
ছবিঃ সংগৃহীত
জনপ্রিয় অভিনেত্রী সাদিয়া আয়মান একটি আবেগঘন ফেসবুক পোস্টে সাম্প্রতিক বিমান বিধ্বস্তের মর্মান্তিক ঘটনার পর নিজের ক্ষোভ, হতাশা ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি লেখেন, “এ দেশে সাধারণ মানুষের কান্নার দাম নেই, কি লাভ বেঁচে থেকে?”—এই লাইনটি তার স্ট্যাটাসের কেন্দ্রীয় বার্তা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি জানান, গতকাল (২১ জুলাই) সারাদিন তার মনে হচ্ছিল কিছু একটা লিখতে হবে, কিন্তু পারেননি। হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে শিশুদের জন্য। একেকটি মিসিং পোস্ট দেখে দোয়া করেছেন যেন তারা ফিরে আসে। তিনি উল্লেখ করেন, একসময় তিনি নিজেও শিক্ষিকা ছিলেন, কোচিংয়ে পড়াতেন, এবং অনেক ছোট ছোট শিশুদের সঙ্গে তার স্নেহপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। সেই অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলেন, “ওরা এত নিষ্পাপ, এত পবিত্র, ইচ্ছে করত সারাদিন জড়িয়ে রাখি। ভাবতাম ওরা বড় না হলেই ভালো।”
সাদিয়া বলেন, যারা গতকাল পাখির মতো আল্লাহর কাছে চলে গেছে, মনে হচ্ছে আল্লাহ ওদের ভালোবেসে নিয়ে গেছেন। “জান্নাতের পাখি হয়ে থাকুক সোনা বাচ্চাগুলো”—এই কথায় তিনি শোক প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে আশারও আলো দেখিয়েছেন।
তবে তিনি এখানেই থেমে থাকেননি। বাংলাদেশের সিস্টেম নিয়ে তার অসন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “এই দেশের সিস্টেম কখনো ঠিক ছিল না, হবেও না।” রাজনীতির কারণে সাধারণ মানুষের জীবন সবসময়ই হুমকির মুখে থাকে। যারা ক্ষমতায় আসেন, তারা কেউই জনগণের জন্য কিছু করেন না বলে তার অভিযোগ।
তিনি আরও বলেন, “গতকাল হাসপাতালে যেখানে পোড়া শরীর নিয়ে একের পর এক রোগী আসছে, সেখানে রোগীর পরিবারের লোকজন দাঁড়ানোর জায়গা পাচ্ছে না। অথচ সেই মুহূর্তেও কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি তাদের দলবল নিয়ে ‘শোডাউন’ দিতে হাজির।” এই অমানবিক আচরণ দেখে তিনি বিস্মিত এবং ব্যথিত।
রিকশাওয়ালা ও সিএনজিচালকদের অমানবিক সুযোগ নেওয়ার ঘটনাও উঠে এসেছে তার লেখায়। “একশ টাকার ভাড়া চাইছে এক হাজার টাকা, পানির দাম ৫০ টাকা থেকে বেড়ে ২০০ টাকা।” এ ঘটনা দেখে তিনি প্রশ্ন তোলেন—এমন মুমূর্ষু অবস্থাতেও কি মানুষ তাদের মনটা নরম করতে পারে না?
তার স্ট্যাটাসের একদম শেষে তিনি লেখেন, “ছোট মুখে বড় কথা বলি—বাংলাদেশের রাজনীতি এবং রাজনীতিবিদরা এখন হাস্যকর হয়ে গেছে।” এটি তার একান্ত ব্যক্তিগত অনুভূতি হলেও তা সমাজের বড় একটি শ্রেণির উপলব্ধিকেই প্রকাশ করে।
ইমরান