ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৪ মে ২০২৫, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ভলভো সিইওর কড়া বার্তা: আমদানি শুল্ক দেবে ক্রেতারা, কোম্পানি নয়

প্রকাশিত: ১২:২২, ২৪ মে ২০২৫

ভলভো সিইওর কড়া বার্তা: আমদানি শুল্ক দেবে ক্রেতারা, কোম্পানি নয়

যুক্তরাষ্ট্রে ভলভোর কিছু মডেলের উৎপাদন হলেও, বেশিরভাগ গাড়ি এখনও আমদানি করতে হয় ইউরোপ ও চীন থেকে। এর মধ্যে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমদানি নীতির কড়া শর্ত নতুন করে উদ্বেগ বাড়িয়েছে গাড়ি নির্মাতাদের মধ্যে। ট্রাম্প প্রশাসন ইতিমধ্যে আমদানি করা গাড়ির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে, আর ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে আমদানি হওয়া সব পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছে।

এই অস্থির ও অনিশ্চিত শুল্ক পরিবেশে বড় ধরনের চাপের মুখে পড়েছে বৈশ্বিক গাড়ি শিল্প। বেশিরভাগ নির্মাতা কোম্পানি একযোগে দুটি কৌশল গ্রহণ করছে—একদিকে দাম বাড়ানো, অন্যদিকে কিছুটা খরচ নিজেরা বহন করা। তবে সুইডিশ গাড়ি নির্মাতা ভলভোর মতে, কোম্পানির নয় বরং এই বাড়তি শুল্কের চাপ বহন করতে হবে সরাসরি গ্রাহকদের।

রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ভলভো সিইও হাকান স্যামুয়েলসন বলেন, আমদানি শুল্কের কারণে কোম্পানির নতুন বৈদ্যুতিক গাড়ি EX30 যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বিক্রির সম্ভাবনা হুমকির মুখে পড়েছে। এই মডেলটি প্রথমে চীনে, পরে বেলজিয়ামে উৎপাদন শুরু হয়। ২০২৩ সালে উন্মোচিত এই বৈদ্যুতিক ক্রসওভারের প্রাথমিক মূল্য ধরা হয়েছিল ৩৪,৯৫০ ডলার। তবে ৫০ শতাংশ শুল্ক বসলে বাজারে প্রতিযোগিতা ধরে রাখা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে বলে মত দেন স্যামুয়েলসন।

শুধু ভলভো নয়, অনেক গাড়ি নির্মাতা কোম্পানিই শুল্ক বৃদ্ধির চাপ সরাসরি গ্রাহকদের ওপর চাপিয়ে দিচ্ছে। অ্যাস্টন মার্টিন ইতোমধ্যে তাদের গাড়ির দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। একসময় তুলনামূলক সাশ্রয়ী মূল্যের ফোর্ড ম্যাভেরিক এখন শুরু হচ্ছে ৩০ হাজার ডলার থেকে। সাবারু তাদের সব মডেলের দাম বাড়িয়েছে চলতি সপ্তাহেই। জেনারেল মোটরস জানিয়েছে, নতুন শুল্কের কারণে প্রতিষ্ঠানটির খরচ বাড়বে ৪ থেকে ৫ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত, তবে তারা এখনই দাম বাড়ানোর কথা বলছে না।

গাড়ি শিল্প সংশ্লিষ্টরা বারবার সতর্ক করছেন যে, আমদানি শুল্কের এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে গাড়ির দাম বাড়বে, বিক্রি কমবে এবং গাড়ি মেরামতের খরচও বেড়ে যাবে। টয়োটা মোটর নর্থ আমেরিকার প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা মার্ক টেমপ্লিন বলেন, “গাড়ির খুচরা যন্ত্রাংশে শুল্ক বাড়ার মানে হলো, শেষ পর্যন্ত গ্রাহকের ঘাড়েই অতিরিক্ত ব্যয়ের বোঝা চাপবে।”

যদি বর্তমান পরিস্থিতিতে কোনও নীতিগত পরিবর্তন না আসে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের গাড়ি বাজারে অস্থিরতা আরও বাড়বে, এবং গ্রাহকদের পকেটই হয়ে উঠবে এই বাণিজ্য যুদ্ধের প্রধান বলির পাঁঠা। শুল্কের এই ভার কতটা বহন করবে উৎপাদনকারী, আর কতটা গুণতে হবে ভোক্তাকে,এই প্রশ্নের উত্তর আপাতত সময়ই দেবে।

 

 


সূত্র:https://tinyurl.com/yhbxakvm

আফরোজা

×