ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৫ জুলাই ২০২৫, ২০ আষাঢ় ১৪৩২

হবু পুত্রবধূর ভাইরাল নাচের ভিডিও দেখে বিয়ে ভেঙ্গে দিলেন পাত্রের বাবা, ফ্যাক্টচেক কি বলছে?

প্রকাশিত: ০৭:২৯, ৪ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ১০:১৮, ৪ জুলাই ২০২৫

হবু পুত্রবধূর ভাইরাল নাচের ভিডিও দেখে বিয়ে ভেঙ্গে দিলেন পাত্রের বাবা, ফ্যাক্টচেক কি বলছে?

ছ‌বি: সংগৃহীত

সম্প্রতি ধামরাইয়ে একটি বিয়েবিচ্ছেদের খবর ঘিরে সামাজিক মাধ্যমে তীব্র আলোচনা তৈরি হয়। স্থানীয় একটি ফেসবুক পেজে প্রকাশিত হয় যে, হবু কনের একটি “অশ্লীল ও দৃষ্টিকটু” নাচের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর সেই ভিডিও দেখে পাত্রের বাবা বিয়ে বাতিল করে দেন। পেজটির ভাষ্যমতে, কনে একজন কলেজছাত্রী, যিনি কলেজে আয়োজিত এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নাচে অংশ নিয়েছিলেন। সেই ভিডিও পাত্রের এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে অনেকেই তা নিয়ে মন্তব্য করেন এবং পাত্রের বাবাকে বিষয়টি দেখান। এরপর তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে বিয়ে ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

সংবাদের সাথে একটি কথিত অডিও রেকর্ডের উল্লেখও ছিল, যেখানে কনের বাবা বিয়ে বাতিলের প্রতিবাদ করে আইনি পদক্ষেপের হুমকি দেন। উত্তরে পাত্রের বাবা তাকে বলেন, “আমাকে ফাঁসিতেও ঝুলাতে পারেন, তবু এমন যাত্রাপালার মেয়ে আমার ঘরে উঠবে না।” পাত্র নিজেও এ ঘটনায় হতাশা প্রকাশ করেন।

এই খবরটি দ্রুত ভাইরাল হয় এবং অনেকেই বিষয়টি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে নানা মন্তব্য করতে থাকেন। অনেকে ভিডিওতে থাকা মেয়েটির ছবি ছড়িয়ে দিয়ে তার পরিচয় নিয়ে জল্পনা শুরু করেন। তবে এখানেই আসে ঘটনা মোড় ঘোরানো ফ্যাক্টচেক।

খবরটি ভাইরাল হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই একই ফেসবুক পেজ একটি নতুন পোস্টে জানায়, তারা যে সংবাদের কথা বলেছে, সেটি যেই মেয়েকে নিয়ে তা অনেকেই ভুলভাবে ধামরাই সরকারি কলেজের একটি ভাইরাল ভিডিওর মেয়ের সঙ্গে মিলিয়ে নিচ্ছেন। পেজ কর্তৃপক্ষ স্পষ্টভাবে জানায়, এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। তারা জানান, ভাইরাল হওয়া ছবির মেয়েটির সঙ্গে সংবাদের মেয়েটির কোনো সম্পর্ক নেই। মেয়েটির ছবি শেয়ার করে তাকে হেনস্থা করা হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ অনভিপ্রেত এবং অনৈতিক।

ফলে দেখা যাচ্ছে, বিয়েবিচ্ছেদের কোনো একটি ঘটনা ঘটতে পারে, তবে সেটি ঘিরে যে মেয়েটিকে টার্গেট করা হচ্ছে, তিনি ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন। ভিডিও দেখে অনুমান করে যেভাবে তার ছবি শেয়ার করে সামাজিকভাবে হেনস্থা করা হয়েছে, তা মিথ্যা অপবাদ ছড়ানোর সামিল। ঘটনাটি যাচাই না করে এই ধরনের তথ্য ছড়ানো একজন নির্দোষ তরুণীর জন্য সামাজিক অপমানের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সুতরাং, “হবু পুত্রবধূর ভাইরাল নাচ দেখে বিয়ে ভেঙে দেওয়া” সংক্রান্ত সংবাদটি ভুয়া এবং ভাইরাল হওয়া মেয়েটির সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। ভুল পরিচয়ের ভিত্তিতে সামাজিক মাধ্যমে কাউকে হয়রানি করা একদিকে যেমন আইনত শাস্তিযোগ্য, অন্যদিকে তা একটি গুরুতর নৈতিক অপরাধও বটে।

ছড়িয়ে পড়া ভুয়া ভিডিও: https://youtu.be/EZvFUeVlnMU?si=d4a3RQgBvc1p6ZUp

এম.কে.

আরো পড়ুন  

×