ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৩ জুলাই ২০২৫, ১৯ আষাঢ় ১৪৩২

গাজায় স্থায়ীভাবে যুদ্ধ বন্ধের প্রতিশ্রুতি ট্রাম্পের

যুদ্ধবিরতির শর্তে রাজি ইসরাইল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ২১:১৭, ২ জুলাই ২০২৫

যুদ্ধবিরতির শর্তে রাজি ইসরাইল

ডোনাল্ড ট্রাম্প

ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে ৬০ দিনের অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনীয় শর্তে রাজি হয়েছে দখলদার ইসরাইল। বুধবার ভোরে এ তথ্য জানান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি চলাকালীন সব পক্ষের সঙ্গে কাজ করে স্থায়ীভাবে যুদ্ধ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। সামাজিকমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখেছেন, ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি চূড়ান্ত করতে ইসরাইল প্রয়োজনীয় শর্তে রাজি হয়েছে। এ সময়ে যুদ্ধ স্থায়ীভাবে বন্ধে আমরা সব পক্ষের সঙ্গে কাজ করব। খবর আলজাজিরার।
তিনি লিখেছেন, কাতারি ও মিসরীয়রা শান্তি আনয়নে অনেক কষ্ট করেছে। তারা এটির চূড়ান্ত প্রস্তাব দেবে। আমি আশা করি, মধ্যপ্রাচ্যের ভালোর জন্য হামাস এ চুক্তি গ্রহণ করবে। কারণ এটি ভালো নয়, আরও খারাপ হবে।  গত কয়েক মাস ধরেই দখলদার ইসরাইলের সঙ্গে হামাসের ৬০ দিনের অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির আলোচনা চলছে। যেটির প্রস্তাব দিয়েছিলেন ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকোফ। ট্রাম্প সম্ভবত ওই প্রস্তাবটিকেই ইঙ্গিত করেছেন বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরাইল।

তবে এ প্রস্তাবের আলোচনা থমকে ছিল দীর্ঘদিন। কারণ দখলদার ইসরাইল এই অস্থায়ী যুদ্ধবিরতির পর গাজায় আবারও হামলা চালানোর অধিকার রাখতে চায়। অপরদিকে হামাস জানিয়েছে, যতক্ষণ তাদের স্থায়ী যুদ্ধবিরতির নিশ্চয়তা না দেওয়া হচ্ছে ততক্ষণ তারা অস্থায়ী যুদ্ধবিরতিতে রাজি হবে না। ইসরাইলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরাইল জানিয়েছে, ট্রাম্প স্থায়ীভাবে যুদ্ধ বন্ধের কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সম্ভবত দুই পক্ষকেই সন্তুষ্ট রাখার চেষ্টা করছেন। হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তির জন্য যেসব বিষয়ে এখনো মতপার্থক্য রয়েছে সেগুলো দূর করার চেষ্টা করছে আরব মধ্যস্থতাকারী দেশগুলো। এর আগে ট্রাম্প জানান, তিনি গাজায় যুদ্ধবিরতি চান।

এরপর হোয়াইট হাউসও জানায়, ট্রাম্প গাজায় আর হত্যাযজ্ঞ দেখতে চান না। এ কারণে যুদ্ধ বন্ধকে প্রাধান্য দিচ্ছেন তারা। আগামী সোমবার দখলদার ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের বৈঠক হবে। এর আগেই যুদ্ধ বন্ধের জন্য ইসরাইলকে চাপ দিচ্ছে মার্কিনীরা। এদিকে ফিলিস্তিনের অধিকৃত ভূখ-ে মানবাধিকার পরিস্থিতি বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ নতুন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। এতে তিনি দেখিয়েছেন ফিলিস্তিনিদের বাস্তুচ্যুত এবং গাজায় গণহত্যা চালাতে কোন কোন আন্তর্জাতিক কোম্পানি সহায়তা করছে।

এর সঙ্গে জড়িত সেগুলোর তালিকা দিয়েছেন তিনি। ফ্রান্সেসকা আলবানিজ নামে এই বিশেষজ্ঞ ফিলিস্তিনি ভূখ-ে ইসরাইলিদের মানবাধিকার লঙ্ঘনগুলো পর্যবেক্ষণ করেন। তার নতুন প্রতিবেদনটি বৃহস্পতিবার জেনেভায় একটি সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হবে। প্রাথমিক তথ্যে জানা গেছে, তিনি তার প্রতিবেদনে ৪৮টি কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানকে অভিযুক্ত করেছেন। যারমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের টেক জায়ান্ট মাইক্রোসফট, গুগলের পেরেন্ট কোম্পানি আলফাবেট এবং বহুজাতিক কোম্পানি অ্যামাজন রয়েছে। এই কোম্পানিগুলো শুধু এখন আর ফিলিস্তিনে দখলদারিত্বেই জড়িত না, এগুলো গাজার গণহত্যাতেও সহায়তা করছে বলে জানিয়েছেন তিনি। জাতিসংঘের এ বিশেষজ্ঞ বলেছেন, এসব কোম্পানি সহযোগিতা করছে বলেই ইসরাইল এখনো গণহত্যা চালিয়ে যেতে পারছে।

×