
ছবি: সংগৃহীত
জাপান ২০২৫ সাল থেকে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করার পাশাপাশি বৃত্তি ও ইংরেজি ভাষাভিত্তিক ডিগ্রি প্রোগ্রামের পরিমাণ বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। উচ্চশিক্ষায় বিশ্বের গন্তব্য হিসেবে নিজেদের আরও আকর্ষণীয় করে তুলতেই এই উদ্যোগ নিয়েছে দেশটি। জাপান সরকার ২০৩৩ সালের মধ্যে ৪ লাখ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীকে আকৃষ্ট করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে।
২০২৪ সালের মধ্যভাগে ইতোমধ্যেই দেশটিতে ৩ লাখ ১২ হাজার বিদেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে, যা ২০১০ সালের তুলনায় অনেক বেশি (তখন ছিল ২ লাখ ২৮ হাজার)।
চশিক্ষা, সংস্কৃতি, ক্রীড়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের এক সিনিয়র কর্মকর্তা জানান, “এটা শুধু শিক্ষার্থী আনার চেষ্টা নয়, বরং একটি বৈশ্বিক একাডেমিক কমিউনিটি গঠনের উদ্যোগ।”
জাপানে পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ বাড়ার পেছনে একাধিক কারণ রয়েছে— পশ্চিমা দেশের তুলনায় কম টিউশন ফি, বিশ্বখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সুযোগ এবং ভালো মানের একাডেমিক সুযোগ-সুবিধা।
‘গ্লোবাল ৩০’ এবং ‘টপ গ্লোবাল ইউনিভার্সিটি প্রজেক্ট’-এর মতো উদ্যোগ জাপানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে আন্তর্জাতিকীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
নতুন নীতিমালায় শিক্ষার্থী ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া আরও সরল ও সময় সাশ্রয়ী হবে। যদিও পাসপোর্ট, যোগ্যতার সনদ, আর্থিক প্রমাণ ও শিক্ষাগত ট্রান্সক্রিপ্টের মতো প্রাথমিক ডকুমেন্টসমূহ অপরিবর্তিত থাকবে, তবে প্রশাসনিক জটিলতা কমিয়ে আবেদনকারীদের জন্য আরও সহজ করা হবে প্রক্রিয়াটি।
এছাড়াও সরকার আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তির সংখ্যা বৃদ্ধি এবং ইংরেজি ভাষায় ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ বাড়াচ্ছে, যাতে করে বেশি সংখ্যক মেধাবী শিক্ষার্থী আবেদন করতে পারে।
পড়াশোনার পর কর্মসংস্থানের সুযোগ
শুধু শিক্ষার সুযোগই নয়, জাপান বিদেশি গ্র্যাজুয়েটদের চাকরি খোঁজার জন্য ১ বছরের “ডিজাইনেটেড অ্যাক্টিভিটিস ভিসা” দিচ্ছে।
বিশেষ করে তথ্যপ্রযুক্তি, রোবোটিক্স, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষা খাতে জনবল ঘাটতি পূরণে সরকার বিদেশি কর্মীদের উৎসাহিত করছে।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সাংস্কৃতিক বিনিময় ও অভ্যন্তরীণ অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ করতে হোমস্টে প্রোগ্রাম, ছাত্র সংগঠন এবং উৎসব আয়োজন করছে। পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার সময় খণ্ডকালীন কাজ করতে পারবে, যা তাদের আর্থিক সহায়তা এবং বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ দেবে।
বিশ্বের অনেক দেশেই যখন বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য সীমাবদ্ধতা বাড়ছে, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে হার্ভার্ডসহ অনেক প্রতিষ্ঠানে প্রবেশাধিকারে কঠোরতা আসছে, তখন জাপানের এই উন্মুক্ত নীতি অনেকের জন্য আকর্ষণীয় বিকল্প হয়ে উঠছে।
মুমু