ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৩ জুলাই ২০২৫, ৮ শ্রাবণ ১৪৩২

চ্যাটজিপিটিও পানি খায় , বিস্ময়কর তথ্য ফাঁস

প্রকাশিত: ২৩:৫২, ২২ জুলাই ২০২৫

চ্যাটজিপিটিও পানি খায় , বিস্ময়কর তথ্য ফাঁস

বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি যেমন চ্যাটজিপিটি, জেমিনি, এবং অন্যান্য এআই চ্যাটবট শুধু বিদ্যুৎ নয়, খরচ করছে বিপুল পরিমাণ পানি। প্রতিটি প্রশ্নের উত্তরে যেন "এক ফোঁটা" করে পানি খরচ হচ্ছে এমনটাই দাবি করেছেন ওপেনএআই-এর সিইও স্যাম অল্টম্যান।

এই "এক ফোঁটা" পানি শুনতে তুচ্ছ মনে হলেও, চ্যাটজিপিটিতে প্রতিদিন গড়ে ১০০ কোটি মেসেজ পাঠানো হয়। অর্থাৎ প্রতিদিনই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি চালাতে গিয়ে বিশাল মাত্রায় পানির ওপর চাপ তৈরি হচ্ছে। আর এই হিসেব শুধুমাত্র ছোট মডেলগুলোর জন্য। বড় মডেল, যেমন GPT-3 বা সমপর্যায়ের মডেলগুলোর ক্ষেত্রে ২০ থেকে ১০০টি প্রশ্নের উত্তরে খরচ হচ্ছে গড়ে এক লিটার পানি।

কেন এতো পানি লাগে?

কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে এআই মডেলকে বিশাল তথ্যভান্ডারে কম্পিউটিং করতে হয়। এই প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত হয় উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কম্পিউটার চিপ, যা বিশাল ডেটা সেন্টারে স্থাপিত থাকে। এসব চিপ প্রচণ্ড গরম হয়ে যায় এবং তা ঠান্ডা রাখতে দরকার হয় পানি।

আগে ডেটা সেন্টারগুলোতে বাতাসের মাধ্যমে ঠান্ডা রাখার ব্যবস্থা থাকলেও বর্তমানে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হচ্ছে লিকুইড কুলিং সিস্টেম। এ জন্য ব্যবহার করা হয় বিশুদ্ধ পানি, যাতে ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে না পারে। এই পানি আসে নদী বা জলাশয় থেকে, যা সাধারণত কৃষি, পানীয় ও স্বাস্থ্যসেবার জন্য ব্যবহৃত হওয়ার কথা।

শুধু কুলিংই নয়, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও এআই হার্ডওয়্যার তৈরিতেও বিপুল পরিমাণ পানি লাগে। গুগল, মাইক্রোসফট ও মেটার মতো প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রকাশিত তথ্যে দেখা যায়, তাদের ডেটা সেন্টারগুলো প্রতিবছর গড়ে ১০০ কোটি লিটার পানি ব্যবহার করে। তবে এই পানির কতটুকু এআই সেবার জন্য তা আলাদাভাবে উল্লেখ করা হয় না।

জলসংকটের মাঝে প্রযুক্তির ‘পিপাসা’

বিশ্বের অনেক এলাকায় ইতোমধ্যেই পানির অভাব প্রকট। অথচ পাশেই আধুনিক ডেটা সেন্টারে প্রতিদিন হাজার হাজার লিটার পানি খরচ করছে বিশ্বের শীর্ষ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো। এর প্রতিবাদে স্পেন, চিলি, ভারত, উরুগুয়ে ও যুক্তরাষ্ট্রের কিছু অংশে হয়েছে বিক্ষোভ।

২০৩০-এর লক্ষ্য: ওয়াটার নিউট্রাল হওয়া

এই সংকট সমাধানে বিশ্বের বেশ কয়েকটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ঘোষণা দিয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে তারা "ওয়াটার নিউট্রাল" হবে অর্থাৎ যত পানি তারা ব্যবহার করবে, ঠিক ততটুকু পানি পুনরুদ্ধার বা সংরক্ষণ করবে। পাশাপাশি কাজ চলছে এমন প্রযুক্তির দিকেও, যাতে কুলিং প্রক্রিয়ায় কোনো পানি বাষ্প না হয়।

এমনকি ভবিষ্যতে ডেটা সেন্টারগুলোকে সমুদ্রের নিচে, আর্কটিকে কিংবা মহাকাশে নিয়ে যাওয়ার চিন্তাভাবনাও চলছে।

Jahan

আরো পড়ুন  

×