ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৬ জুলাই ২০২৫, ২২ আষাঢ় ১৪৩২

ডায়াবেটিস থাকলেও গ্রীষ্মের এই ৫টি ফল খেতে পারেন নির্ভয়ে!

প্রকাশিত: ০৪:৪৩, ৬ জুলাই ২০২৫

ডায়াবেটিস থাকলেও গ্রীষ্মের এই ৫টি ফল খেতে পারেন নির্ভয়ে!

তীব্র গরমে রসালো ও সতেজ ফলের প্রতি আমাদের চাহিদা বেড়ে যায় স্বাভাবিকভাবেই। তবে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ফল খাওয়ার ব্যাপারে কিছু সতর্কতা মেনে চলা জরুরি। কারণ, অনেক ফলেই প্রাকৃতিক চিনি থাকলেও তা রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়াতে পারে। তবে এমন কিছু গ্রীষ্মকালীন ফল আছে, যেগুলো পরিমিতভাবে খেলে শরীরে হাইড্রেশন, ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সরবরাহ করে—রক্তে শর্করার মাত্রাও বাড়ে না।

বিশেষজ্ঞদের মতে, ডায়াবেটিস রোগীদের এমন ফল বেছে নেওয়া উচিত যেগুলোর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম এবং ফাইবার বেশি। নিচে রইল এমন পাঁচটি উপকারী ফলের তালিকা—

১. জাম ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অন্যতম উপকারী ফল জাম। এর গ্লাইসেমিক সূচক মাত্র ২৫, অর্থাৎ এটি ধীরে ধীরে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়ায়। জাম্বোলিন নামের একটি বিশেষ উপাদান স্টার্চকে শক্তিতে রূপান্তর করতে সাহায্য করে এবং রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। আয়ুর্বেদ চিকিৎসাতেও জামবীজের গুঁড়ো ব্যবহার করা হয় ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনায়।

২. পেয়ারা টক-মিষ্টি স্বাদের এই ফলটি ক্যালোরিতে কম হলেও ফাইবারে ভরপুর। এটি হজম প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। পাশাপাশি, পেয়ারার উচ্চ ভিটামিন সি উপাদান দেহে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতেও কার্যকর, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তাই জুস না খেয়ে আস্ত পেয়ারা খাওয়াই ভালো।

৩. পেঁপে পাকা পেঁপে স্বাস্থ্যের জন্য যেমন উপকারী, তেমনি ডায়াবেটিস রোগীরাও এটি নিরাপদে খেতে পারেন। এতে রয়েছে ফ্ল্যাভোনয়েড জাতীয় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়াতে পারে। পাশাপাশি, এটি পেটের জন্য হালকা ও সহজপাচ্য। একটি ছোট বাটি পেঁপে আপনার মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছাও পূরণ করতে পারে।

৪. তরমুজ অনেকেই মনে করেন ডায়াবেটিস থাকলে তরমুজ খাওয়া উচিত নয়। যদিও এতে চিনির পরিমাণ কিছুটা বেশি, তবে এটি প্রায় ৯০ শতাংশ পানি, যা শরীরকে ঠান্ডা ও হাইড্রেট রাখতে সহায়তা করে। পরামর্শ হলো—অল্প পরিমাণে খাওয়া এবং সঙ্গে কিছু প্রোটিন বা চর্বিজাত উপাদান যেমন এক মুঠো বাদাম খেলে রক্তে শর্করার ভারসাম্য সহজে রক্ষা করা সম্ভব।

৫. পীচ (আড়ুবখারা) ভিটামিন এ, সি ও পটাসিয়াম সমৃদ্ধ সুগন্ধি এই ফলটি গ্রীষ্মকালে বেশ উপকারী। এটি শুধু শরীরকে ঠান্ডা রাখেই না, রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক রাখতেও সাহায্য করে। তবে ক্যানজাত বা সিরাপে সংরক্ষিত পীচ নয়, খেতে হবে তাজা ফল। এতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ে।

ডায়াবেটিস মানেই সব মিষ্টি ফল নিষিদ্ধ নয়। পরিমিত পরিমাণে এবং সঠিক সময়ে খেলে অনেক ফলই ডায়াবেটিস রোগীদের উপকারে আসে। ফল বেছে নিতে হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াও গুরুত্বপূর্ণ।

 

রিফাত

×