
ছবি: সংগৃহীত
বর্তমানে বাংলাদেশের শহর থেকে গ্রাম—সবখানেই লিভারজনিত সমস্যার প্রকোপ বাড়ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, নীরবে বাড়তে থাকা একটি বিপজ্জনক অসুখ হলো ফ্যাটি লিভার, যা সময়মতো ধরা না পড়লে লিভার সিরোসিস, ক্যান্সার এমনকি মৃত্যুর কারণ হতে পারে।
কী এই ফ্যাটি লিভার?
লিভারের কোষে স্বাভাবিকের তুলনায় অতিরিক্ত চর্বি জমে গেলে তাকে বলা হয় ফ্যাটি লিভার। এটি মূলত দুই ধরনের হতে পারে—
🔹 অ্যালকোহলজনিত ফ্যাটি লিভার (AFLD)
🔹 নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার (NAFLD)
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমানে অ্যালকোহল না খেয়েও অনেকেই ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত হচ্ছেন। এর মূল কারণ হলো—অতিরিক্ত ক্যালরি গ্রহণ, অনিয়মিত জীবনধারা ও স্থূলতা।
লক্ষণগুলো উপেক্ষা করলেই বিপদ
প্রথমদিকে তেমন কোনো উপসর্গ না থাকলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শরীরে কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে, যেমন—
🔹পেটের ডান পাশে ভার বা অস্বস্তি
🔹অতিরিক্ত ক্লান্তি ও দুর্বলতা
🔹খাবারে অরুচি ও বদহজম
🔹ওজন বেড়ে যাওয়া বা হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া
🔹চোখ ও ত্বকে হলদে ভাব (জন্ডিস)
🔹রাতে ঘুমে ব্যাঘাত
🔹রক্ত পরীক্ষায় লিভার এনজাইম বেড়ে যাওয়া
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, দীর্ঘদিন ফ্যাটি লিভার থাকলে তা লিভার ফাইব্রোসিস, সিরোসিস ও হেপাটিক কার্সিনোমা (লিভার ক্যান্সার)-এ রূপ নিতে পারে। লিভারের কার্যকারিতা পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেলে মৃত্যুঝুঁকি তৈরি হয়।
✅ করণীয় কী?
স্বাস্থ্যসচেতনতা ও জীবনযাপনের পরিবর্তনই এ রোগ থেকে বাঁচার মূল উপায়।
🔹 ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা
🔹 তেল-মসলাযুক্ত খাবার ও মিষ্টি পরিহার
🔹 প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট ব্যায়াম
🔹 ধূমপান ও অ্যালকোহল বর্জন
🔹 নিয়মিত রক্ত ও লিভার ফাংশন টেস্ট
🔹 চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ গ্রহণ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হেপাটোলজি বিভাগের অধ্যাপক বলেন, “ফ্যাটি লিভার এখন আর বড়লোকদের রোগ নয়—এটি সব শ্রেণির মানুষকে আক্রান্ত করছে। সময়মতো সচেতন না হলে ভবিষ্যতে এটি বাংলাদেশের জন্য বড় স্বাস্থ্যঝুঁকি হয়ে দাঁড়াবে।”
ফ্যাটি লিভারকে অবহেলা নয়—সতর্কতা ও সময়মতো পদক্ষেপই পারে এই নীরব ঘাতক থেকে রক্ষা করতে।
Mily