ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১০ জুলাই ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২

কোন অভ্যাসগুলো বাড়ায় গলার ক্যানসারের ঝুঁকি?

প্রকাশিত: ০৭:৫৯, ৮ জুলাই ২০২৫

কোন অভ্যাসগুলো বাড়ায় গলার ক্যানসারের ঝুঁকি?

ছবিঃ সংগৃহীত

গলা, মুখ, গলার পিছনের অংশ, সাইনাস, নাক ও থুতু গ্রন্থি—এইসব অঙ্গগুলোতে দেখা দেওয়া ম্যালিগন্যান্ট টিউমারকে ‘হেড অ্যান্ড নেক ক্যানসার’ বা গলা ও মুখগহ্বরের ক্যানসার বলা হয়। এ ধরনের ক্যানসার বিশ্বব্যাপী মোট ক্যানসারের প্রায় ৪ শতাংশ জুড়ে রয়েছে।

চিকিৎসকদের মতে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই রোগ ধরা পড়ে দেরিতে, যার ফলে তা কণ্ঠস্বর, হাসি, গলার গঠন, এমনকি শ্বাসপ্রশ্বাসেও প্রভাব ফেলে। তবে সচেতনতা ও সময়মতো চিকিৎসায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এটি নিয়ন্ত্রণযোগ্য।

মূল ঝুঁকিপূর্ণ কারণসমূহ:
১. তামাকজাত দ্রব্য সেবন: ধূমপান ও চিবিয়ে খাওয়া তামাক—দুটিই মুখগহ্বরে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি করে।
২. অতিরিক্ত মদ্যপান: বিশেষ করে যারা একইসাথে তামাকও সেবন করেন, তাদের ঝুঁকি বহুগুণে বেড়ে যায়।
৩. এইচপিভি (HPV-16) ভাইরাস সংক্রমণ: গলার পিছনের অংশের ক্যানসারের অন্যতম কারণ।
৪. খারাপ মুখের স্বাস্থ্য ও দাঁতের সমস্যা: দাঁতের গোড়া পচা, ডেন্টালের অনিয়মিত চেকআপ ইত্যাদি।
৫. অপুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস: ফল ও সবজিতে কম আগ্রহ ও ভিটামিনের ঘাটতি।
৬. পেশাগত ঝুঁকি: যেমন—কারখানায় এসবেস্টস, কাঠের গুঁড়ো, ফরমালডিহাইড ইত্যাদির সংস্পর্শে থাকা।
৭. রেডিয়েশন: অতীতে যারা ঘাড় বা মুখে রেডিয়েশন নিয়েছেন, তাদের জন্য এটি ভবিষ্যতে ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
৮. এপস্টিন-বার ভাইরাস: নাকের পেছনের অংশের ক্যানসারের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।
৯. বয়স ও লিঙ্গ: ৪০ বছরের পর ঝুঁকি বাড়ে এবং পুরুষদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা নারীদের তুলনায় ২–৩ গুণ বেশি।
১০. জেনেটিক বা বংশগত কারণ: যেমন—ফ্যানকোনি এনিমিয়ার মতো বিরল জেনেটিক সমস্যা।

চিকিৎসকদের পরামর্শ:
ড. হরিশ ভার্মা (সিনিয়র কনসালট্যান্ট, সি.কে. বিরলা হাসপাতাল, গুরুগ্রাম) জানান, “এই রোগ প্রতিরোধে সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো সচেতনতা। ধূমপান-মদ্যপান বর্জন, HPV টিকা গ্রহণ, মুখের যত্ন ও নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা অত্যন্ত জরুরি।”

গলা ও মুখগহ্বরের ক্যানসার ভয়ংকর হলেও, সময়মতো সনাক্তকরণ ও চিকিৎসায় এর থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। আমাদের কণ্ঠস্বর, হাসি ও জীবনধারা যেন নিরাপদ থাকে, সে জন্য এখনই প্রয়োজন সচেতনতা।

সূত্রঃ টাইমস অফ ইন্ডিয়া 

নোভা

×