
ছবিঃ সংগৃহীত
পাহেলগাঁওয়ের মর্মান্তিক জঙ্গি হামলার পর নিহত পর্যটকদের স্ত্রীদের সাহস নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিতর্কে জড়িয়েছেন বিজেপি রাজ্যসভার সাংসদ রামচন্দ্র জাংরা। ভিওয়ানির পঞ্চায়েত ভবনে আহিল্যাবাই হোলকারের ৩০০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এক সভায় তিনি বলেন, “যদি সেই মহিলারা ঝাঁসির রাণীর মতো সাহস দেখাতেন, তাহলে এতজন মারা যেতেন না।”
জাংরার বক্তব্যে স্পষ্ট যে তিনি মনে করছেন, পর্যটকদের মধ্যে আত্মরক্ষার প্রস্তুতি থাকলে তারা হামলাকারীদের প্রতিরোধ করতে পারতেন। তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী মোদী যে ধরনের প্রশিক্ষণের কথা বলছেন, যেমন ‘অগ্নিবীর’ প্রকল্পের মাধ্যমে সাহস ও আত্মবিশ্বাস তৈরি করার উদ্যোগ, তা যদি সবার জন্য থাকতো, তাহলে তিনজন জঙ্গি ২৬ জন মানুষকে হত্যা করতে পারত না।”
তিনি আরও বলেন, “যদি তারা হাতে লাঠি বা কোনো কিছু নিয়ে একসঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়তেন, তাহলে হয়তো পাঁচ-ছয়জনের মৃত্যু হতো, কিন্তু জঙ্গিরা রক্ষা পেত না। কিছু না কিছু প্রতিরোধ হতো।”
২২ এপ্রিল কাশ্মীরের বাইসরান ভ্যালিতে একদল নিরস্ত্র পর্যটকের ওপর সশস্ত্র জঙ্গিরা হঠাৎ গুলি চালালে ঘটনাস্থলেই ২৬ জন প্রাণ হারান। অনেকেই তখন পরিবারের সঙ্গে বেড়াতে গিয়েছিলেন— সেই আনন্দ মুহূর্ত এক লহমায় মৃত্যু ও আতঙ্কে পরিণত হয়।
সাংসদ জাংরার এমন মন্তব্যে অনেকেই আহত হয়েছেন। সভা শেষে সাংবাদিকদের জঙ্গিদের পরিচয় বা গ্রেফতার নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। শুধু বলেন, “হয়তো জঙ্গিরা ধরা পড়েনি, কিন্তু সেনাবাহিনী তাদের ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিয়েছে।”
এরপর তিনি আবারও বলেন, “যদি সেই নারীরা আহিল্যাবাই বা ঝাঁসির রাণীর মতো লড়তেন, তাহলে ক্ষয়ক্ষতি কম হতো।”
মানুষ এখনও সেই ভয়াবহ ঘটনার শোক কাটিয়ে উঠতে পারেনি। আর তার মধ্যেই এমন বক্তব্যে অনেকে ক্ষুব্ধ। অনেকেই বলছেন, যাদের প্রিয়জনকে হারিয়ে শোকস্তব্ধ, তাদের পাশে দাঁড়ানোর বদলে এই ধরনের কথা বলা একেবারেই অমানবিক।
স্মরণ করা যেতে পারে, সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশের মন্ত্রী বিজয় শাহ এক নারী সেনা কর্মকর্তাকে নিয়ে মন্তব্য করে বিতর্কে পড়েন এবং পরে ক্ষমা চাইতে হয়।
মারিয়া