ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৫ মে ২০২৫, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

নারিকেল খাওয়ার এত উপকারিতা! জানলে আর বাদ দেবেন না

প্রকাশিত: ১৭:১০, ২৫ মে ২০২৫

নারিকেল খাওয়ার এত উপকারিতা! জানলে আর বাদ দেবেন না

ছবি: সংগৃহীত

শুকনো নারকেলের স্বাস্থ্যগুণ ও সতর্কতা

নারিকেল ফলটির প্রতিটি অংশই কাজে আসে—চাই পানির ঘাটতি মেটাতে নারিকেলের পানি, চুল ও ত্বকের পরিচর্যায় তেল, রান্নায় ব্যবহার করতে খোসা ও শাঁস, আবার খোলস দিয়ে তৈরি হয় ঘর সাজানোর জিনিস। তবে জানেন কি, শুকনো নারিকেলও অত্যন্ত পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী?

শুকনো নারিকেলের উপকারিতা কী কী?

ভারতীয় পার্সোনাল ট্রেনার ও ফাংশনাল নিউট্রিশনিস্ট দীপিকা শর্মা জানান, শুকনো নারিকেল স্বাস্থ্যকর ফ্যাটের এক দারুণ উৎস—বিশেষ করে মিডিয়াম চেইন ট্রাইগ্লিসারাইডস (MCTs) যেমন লরিক অ্যাসিড, আঁশ বা ফাইবার যা হজমে সহায়তা করে এবং পেট ভরাট রাখে। তাছাড়া এতে আছে কপার, সেলেনিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম ও জিঙ্ক-এর মতো খনিজ এবং বহু অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা প্রদাহ ও বয়সজনিত অবক্ষয় রোধে সহায়ক।

১. মস্তিষ্ক ও স্নায়ুর কার্যকারিতা:
এমসিটিগুলো দ্রুত কেটোনে পরিণত হয়, যা মস্তিষ্কের জন্য বিকল্প জ্বালানি হিসেবে কাজ করে। লরিক অ্যাসিড হালকা জীবাণুনাশক গুণও রাখে, যা স্নায়বিক প্রদাহ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। কেটো ডায়েট বা মানসিক স্বচ্ছতা বাড়াতে চাইলে এটি উপকারী।

২. হজম ও বিপাকক্রিয়া:
শুকনো নারকেলের আঁশ হজমে সাহায্য করে এবং রক্তে শর্করার ভারসাম্য রক্ষা করে। এমসিটি চর্বি পুড়িয়ে শক্তি উৎপন্ন করে। পেট পরিষ্কার না হলে বা হঠাৎ করে অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা থাকলে অল্প করে খেলে উপকার মিলতে পারে।

৩. হরমোনের ভারসাম্য:
লরিক অ্যাসিড ভালো কোলেস্টেরল (HDL) বাড়াতে পারে। এছাড়া শুকনো নারকেলের ফ্যাট স্টেরয়েড হরমোন (যেমন টেস্টোস্টেরন, কর্টিসল, ইস্ট্রোজেন) উৎপাদনে সহায়তা করে। পিসিওডি, অনিয়মিত মাসিক কিংবা পুরুষদের দুর্বলতা থাকলে অল্প পরিমাণে খাওয়া উপকারী।

৪. ত্বক ও রোগপ্রতিরোধ:
শুকনো নারিকলের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও স্বাস্থ্যকর চর্বি ত্বককে ভিতর থেকে পুষ্টি দেয়। লরিক অ্যাসিড রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং খারাপ ব্যাকটেরিয়া ও ক্যান্ডিডা দূর করতে সহায়ক।

কোন কোন সমস্যা হতে পারে?
দীপিকা শর্মা জানান, শুকনো নারিকেল ক্যালরিতে অত্যন্ত সমৃদ্ধ। মাত্র ৮–১০ টুকরোতেই ২৫০–৩০০ ক্যালরি হয়ে যায়। যারা সক্রিয় জীবনযাপন করেন না বা ওজন/লিভারের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্য এটি বিপজ্জনক হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, “যদিও এমসিটি ভিন্নভাবে হজম হয়, তবু অতিরিক্ত স্যাচুরেটেড ফ্যাট কিছু মানুষের ক্ষেত্রে খারাপ কোলেস্টেরল (LDL) বাড়াতে পারে। এটি হজমে ভারী, তাই যাদের হজম দুর্বল, পিত্ত কম, কিংবা অ্যাসিড কম, তাদের বমি বমি ভাব বা পেট ফেঁপে যেতে পারে।”

আয়ুর্বেদ অনুসারে, অতিরিক্ত খাওয়া বা ভেজা ঋতুতে খেলে দেহে কফের আধিক্য তৈরি হতে পারে, ফলে শ্লেষ্মা, অলসতা ও ক্লান্তি দেখা দিতে পারে।

কীভাবে খাদ্যতালিকায় যুক্ত করবেন?
শর্মা জানান, শুকনো নারিকেল খাওয়ার সবচেয়ে ভালো সময় হলো সকাল বা মধ্যসকাল। সেই সঙ্গে জিরা বা মৌরির মতো ভেষজ চা খাওয়াই ভালো। তিনি রাতে এটি না খাওয়ার পরামর্শ দেন, কারণ এটি ভারী ও তৈলাক্ত হওয়ায় হজম ও ঘুমে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।

দৈনিক ৪–৬টি ছোট টুকরো অধিকাংশ মানুষের জন্য নিরাপদ। সক্রিয় থাকলে বা উপবাস/ভ্রমণে একবেলার খাবার মিস করলে ৮–১০টি খাওয়া যায়।

 

সূত্র: https://indianexpress.com/article/lifestyle/food-wine/why-you-should-add-pieces-of-dry-coconut-to-your-diet-9994249/

এএইচএ

×