
ছবিঃ সংগৃহীত
ভারতের জনপ্রিয় ভ্রমণ ব্লগার ও ইউটিউবার জ্যোতি মালহোত্রাকে পাকিস্তানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির সন্দেহে গ্রেপ্তার করেছে হরিয়ানা পুলিশ। তিনি ‘ট্রাভেল উইথ জেও’ (Travel with Jeo) নামে একটি ইউটিউব চ্যানেল চালাতেন, যেখানে তার সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা ৩.৭৭ লক্ষের বেশি। ইনস্টাগ্রামে তাঁর ফলোয়ারের সংখ্যা ১.৩৩ লক্ষ।
পুলিশ জানায়, হরিয়ানার নিউ আগরসাইন এক্সটেনশন এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে "অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট" এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির প্রাসঙ্গিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
তদন্তকারী সংস্থার দাবি, জ্যোতি মালহোত্রা পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন এবং জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত সংবেদনশীল তথ্য আদান-প্রদান করতেন। হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম ও স্ন্যাপচ্যাটের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে তিনি পাকিস্তানি হ্যান্ডলারদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সন্দেহ এড়াতে তিনি তাঁদের ফোন নম্বর ছদ্ম নামে, যেমন ‘জাট রান্ধোয়া’ নামে সেভ করতেন।
তাঁর ইউটিউব চ্যানেলে “ইন্ডিয়ান গার্ল ইন পাকিস্তান”, “ইন্ডিয়ান গার্ল এক্সপ্লোরিং লাহোর”, “ইন্ডিয়ান গার্ল অ্যাট কাতাস রাজ টেম্পল” এবং “ইন্ডিয়ান গার্ল রাইডস লাক্সারি বাস ইন পাকিস্তান”-এর মতো ভিডিও রয়েছে, যা তার পাকিস্তান সফরের প্রমাণ হিসেবে দেখানো হচ্ছে।
পুলিশের এফআইআরে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২৩ সালে মালহোত্রা একটি প্রতিনিধিদলের অংশ হিসেবে প্রথমবার পাকিস্তান সফরে যান। সেখানে তাঁর পরিচয় হয় আহসানুর রহিম ওরফে দানিশ নামে একজন ব্যক্তির সঙ্গে। সফর শেষে ভারতে ফেরার পরও তিনি হোয়াটসঅ্যাপ ও অন্যান্য অ্যাপে ওই ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখেন। পরে দানিশের পরামর্শেই তিনি দ্বিতীয়বার পাকিস্তান সফর করেন। সেই সফরে আলী হাসান নামে একজনের মাধ্যমে তাঁর পরিচয় হয় পাকিস্তানি গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা সংস্থার সদস্যদের সঙ্গে। অভিযোগ, এরপর থেকেই তিনি তাঁদের কাছে ভারতের সংবেদনশীল তথ্য পাঠাতে শুরু করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, দীর্ঘদিন নজরদারির পর তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মালহোত্রা নিজেই স্বীকার করেছেন যে, তিনি তাঁর পাকিস্তানি হ্যান্ডলারদের নম্বর ছদ্ম নামে সেভ করতেন এবং সোশ্যাল মিডিয়া কনটেন্টের মাধ্যমে পাকিস্তানের ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরার কাজ করতেন।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারতের নিরাপত্তা সংস্থাগুলো সোশ্যাল মিডিয়াভিত্তিক ভ্রমণ ব্লগার ও ইনফ্লুয়েন্সারদের কার্যকলাপের ওপর কঠোর নজরদারি শুরু করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বর্তমানে পুলিশ মালহোত্রাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে এবং তাঁর সঙ্গে অন্য কেউ এই চক্রে জড়িত কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
মারিয়া