ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৬ জুলাই ২০২৫, ২২ আষাঢ় ১৪৩২

৩০ লাখ মানুষের বাস্তুচ্যুতির শঙ্কা

পানি শূন্য নগরী হতে পারে কাবুল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ২১:৩৯, ৫ জুলাই ২০২৫

পানি শূন্য নগরী হতে পারে কাবুল

পানি শূন্য নগরী হতে পারে কাবুল

৬০ লাখেরও বেশি মানুষের শহর আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল। দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে এক ভয়াবহ বিপর্যয়ের দিকে। একটি সাম্প্রতিক আন্তর্জাতিক প্রতিবেদনে সতর্ক করে বলা হয়েছে, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে কাবুল হতে পারে আধুনিক বিশ্বের প্রথম পানি শূন্য নগরী। এছাড়া ৩০ লাখ মানুষের বাস্তুচ্যুতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। খবর আলজাজিরার।
মার্সি কর্পসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত এক দশকে কাবুলের ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ২৫ থেকে ৩০ মিটার পর্যন্ত নেমে গেছে। এর কারণ হিসেবে উঠে এসেছে অতিরিক্ত পানি উত্তোলন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব এবং প্রশাসনিক ব্যর্থতা। প্রতি বছর প্রাকৃতিকভাবে ভূগর্ভস্থ যে পরিমাণ পানি পুনরায় সঞ্চিত হওয়ার কথা, তার চেয়ে প্রায় ৪৪ মিলিয়ন ঘনমিটার বেশি পানি উত্তোলন করা হচ্ছে কাবুলে। শহরটিতে প্রায় ৫০ শতাংশ বোরওয়েল এখন পুরোপুরি শুকিয়ে গেছে এবং যেসব উৎস এখনো কিছুটা পানি দিচ্ছে, তার ৮০ শতাংশই দূষিত—মিশে আছে নোংরা পানি, আর্সেনিক ও লবণাক্ততা।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বৃষ্টি কমে গেছে, আগাম তুষার গলা এবং খরা ক্রমাগত তীব্র হচ্ছে। ২০০১ সালে যেখানে শহরের জনসংখ্যা ছিল ১০ লাখের নিচে, বর্তমানে তা ৬০ লাখ ছাড়িয়েছে, যা চাপ বাড়িয়েছে পানির উৎসের ওপর। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সংকট সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করছে দরিদ্রদের। বিত্তশালী পরিবারগুলো যেখানে গভীর নলকূপ খনন করে পানি তুলতে পারছে, সেখানে দরিদ্ররা প্রতিদিন ছোট ছোট পাত্র হাতে করে শহরজুড়ে পানি খুঁজে বেড়াচ্ছে, এমনকি শিশুরাও।

কাবুল শহরে ৫০০-এর বেশি পানীয় পানির ও কোমল পানীয় প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এবং ৪০০ হেক্টরের বেশি জমিতে সবজি চাষ চলছে যা বছরে কোটি কোটি লিটার পানি খরচ করে। যদিও জলাধার নির্মাণ, কৃত্রিমভাবে পানির স্তর পূরণ এবং নতুন পাইপলাইন সংযোগের মতো প্রকল্প চালুর আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা, কিন্তু বাস্তবে এই প্রকল্পগুলো থেমে আছে তালেবান সরকারের নিয়ন্ত্রণ ও আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে। এক সময়ে জার্মান উন্নয়ন ব্যাংক কেএফডাব্লিউ এবং ভারত সরকারের সঙ্গে যৌথভাবে চালু হওয়া শাহতূত বাঁধ প্রকল্পসহ বহু উদ্যোগ বর্তমানে বন্ধ হয়ে আছে।

প্যানেল

×