচ্ছে। রিউবেনের স্ত্রী এলিজাবেথ বারুয়া দুঃখে ভেঙে পড়েছেন এবং গণমাধ্যমে কথা বলতে পারছেন না।
জুনের ৩ তারিখ ছিল রিউবেনের ৭৩তম জন্মদিন। বাবা দিবসে তার ছেলের পরিকল্পনা ছিল একটি পার্টির, যেখানে সবাই মিলে মিলিয়ে শার্ট পরে আনন্দ করতেন। কিন্তু সে দিনটি এল না।
উইলিংটন এখনো প্রতিদিন রাস্তার পাশে গাছের ভেতর তাকিয়ে থাকেন যদি কোনোদিন বাবার খোঁজ পান।
মুমু ২