
ছবি: সংগৃহীত
অবরুদ্ধ গাজায় যা চলছে, তার অনেকটাই জনসম্মুখে আসছে না। যা আসছে, তা খুবই সীমিত। তবে গাজায় চলমান ভয়াবহ নিষ্ঠুরতার প্রত্যক্ষ সাক্ষী হচ্ছেন খোদ ইসরাইলি দখলদার সেনারাই। হামাসকে নির্মূল করার অজুহাতে তারা কখনো নির্বিচারে হত্যা করছে, আবার কখনো নিজেরাই ফাঁদে পড়ে জীবন হারাচ্ছে। হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের এই খেলায় ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন অনেক সেনা সদস্য।
গাজায় যুদ্ধ করতে চান না এমন সাধারণ ইসরাইলি সেনারা জোরপূর্বক যুদ্ধে পাঠানো হচ্ছে। কেউ অস্বীকৃতি জানালেই তাদের জীবনে নেমে আসছে ঘন অন্ধকার। নিজেদের সেনাদের উপরই এখন রীতিমতো অত্যাচার শুরু করেছে দখলদার ইসরাইল।
টাইমস অব ইসরাইল জানায়, ৯৩১ নাহাল ইনফ্যান্ট্রি ব্রিগেডের চার সেনা সদস্য গাজায় যুদ্ধ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। মূলত তারা সবাই গভীর মানসিক অবসাদে ভুগছেন বলেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু ইসরাইলি সেনা বাহিনী এই অবস্থা গুরুত্ব না দিয়ে মানসিক চিকিৎসার বদলে সরাসরি সামরিক কারাগারে পাঠাচ্ছে তাদের।
প্রথমে এই তথ্য গোপন করলেও পরে এক বিবৃতিতে আইডিএফ (ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী) স্বীকার করে, যুদ্ধে যাওয়ার শারীরিক সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও কিছু সেনা সদস্য যুদ্ধ করতে রাজি হচ্ছেন না। বাহিনীর শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তিনজনকে ৭ থেকে ১২ দিনের জন্য সামরিক কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকি একজনের বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি আইডিএফ।
ইসরাইলের পাবলিক ব্রডকাস্টার 'কান' জানায়, যুদ্ধক্ষেত্রে বহু সহকর্মীর মৃত্যু, বিভীষিকাময় দৃশ্য এবং ভয়াবহ সব অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হচ্ছেন ইসরাইলি সেনারা। এসব ঘটনায় তারা ভীত ও মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছেন। এর ফলে সেনাবাহিনীর ভেতরে মানসিক চাপ ও যুদ্ধ-সম্পর্কিত ক্লান্তি আরও প্রকট হয়ে উঠেছে। কিন্তু এর সমাধান না করে, বাহিনী বরং শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করছে যাতে বাহ্যিকভাবে কমান্ডের নিয়ন্ত্রণ বজায় থাকে।
এদিকে যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই ইসরাইলি সেনা সদস্যদের মাঝে মানসিক স্বাস্থ্য সংকট বেড়েই চলেছে। শুধু গত কয়েক সপ্তাহেই চারজন সেনা আত্মহত্যা করেছেন বলে জানিয়েছে দেশটির গণমাধ্যমগুলো। গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এ নিয়ে ইসরাইলি সেনাদের আত্মহত্যার মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৯ জনে।
অন্যদিকে গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে স্থল অভিযান এবং সীমান্তে চলমান সামরিক কার্যক্রমে ইসরাইলি বাহিনীর ৪৫৯ জন সেনা নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।
শেখ ফরিদ