
ছবি: সংগৃহীত
নিজের জীবন ও পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে চরম উদ্বেগ আর হতাশা থেকেই রাজপরিবারে ফিরে যেতে চান ব্রিটিশ যুবরাজ হ্যারি। সম্প্রতি বিবিসিকে দেওয়া এক খোলামেলা সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, রাজপরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করতে আগ্রহী তিনি। প্রয়োজনে বাবা, ভাইসহ সবাইকে ক্ষমা করতেও প্রস্তুত, বলেছেন হ্যারি।
২০১৮ সালে মার্কিন অভিনেত্রী মেগান মার্কেলকে বিয়ে করার পর থেকেই রাজপরিবারের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয় প্রিন্স হ্যারির। এরপর ২০২০ সালে তিনি রাজকীয় দায়িত্ব ছাড়েন এবং স্ত্রীসহ যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। এই সিদ্ধান্তের ফলেই হারাতে হয় ব্রিটিশ সরকারের পক্ষ থেকে পাওয়া বিশেষ নিরাপত্তা সুবিধা।
বর্তমানে ক্যালিফোর্নিয়ায় স্ত্রী মেগান এবং দুই সন্তানকে নিয়ে বসবাস করছেন সাসেক্সের ডিউক। কিন্তু সেখানেও নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা কাটেনি। বারবার পাপারাজিদের অযাচিত আগ্রাসনের মুখে পড়তে হচ্ছে পরিবারকে। এমনকি আল-কায়েদার মতো জঙ্গি গোষ্ঠী থেকে প্রাণনাশের হুমকিও পেয়েছেন বলে জানান হ্যারি।
এই বাস্তবতায় নিজেকে এবং পরিবারের সদস্যদের ব্যাপক নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে হচ্ছে বলে জানান তিনি। তার ভাষায়, “আমার স্ত্রী ও সন্তানদের যুক্তরাজ্যে নিয়ে আসা এখন অসম্ভব, কারণ তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারছি না। অথচ চাই, তারা যেন আমার জন্মভূমিকে জানে, চিনে। দেশকে খুব মিস করি।”
সাক্ষাৎকারে হ্যারি আরও বলেন, “২০১৬ সালের পর থেকে অনেক কিছুর জন্য বাবা, সৎমা, ভাই এবং মিডিয়াকে ক্ষমা করতে পারি। কিন্তু ২০২০ সালের ঘটনাগুলো আমাকে এখনো প্রতিদিন ভোগ করতে হয়। তাই সে সময়ের জন্য কাউকে ক্ষমা করতে পারি না।”
প্রিন্স হ্যারি সরকারি নিরাপত্তা পুনর্বহালের দাবিতে যুক্তরাজ্যের সরকারের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইও চালিয়েছেন। প্রথমে মামলাটি খারিজ হলে তিনি আপিল করেন, কিন্তু সেখানেও মিলেছে একই ফল। এ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে হ্যারি বলেন, “এখন আর আইনি লড়াই নয়, শুধু পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক করতে চাই। জীবন খুবই মূল্যবান। জানি না বাবা আর কতদিন বাঁচবেন, কিন্তু তিনি এখন আমার সঙ্গে কথা বলেন না।”
১৯৯৭ সালে তার মা প্রিন্সেস ডায়ানা পাপারাজিদের ধাওয়া খেয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান। সেই দুঃসহ স্মৃতি আজও তাড়া করে বেড়ায় হ্যারিকে। তিনি শঙ্কা করছেন, ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি যেন না হয়। এমন বাস্তবতায় রাজপরিবারে ফেরা এখন শুধু চাওয়া নয়, নিজের এবং পরিবারের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজন বলেই মনে করছেন তিনি।
ভিডিও দেখুন: https://www.youtube.com/watch?v=q-stk21mx5o
এম.কে.