
ছবি: সংগৃহীত
পাকিস্তানের কারাবন্দী সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং দেশটির অন্যতম জনপ্রিয় রাজনৈতিক নেতা ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে এবার মাঠে নামতে চলেছেন তাঁর দুই ছেলে—সুলেমান খান ও কাসিম খান। কথায় আছে, “পুত্রই বাবার সবচেয়ে বড় শক্তি”—আর এই কথাটিকেই যেন সত্য করে তুলতে প্রস্তুত হচ্ছেন তাঁরা।
২০২৩ সালের আগস্ট থেকে কারাগারে রয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও ক্রিকেটার ইমরান খান। তাকে মুক্ত করার লক্ষ্যে তার দল পাকিস্তান তেহরিকে ইনসাফ (পিটিআই) আগামী ৫ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে আন্দোলনে নামার ঘোষণা দিয়েছে। জানা গেছে, এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতেও দেখা যেতে পারে তাঁর দুই ছেলেকে, যারা বর্তমানে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন।
জেমিমা গোল্ডস্মিথের উদ্বেগ ও অভিযোগ
ইমরান খানের সাবেক স্ত্রী ও দুই ছেলের মা জেমিমা গোল্ডস্মিথ অভিযোগ করেছেন, পাকিস্তান সরকার তাঁর ছেলেদের বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করতে দিচ্ছে না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পাকিস্তান সরকারের বিরুদ্ধে বারবার উচ্চকণ্ঠ হয়েছেন তিনি। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, তার ছেলেরা দেশে ফিরলে সরকার তাদেরও গ্রেপ্তার করতে পারে।
এমন উদ্বেগ যে অমূলক নয়, তা স্পষ্ট হয়েছে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফের উপদেষ্টার বক্তব্যে। তিনি ইমরানের ছেলেদের বিক্ষোভে অংশ না নিতে সরাসরি সতর্ক করেছেন।
পিটিআইয়ের ঘোষণা ও সরকারের অবস্থান
পিটিআই বলছে, ইমরানের দুই ছেলে বাবার মুক্তির জন্য আন্দোলনে অংশ নেবেন। তবে দলটি পরিষ্কার করেছে, তাদের কোনো রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা নেই। কেবল একজন পুত্র হিসেবে তাঁরা বাবার পাশে দাঁড়াতে চান।
এদিকে, পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তালাল চৌধুরী জানিয়েছেন, ছেলেরা দেশে ফিরলে সেটিকে সরকার কোনো রাজনৈতিক গুরুত্ব দিচ্ছে না। তবে কেউ আইন ভঙ্গ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
৯০ দিনের কর্মসূচি ও নিরাপত্তা প্রস্তুতি
খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আলী আমিন গান্দাপুর জানিয়েছেন, ৫ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ ৯০ দিনব্যাপী কর্মসূচির অংশ। এ কর্মসূচির লক্ষ্য ইমরান খানের মুক্তি নিশ্চিত করা।
এমন প্রেক্ষাপটে সরকার নতুন একটি জাতীয় আধাসামরিক বাহিনী গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে, যার দায়িত্ব থাকবে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা, দাঙ্গা দমন ও সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রম পরিচালনায়। তবে বিরোধী দল ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো আশঙ্কা করছে, এই বাহিনীকে নাগরিক স্বাধীনতা দমনে ব্যবহার করা হতে পারে।
আন্তর্জাতিক উদ্বেগ
পাকিস্তানে বর্তমান সরকারের অধীনে মৌলিক অধিকার ও নাগরিক স্বাধীনতা হুমকির মুখে—এমন উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসেও। বিশেষ করে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণের অভিযোগে আন্তর্জাতিক মহলে দেশটির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে।
শেখ ফরিদ