ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৪ মে ২০২৫, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

অ্যাপলের পর স্যামসাংকেও ট্রাম্পের ২৫% শুল্কের হুমকি

বাড়তে পারে শুল্কের পরিধি

প্রকাশিত: ১২:১৫, ২৪ মে ২০২৫

অ্যাপলের পর স্যামসাংকেও ট্রাম্পের ২৫% শুল্কের হুমকি

ছবিঃ সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবার অ্যাপলের পাশাপাশি দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাংকেও যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন না সরালে ২৫% আমদানি শুল্কের হুমকি দিলেন। হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, “শুধু অ্যাপল নয়, স্যামসাংসহ যারা এসব পণ্য তৈরি করে, তাদের সবার ওপরই শুল্ক প্রযোজ্য হবে। না হলে এটা ন্যায্য হবে না।” তিনি জানান, জুন মাসের শেষ নাগাদ এই শুল্ক কার্যকর করার প্রস্তুতি নেওয়া হবে।

এর আগে শুক্রবার সকালে ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যমে জানান, অ্যাপল যদি বিদেশ থেকে উৎপাদন না সরিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে না আনে, তাহলে তাদের পণ্যের ওপর ২৫% শুল্ক আরোপ করা হবে। কয়েকদিন আগে ট্রাম্পের সঙ্গে অ্যাপল সিইও টিম কুকের হোয়াইট হাউসে একটি বৈঠকের পর এই বার্তা এল।

ট্রাম্প বলেন, “সে (টিম কুক) বলেছে সে ভারত যাচ্ছে প্ল্যান্ট বানাতে। আমি বললাম, ঠিক আছে, তুমি ভারত যেও, কিন্তু এখান (যুক্তরাষ্ট্রে) বিক্রি করলে শুল্ক দিতে হবে।”

এই ঘোষণার পর নিউ ইয়র্কের শেয়ারবাজারে অ্যাপলের শেয়ারের দাম ৩% পড়ে যায়। একই দিনে ট্রাম্প ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওপরও ৫০% শুল্ক আরোপের হুমকি দেন, যা পুরো বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

অ্যাপল ও স্যামসাংয়ের মতো কোম্পানিগুলোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন সরানো বিশাল চ্যালেঞ্জ, কারণ এসব কোম্পানির সরবরাহ ব্যবস্থা মূলত এশিয়াভিত্তিক। যুক্তরাষ্ট্রে এখনো সেই ধরনের প্রযুক্তি সরবরাহকারী, দক্ষ শ্রমিক ও অবকাঠামোর ঘাটতি রয়েছে।

অ্যাপল এই ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেনি। স্যামসাং ও গুগলের মূল সংস্থা অ্যালফাবেটও মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। আগে থেকেই অ্যাপল চীনে উৎপাদিত পণ্যের ওপর শুল্কের প্রভাব কমাতে ভারতের কারখানায় যুক্তরাষ্ট্রগামী আইফোন উৎপাদনের পরিকল্পনা নেয়। তবে ট্রাম্প এতে অসন্তুষ্ট।

গত সপ্তাহে মধ্যপ্রাচ্য সফরে ট্রাম্প বলেন, “আমি কুককে বলেছি, আমি চাই না তুমি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ভারতেই সব কিছু বানাও।” অ্যাপল বলেছে, আগামী চার বছরে তারা যুক্তরাষ্ট্রে ৫০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে, যার মধ্যে রয়েছে হিউস্টনে নতুন সার্ভার প্ল্যান্ট, মিশিগানে সরবরাহকারী প্রশিক্ষণ একাডেমি এবং স্থানীয় সরবরাহকারীদের সঙ্গে কাজ।

কিন্তু এই বিনিয়োগ এখনো ট্রাম্পের প্রত্যাশিত পূর্ণাঙ্গ যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক উৎপাদনের ধারেকাছেও নয়। বিশ্লেষকদের মতে, এই শুল্ক অ্যাপলের লাভের মার্জিন ২০২৬ সালে ৩ থেকে ৩.৫ শতাংশ পর্যন্ত কমাতে পারে। তবে যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন খরচ এত বেশি যে তা শুল্ক পরিশোধের চেয়েও বেশি ব্যয়বহুল হবে। এমনকি সম্পূর্ণভাবে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি একটি আইফোন গ্রাহকদের জন্য কয়েক হাজার ডলার ব্যয়বহুল হয়ে উঠতে পারে।

বর্তমানে স্মার্টফোন, কম্পিউটারসহ বেশ কিছু ইলেকট্রনিকস পণ্য ‘পারস্পরিক শুল্ক’ থেকে অব্যাহতি পেয়েছে, কিন্তু সেই অব্যাহতি দীর্ঘস্থায়ী নাও হতে পারে। প্রশাসন এখন সেমিকন্ডাক্টরের ওপর আলাদা শুল্ক আরোপের বিষয়টি বিবেচনা করছে, যা প্রযুক্তি পণ্যের খাতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।


সূত্রঃ এনডিটিভি ওয়ার্ল্ড 

নোভা

×