
ছবিঃ সংগৃহীত
স্ট্রোক বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। এটি কেবল বয়স্ক নয়, বরং উন্নয়নশীল দেশগুলোর তরুণদের মধ্যেও বাড়ছে আশঙ্কাজনকভাবে। দ্রুত স্ট্রোকের লক্ষণ শনাক্ত করে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিলে জীবন রক্ষা সম্ভব। অনেকেই এই মারাত্মক রোগের প্রাথমিক সতর্ক সংকেত বুঝতে পারেন না, যা শেষ পর্যন্ত বড় বিপদ ডেকে আনে।
চিকিৎসকদের মতে, স্ট্রোক তখনই ঘটে, যখন মস্তিষ্কের কোনো অংশে রক্তপ্রবাহ হঠাৎ করে কমে যায় বা বন্ধ হয়ে যায়, ফলে সেই অংশে অক্সিজেন ও প্রয়োজনীয় পুষ্টি পৌঁছায় না। মাইক্রো স্ট্রোক বা ‘ট্রান্সিয়েন্ট ইস্কেমিক অ্যাটাক (TIA)’ কিছুক্ষণের জন্য রক্তপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলেও হতে পারে। যদিও এর লক্ষণ কয়েক মিনিট বা ঘণ্টার মধ্যেই চলে যায়, তবে এটি একটি বড় স্ট্রোকের পূর্বাভাস হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা স্ট্রোকের ৫টি সতর্কবার্তার দিকে নজর দেওয়ার পরামর্শ দেন—
১. হঠাৎ অসাড়তা বা দুর্বলতা
মুখ, হাত বা পায়ের এক পাশে হঠাৎ অসাড়তা বা দুর্বলতা স্ট্রোকের প্রধান লক্ষণ। অনেক সময় মুখের এক পাশ ঝুলে পড়ে বা কেউ হাত তুলতে পারেন না। এমন কারো মুখে হাসি নেই কিংবা দুটো হাত তুলতে না পারলে, সময় নষ্ট না করে জরুরি চিকিৎসা নিতে হবে।
২. কথা বলায় সমস্যা বা বুঝতে অসুবিধা
কথা জড়ানো, অস্পষ্ট উচ্চারণ বা সাধারণ বাক্য বুঝতে না পারাও স্ট্রোকের সংকেত। মস্তিষ্কের ভাষাকেন্দ্রে আঘাত লাগলে এমন সমস্যা দেখা দেয়। অনেকেই এটি মদ্যপ অবস্থার ভুল মনে করেন। হঠাৎ এমন হলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
৩. চোখে ঝাপসা দেখা বা দৃষ্টি সমস্যা
হঠাৎ করে এক বা দুই চোখে ঝাপসা দেখা, দ্বৈত দৃষ্টি বা দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে যাওয়া স্ট্রোকের লক্ষণ হতে পারে। অনেক সময় চোখে পর্দা নেমে এসেছে মনে হয়। এমন হলে অবহেলা না করে দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন।
৪. তীব্র মাথাব্যথা
স্ট্রোকজনিত মাথাব্যথা খুব তীব্র হয় এবং হঠাৎ শুরু হয়। অনেকেই একে জীবনের সবচেয়ে ভয়ংকর মাথাব্যথা হিসেবে বর্ণনা করেন। যদি মাথাব্যথার সঙ্গে বমি, মাথা ঘোরা বা দুর্বলতা দেখা দেয়, তবে এটি রক্তক্ষরণজনিত (হেমোরেজিক) স্ট্রোক হতে পারে।
৫. ভারসাম্য হারানো বা চলাফেরায় সমস্যা
হঠাৎ মাথা ঘোরা, হাঁটতে সমস্যা হওয়া বা ভারসাম্য হারানো মস্তিষ্কের সেরিবেলাম বা ব্রেইনস্টেমে আঘাতের ইঙ্গিত দেয়। এক্ষেত্রে হাঁটার সময় হোঁচট খাওয়া, কোনো বস্তু ধরতে না পারা কিংবা নিজেকে স্থির রাখতে না পারার মতো লক্ষণ দেখা দেয়।
স্ট্রোকের যেকোনো লক্ষণ দেখা দিলে দেরি না করে নিকটস্থ হাসপাতালে দ্রুত যোগাযোগ করা জরুরি। কারণ, প্রতিটি মুহূর্ত এখানে মূল্যবান—সময়মতো চিকিৎসা জীবন বাঁচাতে পারে।
ইমরান