ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২২ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

কুরস্ক সফর করলেন পুতিন

রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ছয় ইউক্রেনীয় সেনা নিহত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ২২:১১, ২১ মে ২০২৫

রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ছয় ইউক্রেনীয় সেনা নিহত

স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর সঙ্গে কুরস্ক সফর করেন পুতিন

রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ছয় ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও কমপক্ষে ১০ জন। বুধবার ইউক্রেনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সুমির সীমান্ত এলাকায় একটি সামরিক স্থাপনায় প্রশিক্ষণ চলাকালে একটি রুশ ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানে। বুধবার ভোরে হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে ইউক্রেনের ন্যাশনাল গার্ড জানায়, একটি ফায়ারিং রেঞ্জে এক সেনা ইউনিট যখন মহড়া করছিল তখন এই হামলা চালানো হয়।

এই হামলার পর একজন কমান্ডারকে বরখাস্ত করা হয়েছে এবং একটি আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু করা হয়েছে। এদিকে রুশ বাহিনী ইউক্রেনীয় সেনাদের হটিয়ে দেওয়ার পর প্রথমবারের মতো কুরস্ক অঞ্চলে সফর করলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন। বুধবারের এই সফরে কুরস্ক অঞ্চলের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছেন পুতিন এবং পরিদর্শন করেছেন কুরস্ক-২ পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। ক্রেমলিন এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে। খবর বিবিসি ও আরটির।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, তারা সুমি অঞ্চলে একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। সেই সঙ্গে মন্ত্রণালয় একটি ভিডিও প্রকাশ করে যেখানে একটি প্রশিক্ষণ শিবিরে ইস্কান্দার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর দৃশ্য দেখানো হয়েছে। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রকাশ করা ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েক ডজন সেনা জঙ্গলের কাছাকাছি একটি পথ ধরে হেঁটে যাচ্ছে এবং তারপরে একটি বিস্ফোরণ ঘটছে এবং এরপর ধোঁয়ার কু-লী উঠছে।

বিবিসির অনুসন্ধানে দেখা গেছে, প্রশিক্ষণ শিবিরটি সুমি অঞ্চলের উত্তরে রাশিয়ার সীমান্তের কিছুটা দক্ষিণে অবস্থিত। এটাকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। ইউক্রেনের সুমি অঞ্চল থেকে কিয়েভের সেনারা গত বছর রাশিয়ার কুরস্কে বড় ধরনের আন্তঃসীমান্ত আক্রমণ শুরু করে এবং কুরস্কের একটা বড় অংশ দখল করে নেয়। ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনী বলছে, এই হামলার লক্ষ্য সুমিকে রক্ষা করার জন্য একটি বাফার জোন তৈরি করা। তবে এতে তাদের সামরিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মস্কো তাদের অঞ্চল পুনরুদ্ধার করার পর সুমিতে তীব্র আক্রমণ শুরু করে যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে দেখা গেছে, কুরস্ক সফরে পুতিনের সঙ্গে ছিলেন ক্রেমলিনের প্রথম উপপ্রধান সের্গেই কিরিয়েঙ্কো। স্থানীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনায় ছিলেন কুরস্কের ভারপ্রাপ্ত গভর্নর আলেকজান্ডার খিনস্টেইনও।

চলতি বছরের এপ্রিলের শেষ দিকে রাশিয়া দাবি করে, তারা কুরস্ক অঞ্চল থেকে ইউক্রেনীয় বাহিনীকে পুরোপুরি হটিয়ে দিয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর রাশিয়ার ভূখ-ে এটিই ছিল সবচেয়ে বড় সামরিক অনুপ্রবেশ। ২০২২ সালে রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের দুই বছরের মাথায় গত ৬ আগস্ট ইউক্রেন তাদের সবচেয়ে সাহসী অভিযানে রুশ সীমান্ত ভেদ করে কুরস্ক অঞ্চলে ঢুকে পড়ে।

এই অভিযানে তারা ব্যবহার করেছিল পশ্চিমা মিত্রদের সরবরাহকৃত ভারি অস্ত্র ও ড্রোনের ঝাঁক। সর্বোচ্চ সময়ে ইউক্রেনীয় বাহিনী কুরস্ক অঞ্চলের প্রায় ১ হাজার ৪০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছিল বলে দাবি করা হয়। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়াকে অবাস্তব শর্ত দিয়ে যুদ্ধবিরতির আলোচনা বিলম্বিত করার অভিযোগ করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বার্তায় তিনি বলেন, যদি রাশিয়া অবাস্তব শর্ত আরোপ করে এবং অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করে, তাহলে কঠিন পরিণতি হওয়া উচিত।

×