ইরানে হামলা হলে, ইসরায়েলের আগ্রাসনের জবাব হবে আগের চেয়ে আরো বেশি শক্তিশালী ও বিধ্বংসী

ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কার্যক্রম থামাতে ব্যর্থ হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাঝেই ইসরায়েল সম্ভাব্য একক সামরিক অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম বৃহস্পতিবার (১২ জুন) জানিয়েছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম এনবিসি নিউজ, সিবিএস নিউজ এবং নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই এই হামলা হতে পারে।

ইরানের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানান, তেহরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম থেকে সরে আসবে না। তিনি বলেন, "এটি আমাদের অধিকার এবং তা আমরা বজায় রাখব।"

ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর কমান্ডার হোসেইন সালামি একই দিন রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, "ইসরায়েলের যেকোনো আগ্রাসনের জবাব হবে আগের চেয়ে আরও বেশি শক্তিশালী ও বিধ্বংসী।"

অপরদিকে, সম্ভাব্য আক্রমণের প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র বুধবার ইরাক থেকে তাদের কূটনীতিকদের সরিয়ে নিয়েছে এবং মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থানরত মার্কিন সামরিক পরিবারের সদস্যদের স্বেচ্ছায় চলে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, "তাদের (মার্কিন নাগরিকদের) সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে কারণ পরিস্থিতি বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। আমরা দেখবো কী হয়। তবে ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র রাখতে দেওয়া হবে না—এটা আমরা মেনে নেব না।"

এর আগে এপ্রিল মাসে ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার প্রস্তাব দিয়েছিল, তবে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কূটনৈতিক সমঝোতার চেষ্টা করার যুক্তিতে তাদের বিরত রাখেন।

এরপর জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষণ সংস্থা জানিয়েছে, ইরান গোপনে তিনটি স্থানে পারমাণবিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে, যেখানে ইউরেনিয়ামের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। সংস্থাটির বোর্ড অব গভর্নরসের মতে, ইরান তাদের পারমাণবিক চুক্তির দায়বদ্ধতা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে।

তবে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এসমাইল বাঘাই যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বলেন, "তাদের প্রস্তাব আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা শিগগিরই ওমানি মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে নিজেদের প্রস্তাব দেব।"

এছাড়াও, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনেয়ী বলেন, "আমেরিকার বাজে প্রস্তাবের জবাব পরিষ্কার—এই বিষয়ে তারা কিছুই করতে পারবে না।"