
ছবি: সংগৃহীত
গর্ভপাত বা মিসক্যারেজ নিয়ে সাধারণত ধারণা থাকে, এটি একান্তই নারীর শারীরিক জটিলতার ফল। কিন্তু আধুনিক চিকিৎসা গবেষণা বলছে, পুরুষের কারণেও মিসক্যারেজ ঘটতে পারে এবং তা একাধিকভাবে প্রভাব ফেলতে পারে ভ্রূণের স্বাভাবিক বিকাশে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পুরুষের শুক্রাণুর গুণগত মান যদি খারাপ হয়, অর্থাৎ শুক্রাণুর ডিএনএ ভেঙে গেলে বা ত্রুটিপূর্ণ হয়, তাহলে ভ্রূণ সঠিকভাবে বিকশিত না হয়ে গর্ভেই নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এ ধরনের ডিএনএ ত্রুটি থাকলে গর্ভধারণ হলেও তা প্রথম ত্রৈমাসিকেই শেষ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। বিশেষত যারা বারবার গর্ভপাতের শিকার হন (recurrent miscarriage), তাদের ক্ষেত্রে শুক্রাণুর সমস্যা বড় একটি কারণ হতে পারে।
এছাড়া পুরুষের বয়স বেশি হলে, মানসিক চাপ থাকলে, ধূমপান বা অ্যালকোহলের অভ্যাস থাকলে, এমনকি শরীরে ফ্রি র্যাডিকালের মাত্রা বাড়লেও শুক্রাণুর উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এর ফলে সঠিক জেনেটিক উপাদান না পৌঁছানোর কারণে ভ্রূণের মধ্যে জটিলতা তৈরি হয় এবং শেষমেশ তা গর্ভপাতের দিকে গড়ায়।
বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন, প্রজনন সমস্যায় কেবল নারীর দিকটাই নয়, পুরুষের পক্ষ থেকেও কারণগুলো অনুসন্ধান করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে ‘স্পার্ম ডিএনএ ফ্র্যাগমেন্টেশন টেস্ট’সহ আধুনিক নানা পরীক্ষার মাধ্যমে সমস্যার উৎস চিহ্নিত করা সম্ভব। এর ভিত্তিতে চিকিৎসা নিলে অনেক সময় সফলভাবে গর্ভধারণ এবং সুস্থ সন্তান লাভ সম্ভব হয়।
সবশেষে চিকিৎসকরা পরামর্শ দেন, গর্ভপাতের মতো সংবেদনশীল ঘটনায় উভয় সঙ্গীরই স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও সচেতনতা জরুরি। সুস্থ জীবনযাপন, মানসিক প্রশান্তি ও সময়মতো চিকিৎসাই হতে পারে একটি সুস্থ গর্ভাবস্থার চাবিকাঠি।
ছামিয়া